Chat GPT কী? চ্যাট জিপিটি কিভাবে কাজ করে, এর সুবিধা অসুবিধাগুলো কী?

 বর্তমান সময়ে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স টেক দুনিয়ায় আধিপত্য বিস্তার করতেছে। মূলত এই আধিপত্য ভিত্তি রোপণ করার পিছনে সব থেকে বেশি প্রভাব রয়েছে চ্যাট জিপিটির। বর্তমান সময়ে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই অতুলনীয়ভাবে অগ্রগতি করতেছে। মূলত আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স অর্থাৎ বিপ্লবের পিছনে  সবথেকে বড় হাত রয়েছে চ্যাট জিপিটির। চ্যাট জিপিটি ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ওপেন এআই দ্বারা নির্মাণ করা হয়। শুধুমাত্র পাঁচদিনের মধ্যেই এক মিলিয়ন ইউজারের মাইলফলক স্পর্শ করে। যা অন্যান্য কোম্পানিগুলো এই মাইলফলক স্পর্শ করতে দুই মাস থেকে ২ বছর সময় পর্যন্ত লাগে।  তবে এই টুলটি ব্যবহারের অনেকগুলো সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে যা অবশ্যই সবার জানা প্রয়োজন।  

Chat GPT কী? চ্যাট জিপিটি কিভাবে কাজ করে, এর সুবিধা অসুবিধাগুলো কী?
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা চ্যাট জিপিটি কি, চ্যাট জিপিটি কিভাবে কাজ করে, চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায় এই সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব। এছাড়াও আমরা এমন কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব যা অবশ্যই আপনার জানা প্রয়োজন। তাহলে চলুন আমাদের মূল আর্টিকেল শুরু করি।

আর্টিকেলে আলোচিত সম্ভাব্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সমূহ 

ফিচার ডিসক্রিপশন
মার্কেটে লঞ্চ ৩০ নভেম্বর, ২০২২
মূল কোম্পানি নাম OpenAI
প্রধান কার্যালয় সান ফ্রান্সিসকো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
প্রতিষ্ঠাতা স্যাম অল্টম্যান (CEO), এলন মাস্ক (সহ-প্রতিষ্ঠাতা, ওপেনএআই)
বিনিয়োগকারী এবং সাহায্যকারী মাইক্রোসফট, খোসলা ভেনচার্স এবং লিংকডইন সহ-প্রতিষ্ঠাতা রেইড হফম্যান
ইউজারের সংখ্যা ১৮০.৫ মিলিয়ন (মাসিক)
ভার্সন GPT-3.5 (ফ্রি ভার্সন), GPT-4 (প্লাস বা প্রিমিয়াম ভার্সন)
সম্ভাব্য ইনকাম ২০২৪ সালে $১ বিলিয়ন
দৈনিক খরচ $৭ লক্ষ ডলার
মাসিক পেজ ভিউ ১.৭ বিলিয়ন
নিষিদ্ধ দেশ চীন, রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া, ইরান, ইরাক এবং সিরিয়া

চ্যাট জিপিটি কি?

চ্যাট জিপিটি (ChatGPT) হল OpenAI দ্বারা তৈরি একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট। চ্যাট জিপিটি-এর পূর্ণরূপ হল "Chat Generative Pre-trained Transformer"। "জেনারেটিভ" শব্দের অর্থ বোঝায় যে চ্যাট জিপিটি টেক্সট তৈরি করতে পারে, "প্রি-ট্রেনড" শব্দ দিয়ে বোঝায় যে প্রচুর পরিমাণে টেক্সট যেটার মাধ্যমে ট্রেনড হয়েছে। "ট্রান্সফরমার" হল একটি নির্দিষ্ট ধরণের মেশিন লার্নিং মডেল যা চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে। 

চ্যাট জিপিটিকে লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল (LLM) হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল মূলত প্রচুর পরিমাণে টেক্সট ডাটার মাধ্যমে প্রশিক্ষিত করা।  যার ফলে চ্যাট জিপিটি মানুষের মতো টেক্সট তৈরি করতে, ভাষার রূপান্তর করতে কিংবা বিভিন্ন ক্রিয়েটিভ কন্টেন্ট লিখতে সাহায্য করে। মূলত এইসব ডাটা বিভিন্ন অনলাইন সোর্স, অফলাইন সোর্স সংগ্রহ করে। 

যদি এককথায় চ্যাট জিপিটির সংজ্ঞা দেয়া যায় তাহলে কিছুটা এরকম হবে যে, চ্যাট জিপিটি হল একটি আর্টিফিশিয়াল চ্যাট বট যা লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে এবং এই চ্যাটবট ব্যবহারকারীর সাথে কথোপকথন আকারে ইনফরমেশন শেয়ার করতে পারে। আবার এরকম করেও বলা যেতে পারে, চ্যাট জিপিটি হল একটি প্রশিক্ষিত মডেল ট্রান্সফর্মার যা মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যবহারকারীর প্রশ্নের উত্তর দেয় বা কথোপকথন করে। 

ChatGPT সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

২০১৫ সালে বর্তমানে সময়ের সব থেকে জনপ্রিয় দুইজন প্রযুক্তিবিদ, স্যাম অল্টম্যান এবং ইলন মাস্ক একত্রে মিলে OpenAI নামে একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। স্যাম অল্টম্যান এবং ইলন মাস্ক এর টার্গেট ছিল আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কে এমনভাবে গড়ে তোলা যেন তা সবার জন্য উপযোগী হয় এবং তা যেন সবাই ব্যবহার করতে পারে। 

OpenAI প্রথমদিকে ছোট ছোট অনেকগুলো প্রজেক্ট হাতে নেয় এবং তারা সেগুলোতে প্রায় সফল হয়। প্রথমদিকে তারা কিছু প্রাইমারি ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল তৈরি করেছিল, কিন্তু সেগুলো তখনো মানুষের মতো কথা বলার সক্ষমতা অর্জন করতে পারছিলনা।

কিন্তু হঠাৎ ২০১৮ সালে, ইলন মাস্ক OpenAI-এর বোর্ড থেকে পদত্যাগ করেন। এই পদত্যাগের ফলে OpenAI-এর যাত্রা কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছিল এবং রিসার্চ এর গতি অনেকটাই কমে গিয়েছিল।

তবে, ২০২২ সালে, OpenAI-এর ভাগ্য আবার চেঞ্জ হয়। তখন মাইক্রোসফট কোম্পানিটি এই কাজে বিনিয়োগ করে এবং OpenAI-কে আরও বেশি পরিমাণে অর্থ প্রদান করে।

এই বিনিয়োগের ফলে OpenAI আবার পুরোদমে কাজ শুরু করে দেয় এবং তারা একটি নতুন চ্যাটবট তৈরি করতে সক্ষম হয়, আর সেটি হলো ChatGPT। ChatGPT মানুষের মতো কথা বলতে, প্রশ্নের উত্তর দিতে এবং এমনকি ক্রিয়েটিভ লেখা থেকে শুরু করে কোডিং পর্যন্ত তৈরি করতে সক্ষম হয়।

পরবর্তীতে ChatGPT-এর বেটা ভার্সন ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর জনসম্মুখে প্রকাশিত হয়। যা পরবর্তীতে ইন্টারনেটে সবার জন্য ওপেন করে দেওয়া হয়। 

চ্যাট জিপিটি কিভাবে কাজ করে?

মূলত চ্যাট জিপিটি অনলাইনে এবং অফলাইনে পাওয়া যায় এমন সকল তথ্য তার ডাটার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছে এবং তাকে সেই হিসেবেই প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। ২০২২ সালের প্রাপ্ত ডাটা হতে জানা যায় যে, ইন্টারনেটে পাওয়া যায় এমন সোর্স থেকে চ্যাট জিপিটি প্রায় ৫৭০ জিবির অধিক ডাটা স্টোরেজ করে রেখেছে । যা বর্তমানে অর্থাৎ ২০২৪ সালে এই ডাটা স্টোরেজের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১.২ টেরাবাইটে। 

এছাড়াও চ্যাট বিভিন্ন ল্যাঙ্গুয়েজ বা ভাষায় প্রশিক্ষিত করা হয়েছে যার অন্তর্গত বাংলা ভাষাও রয়েছে। এই পর্যন্ত চ্যাট জিপিটি বিভিন্ন ভাষা থেকে প্রায় ৫০০ বিলিয়ন শব্দের অধিক শব্দ তার স্টোরেজে রেখেছে। যা ২০২১ সালে প্রায় ৩০০ বিলিয়ন শব্দের কাছাকাছি ছিল। অর্থাৎ পূর্বে তুলনায় চ্যাট জিপিটিকে আরো উন্নত এবং সমৃদ্ধ করা হচ্ছে। 

আর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো চ্যাট জিপিটি বাক্যে ব্যবহারকৃত শব্দের পর কোন শব্দ যুক্ত হওয়া উচিত সেই সক্ষমতা পর্যন্ত অর্জন করেছে। অর্থাৎ চ্যাট জিপিটির কাছে এত পরিমানে ডাটা আছে যে একটি অ্যানসারকে অনেক ভালো ভিন্ন ভিন্ন আকারে উপস্থাপন করতে পারবে। এছাড়াও বিভিন্ন প্যারামিটার ব্যবহার করে চ্যাট জিপিটি খুব সহজেই ব্যবহারকারীর ভাষা বুঝে তা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে নিজের মতো করে উত্তর দিতে পারে। 

চ্যাট জিপিটি যখন কোনও প্রশ্ন পায়, তখন এটি প্রথমে সেই প্রশ্নটিকে বোঝার জন্য ডেটাবেসের সাথে মিল করে দেখে। এরপর, ডেটাবেস থেকে অনুরূপ প্রশ্নের উত্তরগুলো খুঁজে বের করে। যদি চ্যাট জিপিটি অনুরূপ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পায়, তাহলে এটি সেই উত্তরটিকে একটি নতুন প্রশ্নের উত্তর হিসাবে ব্যবহার করে।

যদি চ্যাট জিপিটি ব্যবহারকারীর অনুরূপ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে না পায়, তাহলে চ্যাট জিপিটি একটি নতুন বাক্য তৈরি করে। চ্যাট জিপিটি ডেটাবেস থেকে শব্দ এবং বাক্যাংশগুলোকে একত্রিত করে একটি নতুন উত্তর তৈরি করে। আর এভাবেই মূলত চ্যাট জিপিটি কাজ করে থাকে।

তবে চ্যাট জিপিটি ৩.৫ এর তুলনায় চ্যাট জিপিটির ভার্সন ৪ অনেক বেশি তথ্য এবং গ্রহণযোগ্য উত্তর দিতে পারে। কেননা চ্যাট জিপিটি ৪ এর কাছে নিত্যনতুন তথ্য গুলো পাচ্ছে। এছাড়াও জিপিটি ৪ ভার্সন, জিপিটি ৩.৫ এর তুলনায় অনেক বেশি পাওয়ারফুল।

চ্যাট জিপিটির ব্যবহারকারী সংখ্যা কত?

চ্যাট জিপিটির ব্যবহারকারী সংখ্যা কত তা নির্দিষ্টভাবে বলার পসিবল নয় । তবে, Demandsage সূত্রে জানা গেছে যে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শেষে চ্যাট জিপিটির মোট ব্যবহারকারী সংখ্যা 180 মিলিয়ন বা ১৮ কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তবে সেই রিপোর্টে আরো জানানো হয় যে নিয়মিত একটিভ ভাবে একাউন্ট ব্যবহারকারী সংখ্যা ১০০ মিলিয়ন বা ১০ কোটি। 

তবে চ্যাট জিপিটি প্রথমবার প্রকাশে আসার শুধুমাত্র 5 দিনের মধ্যেই ১ মিলিয়ন একাউন্ট তৈরি করা হয়েছিল। যা শুধুমাত্র দুই মাসের মধ্যেই ১০০ মিলিয়নে পৌঁছায়। তবে বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা গেছে যে ২০২৪ সালের জুলাই মাসের মধ্যে এই সংখ্যা ২০০ মিলিয়ন অর্থাৎ ২০ কোটিতে পৌছাতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। 

তবে এই রিলেটেড আরো অনেক ধরনের পরিসংখ্যান রয়েছে যেগুলো অবশ্যই আপনার জানা উচিত। এই ধরনের কিছু পরিসংখ্যান নিয়ে আমরা আর্টিকেলের শেষে আলোচনা করব। 

চ্যাট জিপিটির সুবিধা অসুবিধা

বর্তমান সময়ের চ্যাট জিপিটি আমাদের প্রত্যেকটি কাজে প্রায় ব্যবহার করা হয়। কিন্তু চ্যাট জিপিটির অনেকগুলো সুবিধা অসুবিধা রয়েছে যা আমাদের মধ্যে অনেক কেই জানিনা। নিচে ChatGPT এর কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা বিস্তারিত আকারে জেনে নেই;

ChatGPT টির সুবিধা সমূহ

১. ব্যবহারকারীদের সাথে কথোপকথন করতে পারে।

২. বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য প্রদান করতে পারে।

৩. বিভিন্ন ক্রিয়েটিভ আনসার তৈরি করতে পারে।

৪. খুব তাড়াতাড়ি আনসার প্রদান করতে পারে।

৫. একটি লেখাকে বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে পারে।

৬. বিভিন্ন ভাষা এবং লেখা সহজে বুঝতে পারে এবং তা রিপ্লাই দিতে পারে।

৭. বিভিন্ন ধরনের রিসোর্স এবং গাইডলাইন প্রদান করতে পারে ইফেক্টিভ ভাবে।

৮. প্রোগ্রামিং এবং কোডিং ভাষা বুঝতে পারে এবং তৈরি করতে পারে।

৯.  ব্যবহারকারী যেকোনো সময় অর্থাৎ ২৪/৭ ব্যবহার করা যেতে পারে।

১০. ২০২১ সালের আগে যাবতীয় ইনফরমেশন প্রদান করতে পারে।

১১. বিনামূল্যে ব্যবহার করার সুবিধা রয়েছে।

১২. ড্যাশবোর্ড খুবই ইউজার ফ্রেন্ডলি 

১৩. ব্যবহার করা খুবই সহজ

ChatGPT টির অসুবিধা সমূহ

১. ChatGPT এখনও ডেভেলাপমেন্ট পর্যায়ে রয়েছে, তাই ChatGPT সবসময় সঠিক তথ্য দিতে পারে না।

২. প্রায় সময় কনফিউজিং বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করে।

৩. কখন কখনো অপ্রাসঙ্গিক আনসার প্রদান করে।

৪. ২০২১ সালের পরবর্তী বছর অর্থাৎ বর্তমান সময়ের কোন জ্ঞান নেই।

৫. একই কনটেন্ট বিভিন্ন জনকে প্রদান করে।

৬. ক্রিয়েটিভিটির বা সৃজনশীলতার অভাব রয়েছে।

৭. বাস্তব দুনিয়া সম্পর্কে কোন জ্ঞান নেই, তাকে যেভাবে ট্রেইড করা হয়েছে শুধুমাত্র সেভাবেই উত্তর প্রদান করতে পারে।

৮. পক্ষপাত মূলক কনটেন্ট প্রদান করে।

৯. গোপনীয়তার সংশয়।

এগুলো ছাড়া আরো অনেক সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে। তাহলে একটি জিনিস মাথায় রাখবেন প্রত্যেকটা জিনিসের একটি সুবিধা এবং এর পাশাপাশি একটি অসুবিধা থাকে। কিন্তু আপনি যদি সঠিকভাবে কাজ করতে পারেন সেক্ষেত্রে আপনি সকল সমস্যার সমাধান পেতে পারেন।

চ্যাট জিপিটি কি সবসময় সঠিক তথ্য দেয়?

না, চ্যাট জিপিটি সবসময় সঠিক তথ্য দেয় না। চ্যাট জিপিটি একটি বৃহৎ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল, যা বিশাল পরিমাণ লেখা এবং কোডিং এর মাধ্যমে প্রশিক্ষিত হয়েছে। ChatGPT বিভিন্ন ধরনের লেখা তৈরি করতে, ভাষা ট্রান্সলেট করতে পারে, বিভিন্ন ধরণের ক্রিয়েটিভ বিষয়বস্তু নিয়ে জানতে এবং শিখতে সাহায্য করে এবং ডিফারেন্ট ওয়েতে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। 

তবে, ChatGPT এখনও উন্নয়নাধীন অর্থাৎ এখনো চূড়ান্ত ChatGPT আমাদের কাছে পৌঁছায়নি, প্রতিনিয়ত এই টুলটিকে আরো উন্নত করার দিকে তারা মনোযোগী।, ChatGPT অনেক ক্ষেত্রেই ভুল তথ্য প্রদান করতে পারে তবে আপনাকে সব সময় সচেতন থাকতে হবে কেননা আপনি যদি সচেতন না হন তাহলে যে কেউ আপনাকে ভুল ইনফরমেশন দিতে পারে। এজন্য ChatGPT যখন কোন আনসার প্রদান করবে তখন সেটার আনসার যাচাই করে নিবেন।

চ্যাট জিপিটির ভুল ইনফরমেশন দেয়ার মূলত কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কারণ রয়েছে। নিচে এর কিছু কারণ দেয়া হলো;

প্রথমত, ChatGPT ট্রেইন্ড বা প্রশিক্ষিত করা হয়েছে বিভিন্ন তথ্যের উপর ভিত্তি করে। এখন যদি যে ডেটার মাধ্যমে তাকে প্রশিক্ষিত বাট ট্রেইন্ড করা হয়েছে সেই ডেটাতেই যদি ভুল তথ্য থাকে, তাহলে চ্যাট জিপিটিও সেই ভুল তথ্যগুলো আনসার আকারে প্রদান করবে।  

দ্বিতীয়ত, চ্যাট জিপিটি এখনও development এর আওতাধীন আছে, যার কারণে ChatGPT কখনও কখনও ভুল আনসার তৈরি করতে পারে, তবে চ্যাট জিপিটির ভার্সন ৪ অর্থাৎ প্রিমিয়াম ভার্সন টি অনেক একুরেট এবং informative প্রদান করে ৩.৫ ভার্সনের তুলনায়। 

তৃতীয়ত, চ্যাট জিপিটিকে 2021 সালের আগের যাবতীয় জ্ঞান এবং রিসার্চ প্রদান করা হয়েছে কিন্তু বর্তমান দুনিয়া সম্পর্কে সে কিছুই জানে না। যার কারণে এখানে সীমিত জ্ঞানের একটি সমস্যা থেকে গেছে। যার কারণে চ্যাট জিপিটি আমাদেরকে একুরেট এবং প্রেজেন্ট টাইম এর রেজাল্ট দিতে পারেনা। 

তবে, চ্যাট জিপিটির ভুল ইনফো তৈরি করার সম্ভাবনাকে কমাতে, অবশ্যই ইউজারদেরকে সচেতন হতে হবে। কোন আনসারটি ভুল এবং সঠিক তার বিচার বিশ্লেষণ করতে হবে। আর যেহেতু ইউজার চাইলেই চ্যাট জিপিটির উত্তরকে নিজের মত করে পরিবর্তন করতে পারে সেক্ষেত্রে অবশ্যই ইউজারের ভূমিকায় মুখ্য। আর যদি কোন প্রকার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে সে ক্ষেত্রে সোর্স খুঁজে বের করাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। 

চ্যাট জিপিটি দিয়ে কি কি তৈরি করা যায়? 

জিপিটি দিয়ে লেখালেখি এবং এই রিলেটেড যাবতীয় কাজ করা যাবে। আপনি চাইলে চ্যাট জিপিটির মাধ্যমে যেকোনো বিষয় সম্পর্কে লিখে নিতে পারবেন। তবে চ্যাট জিপিটিকে ব্যবহার করে কি কি করা যায় তার কিছু উল্লেখযোগ্য ধারণা নিচে দেয়া হলো।

১. নতুন ভাষা শেখার কাজে: 

বর্তমানে আপনি ঘরে বসেই বিভিন্ন ভাবে অন্য ভাষা শিখতে পারবেন সেই সম্পর্কে তো আগে থেকেই জানেন। কিন্তু ২০২৩ সালের আগস্ট মাসের একটি রিপোর্ট অনুসারে শুধুমাত্র চ্যাট জিপিটিকে ব্যবহার করে প্রায় ৭০ জনের অধিক অন্য ভাষায় পারদর্শী হয়েছে। ChatGPT বিভিন্ন ভাষায় এনসার প্রদান করতে পারে সেক্ষেত্রে আপনি চাইলে ঘরে বসেই কোন প্রকার টাকা খরচ না করেই অন্য ভাষা শিখতে পারবেন। তবে হয়তো সম্পূর্ণভাবে শিখতে না পারলেও বেসিক এবং মাঝারি সাইজের জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন এবং তার ট্রান্সলেট করার অভিজ্ঞতা ও অর্জন করতে পারবেন। 

২. নতুন নতুন আইডিয়া জেনারেট করতে: 

আপনি যেকোন বিষয়ের উপর ChatGPT জিপিটির সাহায্যে বিভিন্ন ধরনের আইডিয়া তৈরি করে নিতে পারবেন। ধরে নেন আপনি ব্লগিং করতেছেন অথবা আপনি একটি বিষয়ের উপর লেখালেখি করতে চাচ্ছেন আপনি চাইলে এই বিষয়ে ChatGPT টির কাছ থেকে সাহায্য নিতে পারেন এবং বিভিন্ন ধরনের আইডিয়া দিতে পারেন। নতুন নতুন আইডিয়া জেনারেট করার কাছে চ্যাট জিপিটি কে খুব ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারবেন। 

৩. গেম কিংবা অ্যাপ ডিজাইন করতে: 

চ্যাটে জিপিটির মাধ্যমে আপনি সরাসরি গেম কিংবা অ্যাপ তৈরি করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে কোন পূর্বের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে না শুধুমাত্র একটু বেসিক জ্ঞান থাকলেই হবে। জিপিটি আপনাকে স্টেপ বাই স্টেপ গাইডলাইন দিয়ে দিবে কিভাবে কোন কাজ করতে হবে এবং কোন জিনিসটি করতে হবে। অর্থাৎ আপনি চাইলে এখান থেকে নিজস্ব অ্যাপ কিংবা গেম তৈরি করে নিতে পারেন। এছাড়াও আপনার কোন যদি পূর্বের গেম থাকে এবং সেটাকে যদি উন্নত করতে চান এখান থেকে তা উন্নত করতে পারবেন। আর সব থেকে মজার ব্যাপার হলো এই অ্যাপ কিংবা গেম তৈরি করতে খুব অল্প সময় লাগে অর্থাৎ আপনি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই অনেক বড় বড় কাজ করতে পারবেন। 

৪. ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে ব্যবহার: 

একজন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর মূলত কাজ হল মালিকের কাজ করা এবং প্রত্যেকটি কাজে সাহায্য করা। ঠিক একই ভাবে আপনি চ্যাট জিপিটি কে একজন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট রূপে ব্যবহার করতে পারেন। আপনি চ্যাট জিপিটির মাধ্যমে যেকোনো ধরনের কাজ করিয়ে নিতে পারেন কিংবা তার কাছ থেকে সাহায্য নিতে পারেন। ইমেইল রাইটিং, সিভি রাইটিং থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ করিয়ে নিতে পারেন তবে এর জন্য আপনাকে শুধুমাত্র ভালোভাবে নির্দেশনা দিতে হবে।

৫. প্রেজেন্টেশনে সাহায্য নিতে: 

আপনি চাইলে চ্যাট জিপিটির মাধ্যমে প্রেসেন্টেশন তৈরি করতে এবং তাকে উপস্থাপন করার ক্ষেত্রে সাহায্য নিতে পারেন। চ্যাট জিপিটি আপনাকে প্রেজেন্টেশন তৈরি করতে অনেক বেশি সাহায্য করবে এবং কিভাবে তাকে উপস্থাপন করবে তার একটি পরিপূর্ণ গাইডলাইন প্রদান করবে। এছাড়াও প্রেজেন্টেশনে কি কি বিষয় উল্লেখ রাখতে হবে সেই জিনিসগুলো আপনাকে জানিয়ে দিবে অর্থাৎ একজন প্রফেশনাল মানের প্রেজেন্টেশন এডভাইজার এর কাজ করবে।

৬. আর্টিকেল রাইটিং: 

চ্যাট জিপিটির মাধ্যমে আপনি চাইলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই অনেক ইনফরমেটিভ আর্টিকেল লিখে নিতে পারবেন। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের ব্লগ সার্ভিস প্রোভাইডার, ফ্রিল্যান্সার এমনকি সংবাদপত্র চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে কন্টেন্ট লিখে নিজস্ব ব্লগ কিংবা নিউজ পেপারে পাবলিশ করতেছে। এছাড়াও আর্টিকেল লিখিয়ে নেয়ার মাধ্যমে আপনি চাইলে এফিলিয়েট মার্কেটিং কিংবা অন্যান্য উপায় অবলম্বন করে ইনকাম করতে পারেন। এছাড়াও আপনি চাইলে বিভিন্ন ধরনের এক ক্যাম্পেইন এর জন্য এখান থেকে অ্যাডস কপি তৈরি করতে পারেন। 

৭. বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রামিং কাজে ব্যবহার: 

বর্তমান সময়ে প্রোগ্রামিং নলেজের গুরুত্ব অপরিসীম। চ্যাট জিপিটি আপনাকে বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রামিং কাজের সাহায্য করবে। JavaScript, Python, PHP, React JS, C++, Ruby, Swift, C# সহ বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ সম্পর্কে জানতে এবং শিখতে পারবেন। শুধুমাত্র জানতে কিন্তু শিখতে পারবেন তা কিন্তু নয় আপনি চাইলে চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে এই ধরনের প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করে যেকোনো টুল তৈরি করতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ আপনি চাইলে ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন থিম থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের টুলস এবং সফটওয়্যার তৈরি করতে পারেন। মূলত কোড অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে আপনাকে সাহায্য করবে চ্যাট জিপিটি। তবে এর জন্য আপনাকে শুধুমাত্র সঠিক নির্দেশনা বা প্রম্পট ব্যবহার করতে হবে।

৮. জটিল প্রশ্ন সহজ সমাধানের জন্য: 

আপনি যদি কোন একটি বিষয় সম্পর্কে সহজ ভাবে বুঝতে চান কিংবা একটি জটিল প্রশ্নকে সহজে রূপান্তর করতে চান সেক্ষেত্রে আপনি চ্যাট জিপিটির সাহায্য নিতে পারেন। এটি আপনাকে অনেক কঠিন কঠিন প্রশ্নের উত্তর সহজ আকারে প্রদান করবে তাও আবার স্টেট বাই স্টেপ। যা আমাদের জ্ঞানের পরিধ কে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। 

৯. বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করার জন্য: 

আপনি যদি রান্না করতে পছন্দ করেন সেক্ষেত্রে আপনি চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের রেসিপির লিস্ট তৈরি করে নিতে পারবেন। কিভাবে রান্না করতে হয়, কোন কোন জিনিসপাতি প্রয়োজন থেকে কিভাবে শুরু করবেন এই সমস্ত বিষয়ে আপনি চ্যাট-জিপিটির কাছ থেকে সাহায্য নিতে পারেন। আপনাকে এই বিষয়ে হয়তো চ্যাট জিপিটি অনেক বেশি পরিমাণে সাহায্য করতে পারবে এবং নতুন নতুন রান্না শেখাতে সাহায্য করবে। 

১০. স্ক্রিপ্ট লেখার কাজে: 

আমাদেরকে বিভিন্ন সময় স্ক্রিপ্ট লিখতে হয় যেমন শর্ট ফিল্ম, মুভি, ইউটিউব ভিডিও, কার্টুন, এনিমেশন, বিতর্ক প্রতিযোগিতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজেই স্ক্রিপ্টের প্রয়োজন হয়। আর আপনি চাইলে এখান থেকে খুব সহজেই অনেক প্রফেশনাল মানের স্ক্রিপ্ট তৈরি করতে পারবেন। যা আপনার কাজগুলোকে অনেক সহজ করে তুলবে। বর্তমানে অনেক শর্ট ফিল্ম এবং ইউটিউব ভিডিও তৈরি করা হচ্ছে চ্যাট জিপিটির স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী। এমনকি আপনি চাইলে চ্যাট জিপিটির মাধ্যমে একটি সম্পূর্ণ বই তৈরি করে নিতে পারবেন তাও আবার এক থেকে দেড় ঘন্টার মধ্যে। 

এখানে শুধুমাত্র দশটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ দেয়া হলো এছাড়াও আপনি বিভিন্ন কাজে চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করতে পারবেন এটা নিতান্তই আপনার ওপর ডিপেন্ড করবে যে আপনি কোন কাজের জন্য চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করবেন। 

চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়?

চ্যাট জিপিটি একটি শক্তিশালী ভাষা মডেল যা বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যেতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে টাকা ইনকাম করা। চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে টাকা ইনকাম করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে, তবে নিচে কিছু সেরা উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

১. আর্টিকেল রাইটিং: 

আপনি চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরণের কন্টেন্ট লিখে ভালো পরিমাণে ইনকাম করা সম্ভব। বর্তমানে অনলাইনে এমন অনেক ব্যক্তি রয়েছে যারা কনটেন্ট রাইটিং রিলেটেড কাজের জন্য আগ্রহী। তারা চাইলে কোন প্রকার কনটেন্ট চার্ট জিপিটির মাধ্যমেও করিয়ে নিতে পারবে। তবে অবশ্যই এই বিষয়ে আগে ভালোমতো জ্ঞান অর্জন করতে হবে যে, কিভাবে চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে ভালো কনটেন্ট লেখা সম্ভব। চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের কন্টেন্ট রাইটিং করা সম্ভব। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল আর্টিকেল, ব্লগ পোস্ট, eBooks, ইমেল রাইটিং, সিভি ইত্যাদি। এই ধরনের কাজগুলো করে তারা চাইলে নিজের ওয়েবসাইটে ব্যবহার করে এফিলিয়েট মার্কেটিং কিংবা বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবে। এছাড়া বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে সার্ভিসও প্রদান করতে পারবে। 

২. কপিরাইটিং: 

কপিরাইটিং হল বিভিন্ন ধরনের অ্যাডস এবং মার্কেটিং কাজের জন্য কনটেন্ট তৈরি করার কাজ বা প্রক্রিয়া। চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে আপনি ইফেক্টিভ এবং এট্রাক্টিভ ল্যান্ডিং পেজ কিংবা অ্যাডস কপি তৈরি করতে পারেন। এছাড়াও প্রোডাক্টের ডিসক্রিপশন তৈরি করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের ই-কমার্স ওয়েবসাইটের জন্য কপিরাইটিং করা সম্ভব। ফেসবুক অ্যাড কিংবা গুগল অথবা মাইক্রোসফট অ্যাড এর জন্য কপি তৈরি করা সম্ভব চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে। আর আপনি চাইলে এই ধরনের সার্ভিস সরাসরি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস কাজ করতে পারবেন। 

৩. সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট: 

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট হল সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন বিজনেসের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া উপস্থিতি পরিচালনা এবং কাস্টমারদেরকে আকৃষ্ট করার একটি প্রক্রিয়া। চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে আপনি বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় এবং ইফেকটিভ সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট তৈরি করে বিভিন্ন বিজনেস কে সাহায্য করতে পারেন। এছাড়াও চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে কন্টেন্ট জেনারেশন, কমিউনিটি ম্যানেজমেন্ট, ট্রেন্ড এবং ইনসাইট জেনারেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইন প্ল্যানিং, মার্কেটিং ক্যাম্পেইন টার্গেটিং এর মত গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করতে পারবেন। যা একটি বিজনেস কে সোশ্যাল মিডিয়াতে টিকে রাখার জন্য অনেক কার্যকর ভূমিকা রাখে। এই ধরনের যদি আপনি সার্ভিস দিতে চান সেক্ষেত্রে সরাসরি বিভিন্ন বিজনেসের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন অথবা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে ক্লায়েন্টের আন্ডারে কাজ করতে পারেন।

৪. স্ক্রিপ্ট রাইটিং: 

চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে আরেকটি সম্ভাব্য ইনকামের উপায় হতে পারে স্ক্রিপ্ট রাইটিং। বর্তমানে চ্যাট জিপিটি এতই পাওয়ারফুল যে  আপনি চাইলে চ্যাট জিপিটির মাধ্যমে একটি সম্পূর্ণ মুভির স্ক্রিপ্ট রাইটিং করে নিতে পারবেন। শুধুমাত্র মুভি নয় এর পাশাপাশি আপনি শর্টফিল্ম, পডকাস্ট, ইউটিউব ভিডিও স্ক্রিপ্ট, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থাপকদের জন্যই স্ক্রিপ্ট এবং অন্যান্য যে কোন প্রকার স্ক্রিপ্ট তৈরি করে নিতে পারেন। তবে এই ধরনের কাজ করার ক্ষেত্রে আপনাকে একটু সচেতন হতে হবে তবে এই সেক্টরে ইনকাম করা সম্ভবনা অনেক বেশি। এই রিলেটেড বর্তমানে অনেক কাজ অনলাইনে পাওয়া যায় যা আপনি সরাসরি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে করতে পারবেন। অথবা আপনি চাইলে সরাসরি কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে কাজ করতে পারেন।

৫. বই লিখে: 

২০২৩ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে একটি সংবাদপত্র জানাই যে শুধুমাত্র চ্যাট জিপিটি আসার পরেই অনলাইনে অনেক বেশি পরিমাণে লেখক নতুন নতুন বই পাবলিশ করা শুরু করে। যার বেশিরভাগ বইগুলোই ছিল চ্যাট জিপিটির মাধ্যমে লিখে নেয়া। এছাড়াও বাচ্চাদের শর্ট স্টোরি থেকে শুরু করে বড় বড় রোমাঞ্চক এবং রোমান্টিক রিলেটেড বই তৈরি করা হয় চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে। বর্তমানেও চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে অনেকক্ষণ অনেক প্রকার বই লিখতেছে এবং সেগুলোকে অনলাইনে এবং সরাসরি বাজারে বিক্রি করতেছে। আপনি যদি একজন লেখক হয়ে থাকেন অথবা বই পাবলিশ করার ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনি চ্যাট জিপিটির মাধ্যমে ভালোভাবে একটি বই লিখে নিতে পারেন। পরবর্তীতে তা সরাসরি বাজারে বিক্রি করে কিংবা অনলাইনে সেল করতে পারেন। বর্তমানে বাংলাদেশেও এই পদ্ধতি অবলম্বন করে অনেক বই বিক্রি করা হচ্ছে। এমনকি বইমেলায় এইরকম অনেক বই বিক্রি করা হয়েছে যেগুলো চ্যাট জিপিটির মাধ্যমে লেখানো হয়েছিল। বাংলাদেশের অন্যতম ইউটিউবার এবং মোটিভেশনাল স্পিকার নাফিস সেলিম রিলেটেড একটি ভিডিও পাবলিশ করেছিল জনসম্মুখে। 

৬. অ্যাপ ও গেম তৈরি করে: 

আপনি চাইলে চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে খুব সহজেই বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ এবং গেম তৈরি করতে পারবেন। শুধুমাত্র অ্যাপ এবং গেম তৈরি করবেন তা কিন্তু নয় এর পাশাপাশি আপনি google admob বিজ্ঞাপন দেখিয়ে অ্যাপস বা গেম থেকে ভালো পরিমাণে রেভিনিউ জেনারেট করতে পারবেন। আর এই ধরনের অ্যাপ কিংবা গেম তৈরি করতে আপনাকে বিশেষ কোন কোডিং এরও প্রয়োজন হবেনা শুধুমাত্র আপনাকে সঠিকভাবে গাইডলাইন প্রদান করতে হবে চ্যাট জিপিটিকে। এছাড়াও কিভাবে কোন কাজ করতে হবে সেটাও আপনাকে জানিয়ে দিবে চ্যাট জিপিটি। একবার আপনার অ্যাপ কিংবা গেম তৈরি হয়ে গেলে আপনি তা গুগল প্লে তে কিংবা অ্যাপল স্টোরে তে যুক্ত করে দিতে পারেন এতে করে সরাসরি আপনার অ্যাপ কিংবা গেম অন্যরা ইন্সটল করতে পারবে। 

৭. বিভিন্ন ধরনের টুল তৈরি: 

আপনি চ্যাট জিপিটির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের টুলস তৈরি করে সেখানে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে কিংবা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ভালো পরিমাণে ইনকাম করতে পারবেন। আর এই ধরনের টুলগুলো তৈরি করা খুবই সহজ যা আপনি খুব সহজেই তৈরি করতে পারবেন। আপনি বিভিন্ন ধরনের টুল তৈরি করতে পারেন এর মধ্যে BMI ক্যালকুলেটর, ChatGPT প্রম্পট জেনারেটর, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট টুল, বাগ রিপোর্টিং টুল, কন্টেন্ট জেনারেটর, বিভিন্ন ধরনের এসইও টুল সহ নানা ধরনের টুলস তৈরি করতে পারবেন। পরবর্তীতে এই ধরনের টুলস ওয়েবসাইট তৈরি করে সেগুলোকে সরাসরি বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে সেল দিতে পারবেন। 

৮. ওয়ার্ডপ্রেস থিম এবং প্লাগিন তৈরি: 

২০২৩ সালে প্রায় অনেক প্ল্যান এবং ওয়ার্ডপ্রেস থিম তৈরি করা হয়েছে শুধুমাত্র চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে। অন্যদের কথা না বলি, আমি নিজেই এরকম অনেকগুলো প্লাগিন এবং থিম তৈরি করেছি শুধুমাত্র চ্যাট জিপিটির সাহায্যে। আপনি চাইলে আপনিও বিভিন্ন ধরনের প্লাগিন এবং ওয়ার্ডপ্রেস থিম তৈরি করতে পারেন এবং সেগুলোকে আপনি চাইলে সেল দিতে পারেন। তবে এই সমস্ত কাজ করতে হলে আপনাকে পূর্বের স্বল্প হলেও জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা রাখতে হবে। আর ভবিষ্যতে এই ধরনের প্লাগিন এবং থিমগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। আপনি যদি এমন কোন থিম বা প্লাগিন তৈরি করতে পারেন যা সব সময় অন্যদের কাজে লাগে এবং যদি সত্যিই আপনার প্লাগিন এবং থিম ভালো হয় তাহলে অটোমেটিক্যালি সবাই ব্যবহার করবে। আপনি চাইলে থিম এবং প্লাগিনগুলোকে সরাসরি মার্কেটপ্লেসে বিক্রি করে দিতে পারেন অথবা আপনি সার্ভিস আকারে অন্যদের কাছে সেল দিতে পারেন।

৯. প্রম্পট ইঞ্জিনিয়ার হয়ে: 

সব সময় একটি কথাই মাথায় রাখবেন চ্যাট জিপিটিকে আপনি যত ভালো পরিমাণে প্রম্পট বা নির্দেশনা দিতে পারবেন চ্যাট জিপিটি আপনাকে তত ভাল এবং ইফেক্টিভ রেজাল্ট প্রদান করবে। আর এখানেই কাজে আসে প্রম্পট ইঞ্জিনিয়াররা। কোন ধরনের প্রম্পট চ্যাট জিপিটি ভালো বুঝতেছে এবং ভালো আউটপুট দিচ্ছে সেই সম্পর্কে তাদেরকে অনেক বেশি নলেজ রাখতে হয় এবং নতুন নতুন প্রম্পট নিয়ে কাজ করতে হয়। অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে এই জবের পরিমাণ এখন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তুলনামূলক ভালো ইনকামের সম্ভাবনাও রয়েছে। আর আমি বর্তমানে নিজেও প্রম্পট ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে কাজ করতেছি।

১০. বিজনেস এডভাইজার বা বিজনেস আইডিয়া প্রদানকারী হিসেবে: 

প্রত্যেকটি বিজনেসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নতুন নতুন আইডিয়া এবং বিভিন্ন অভিজ্ঞ অ্যাডভাইজার এর প্রয়োজন হয়। নতুন নতুন টেকনিক বা পদ্ধতি নিয়ে আসতে হয় নিজেদের সার্ভিস কিংবা প্রোডাক্ট সেল বাড়ানোর জন্য। আর এখানেই আপনি ভালো একটি সুযোগ লুফে নিতে পারেন। বিভিন্ন ধরনের বিজনেস আইডিয়া প্রদান করে কিংবা বিভিন্ন ধরনের বিজনেস টেকনিক নিয়ে অন্যদেরকে সাহায্য করতে পারেন এবং তাদের কে ভালো পরিমাণে ইনকাম জেনারেট করার জন্য গাইডলাইন দিন। বর্তমানে অনেক ব্যাক্তি আছে যারা চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের বিজনেস কনসালটিং সার্ভিস প্রদান করতেছে। আপনি চাইলে আপনি ও এই রকম সার্ভিস প্রদান করতে পারেন। তবে এই কাজ করতে গেলে আপনাকে বিভিন্ন ধরনের জ্ঞান ও সৃজনশীল আইডিয়া রাখতে হবে বিজনেস সম্পর্কে। এছাড়াও ধৈর্য এবং পরিশ্রম করতে হবে এই রিলেটেড কাজ করার ক্ষেত্রে।

এই কাজগুলো ছাড়া অনেক হয়েছে যেগুলো আপনারা চ্যাট জিপিটির মাধ্যমে করিয়ে নিতে পারবেন এবং সেখান থেকে একটি হিউজ অ্যামাউন্ট এর টাকা ইনকাম করতে পারবেন। যেমন; 

১. পার্সোনাল চ্যাটবট তৈরি করে সেল করা

২. চ্যাট জিপিটির মাধ্যমে ভিডিও তৈরি করা

৩. ক্রম এবং অন্যান্য ব্রাউজারের জন্য এক্সটেনশন তৈরি করে বিক্রি করা

৪. ট্রান্সলেটর হিসাবে অনলাইনে কাজ করা

যেহেতু এখনো ChatGPT ডেভলপমেন্ট অবস্থায় রয়েছে সেক্ষেত্রে আশা করা যায় ভবিষ্যতে চ্যাট-জিপিটি আরো শক্তিশালী আকার ধারণ করবে। তবে ভবিষ্যতে গিয়ে হয়তো আরও বিভিন্ন ধরনের কাজ বের হবে যেগুলো চ্যাট জিপিটির মাধ্যমে করানো যেতে পারে।

চ্যাট জিপিটি কি আসলেই মানুষকে প্রতিস্থাপিত করে ফেলবে?

ChatGPT একটি মেশিন লার্নিং মডেল, যা মানুষের মতো চিন্তা বা বোঝার সক্ষমতা তৈরি হয়নি এবং কখনো হওয়ার সম্ভাবনাও নেই। চ্যাট জিপিটি কখনোই মানুষকে প্রতিস্থাপন করতে পারবে না কিন্তু মানুষকে বিভিন্ন কাজে সাহায্য করতে পারবে। তবে কিছু কিছু এমন জব সেক্টর রয়েছে যেগুলোতে হয়তো চ্যাট জিপিটি তথা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আধিপত্য বিস্তার করতে পারে তবে এখানেও চাকরির বিকল্প আছে।

চ্যাট জিপিটি মানুষের কিছু কিছু চাকরি প্রতিস্থাপন করতে পারে, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ডেটা এন্ট্রি, কাস্টমার সার্ভিস এবং গ্রাফিক্স ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং এর মত কাজগুলো। তবে এই সেক্টরগুলো যে সম্পূর্ণ চ্যাট জিপিটি কিংবা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর আওতায় আসবে তা কিন্তু নয়। যেই কাজগুলো খুবই সাধারণ এবং হিউম্যান ব্রেইন ব্যবহার না করেই কাজ যাবে সেই কাজগুলো হয়তো ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। 

তবে এর মাধ্যমে তৈরি হবে আরো নতুন নতুন চাকরির সম্ভাবনা যেগুলো মেইন কেন্দ্র হবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর মতো সেক্টরগুলোতে, যেমন চ্যাট জিপিটি প্রম্পট ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যানেজমেন্ট এর জন্য নতুন নতুন সম্ভাবনাময় চাকরি। এছাড়াও তৈরি হতে পারে আরো অনেক নতুন নতুন ধরনের চাকরি যার কয়েকটি অন্যতম চাকরি হলো;

  • AI Artist 
  • AI Development
  • Generative Models
  • AI Music Videos
  • AI Content Editing
  • Fact Checking
  • All in AI Services

এই ধরনের জব গুলো আপনি ঘরে বসেই ফ্রিল্যান্সার হিসেবে করতে পারবেন অথবা সরাসরি কোম্পানির আওতাধীন অবস্থায় কাজ করতে পারবেন।

সর্বোপরি বলতে চাই যে, চ্যাট জিপিটি মানুষের জন্য একটি অনেক পাওয়ারফুল ওয়েপন বা হাতিয়ার হতে পারে যা মানুষকে নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জানাতে এবং নতুন নতুন বিষয় আবিষ্কার করতে সাহায্য করবে, তবে কখনোই মানুষকে প্রতিস্থাপন করতে পারবে না। অবশ্যই চ্যাট জিপিটি তথা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স মানুষের কাজের অবস্থানকে অনেকাংশেই পরিবর্তন করতে পারবে বলে মনে করা হয় , তবে পুরোপুরি প্রতিস্থাপন করবে না। 

এই রিলেটেড অনেক উদাহরণ দেয়া যায় তবে হয়তোবা আমার মূল বক্তব্য আপনারা বুঝতে পেরেছেন। 

কিভাবে চ্যাট জিপিটি একাউন্ট তৈরি করব

চ্যাট জিপিটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করা খুবই সহজ কাজ তবে চ্যাট জিপিটি তাদের নিত্য নতুন আপডেটের নতুন নতুন ভাবে একাউন্ট খোলার পদ্ধতি নিয়ে আসতেছে। ২০২৩ সালেই শুধুমাত্র একাউন্ট তৈরি করারই প্রায় ৪ থেকে ৫টি আপডেট এসেছিল। পূর্বে নাম্বার ভেরিফাই করতে লাগতো বর্তমানে নাম্বার ভেরিফাই করতে লাগে না যেটা সবথেকে ভালো একটি দিক। তাহলে চলুন জেনে নেই কিভাবে আপনি শুধুমাত্র একটি জিমেইল দিয়ে আপনার চ্যাট জিপিটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করবেন এবং সেটাকে ব্যবহার উপযোগী করবেন।

চ্যাট জিপিটি একাউন্ট তৈরি করার স্টেপ বাই স্টেপ নিয়ম

১. প্রথমত আপনাকে গুগলে সার্চ করতে হবে "Chat GPT" লিখে অথবা সরাসরি https://chat.openai.com/ থেকেও তাদের ওয়েবসাইটে যেতে পারেন।

Chat GPT কী, চ্যাট জিপিটি কিভাবে কাজ করে, এর সুবিধা অসুবিধাগুলো কী, কিভাবে চ্যাট জিপিটি একাউন্ট তৈরি করব

২. যখন আপনি তাদের মেইন্ট আসবে প্রবেশ করবেন তো সেখানে তখন দুইটি বাটন দেখতে পারবেন। একটি হলো "Log In" বাটন, অপরটি হল "Sign UP" বাটন। সেখান থেকে "Sign UP" বাটনে ক্লিক করবেন। যদি আপনার একাউন্ট পূর্বে থেকে থাকে তাহলে আপনি সরাসরি লগইন করতে পারেন।

Chat GPT কী, চ্যাট জিপিটি কিভাবে কাজ করে, এর সুবিধা অসুবিধাগুলো কী, কিভাবে চ্যাট জিপিটি একাউন্ট তৈরি করব

৩. সাইন আপ বাটনে ক্লিক করার পর আপনি নিচের মত একটি পেজ দেখতে পারবেন। সেখানে আপনি চাইলে সরাসরি ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট, অ্যাপেল আইডি, গুগল অ্যাকাউন্ট বা সরাসরি ইমেইল দিয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করার অপশন পাবেন। তবে আমার রিকমেন্ডেশন থাকবে আপনারা সরাসরি ইমেইল দিয়ে একাউন্ট তৈরি করবেন। 

Chat GPT কী, চ্যাট জিপিটি কিভাবে কাজ করে, এর সুবিধা অসুবিধাগুলো কী, কিভাবে চ্যাট জিপিটি একাউন্ট তৈরি করব

৪. আপনার ইমেইল একাউন্ট দিয়ে একাউন্ট করতে চাইলে খালি ঘরে আপনার ইমেইল একাউন্ট প্রদান করবেন। তারপর "Continue" বাটনে ক্লিক করবেন।

Chat GPT কী, চ্যাট জিপিটি কিভাবে কাজ করে, এর সুবিধা অসুবিধাগুলো কী, কিভাবে চ্যাট জিপিটি একাউন্ট তৈরি করব

৫. "Continue" বাটনে ক্লিক করার পরবর্তী পেজে আপনি আবার আপনার ইমেইল দেখতে পারবেন, এবং পাসওয়ার্ড দেওয়ার একটি অপশন পাবেন। সেখানে আপনার পাসওয়ার্ড প্রদান করবেন অবশ্যই পাসওয়ার্ডটি ১২ ক্যারেক্টার কিংবা এর অধিক সংখ্যার হতে হবে। পাসওয়ার্ড প্রদান করা হলে "Continue" বাটনে ক্লিক করবেন।

Chat GPT কী, চ্যাট জিপিটি কিভাবে কাজ করে, এর সুবিধা অসুবিধাগুলো কী, কিভাবে চ্যাট জিপিটি একাউন্ট তৈরি করব

৬. তারপর আপনাকে ইমেইল ভেরিফাই করতে হবে, আপনার ইমেইলে একটি ভেরিফাই লিংক পাঠাবো সেখান থেকে আপনাকে ভেরিফাই করতে হবে। 

Chat GPT কী, চ্যাট জিপিটি কিভাবে কাজ করে, এর সুবিধা অসুবিধাগুলো কী, কিভাবে চ্যাট জিপিটি একাউন্ট তৈরি করব

৭. ইমেইল ভেরিফাই করার পর আপনাকে ক্যাপচা পূরণ করতে হবে। নিচে ছবিতে দেখতে পারতেছেন, জাস্ট ক্লিক করলেই ভেরিফাই হয়ে যাবে যদি আপনি ভালো নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেন। 

Chat GPT কী, চ্যাট জিপিটি কিভাবে কাজ করে, এর সুবিধা অসুবিধাগুলো কী, কিভাবে চ্যাট জিপিটি একাউন্ট তৈরি করব
Chat GPT কী, চ্যাট জিপিটি কিভাবে কাজ করে, এর সুবিধা অসুবিধাগুলো কী, কিভাবে চ্যাট জিপিটি একাউন্ট তৈরি করব

৮. ক্যাপচা পূরণ হয়ে গেলে পরবর্তীতে আপনাকে একটি নতুন পেজে নিয়ে আসবে যেখানে আপনাকে আপনার নাম এবং বার্থডে প্রদান করতে হবে।

Chat GPT কী, চ্যাট জিপিটি কিভাবে কাজ করে, এর সুবিধা অসুবিধাগুলো কী, কিভাবে চ্যাট জিপিটি একাউন্ট তৈরি করব

৯. যদি ইনফরমেশন গুলো দেয়া শেষ হয় তাহলে "Agree" বাটনে ক্লিক করতে হবে। 

১০. Boom! আপনার একাউন্ট তৈরি হয়ে গিয়েছে, জাস্ট তাদের প্রাইভেসি পলিসিটির নীতিগুলোতে অ্যালাও করে দিবেন। এবার আপনি ইচ্ছামত চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করতে পারবেন। 

Chat GPT কী, চ্যাট জিপিটি কিভাবে কাজ করে, এর সুবিধা অসুবিধাগুলো কী, কিভাবে চ্যাট জিপিটি একাউন্ট তৈরি করব

যদি আপনি উপরে সমস্ত স্টেপ ফলো করেন তাহলে খুব সহজেই আপনার চ্যাট জিপিটি একাউন্ট ক্রিয়েট হয়ে যাবে। যা চাইলে আপনি যেকোনো সময় যে কোন মুহূর্তে ব্যবহার করতে পারবেন যে কোন সমস্যা সমাধানের জন্য। 

চ্যাট জিপিটি সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা চ্যাট জিপিটি সম্পর্কে অনেক বিস্তারিত তথ্য জানলাম। তবে এখন চলুন জেনে আসি চ্যাট জিপিটি সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান এবং তথ্য। তবে তথ্যগুলো সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হতে পারে।

১. চ্যাট জিপিটির মাসিক ইউজারের সংখ্যা হল 180 মিলিয়ন বা 18 কোটি। আরো সপ্তাহিক অ্যাক্টিভ ইউজারের সংখ্যা হল প্রায় ১০০ মিলিয়ন বা ১০ কোটি। 

২. চ্যাট জিপিটি লঞ্চ হওয়ার শুধুমাত্র ৫ দিনের মধ্যেই ১ মিলিয়ন ইউজার এর মাইল ফলক স্পর্শ করে।

৩. চ্যাট জিপিটিতে মোট ব্যবহারকারীর প্রায় ১৫ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় বাসিন্দা।

৪. 92% ফরচুন 500 কোম্পানি প্রায় নিয়মিত চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করতেছে। 

৫. চ্যাট জিপিটি পূর্বাভাস দিয়েছে যে তারা ২০২৪ সালে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি রেভিনিউ বা লাভ জেনারেট করতে পারে। 

৬. প্রতিদিন চ্যাট জিপিটিকে পরিচালনা করার জন্য open ai প্রতিষ্ঠানের $700,000 ব্যয় হয়। 

৭. চ্যাট জিপিটিতে প্রতি মাসে গড়ে ১.৭ বিলিয়ন পেজ ভিজিট করা হয়ে থাকে। 

৮. চীন, রাশিয়া সহ বিশ্বের মোট সাতটি দেশে চ্যাট জিপিটি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

৯. সাধারণ রিডারদের প্রায় ৫৩ শতাংশই ai কনটেন্ট এবং হিউম্যান রিটেন কনটেন্ট এর মধ্যে পার্থক্য বুঝতে অক্ষম।

১০. চ্যাট জিপিটি ইউজারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশিরভাগ ইউজারের বয়স ১৮-৩৪ বছর এর মধ্যে। 

১১. চ্যাট জিপিটি ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রায় ৭০% পুরুষ।

এগুলো ছাড়া আরো অনেক পরিসংখ্যান রয়েছে। তবে এই পরিসংখ্যান গুলোই মূলত মুখ্য। নিচে এই পরিসংখ্যানে একটি ওভারভিউ দেয়া হলো।

মাসিক ইউজারের সংখ্যা ১৮ কোটির বেশি
সাপ্তাহিক একটিভ ইউজারের সংখ্যা ১০ কোটি
১ মিলিয়ন ব্যবহারকারী অর্জন ৫ দিনের মধ্যে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউজার ১৫%
ফরচুন ৫০০ কোম্পানি ব্যবহার ৯২%
২০২৪ এর আয় পূর্বাভাস ১ বিলিয়ন ডলার
দৈনিক ম্যানেজমেন্ট খরচ ৭ লক্ষ ডলার
মাসিক পেজ ভিউ ১.৭ বিলিয়ন
নিষিদ্ধ দেশ ৭টি (চীন, রাশিয়া সহ)
AI লেখা আইডেন্টিফিকেশনে ব্যর্থতা ৫৩%
চ্যাট জিপিটি ব্যবহারকারীদের তরুণ ৬০% (১৮-৩৪ বছর বয়সী)
চ্যাট জিপিটি ব্যবহারকারীদের লিঙ্গ ৭০% পুরুষ
চ্যাট জিপিটি সবচেয়ে জনপ্রিয় তথ্য সার্চ, বিনোদন এবং শিক্ষা

চ্যাট জিপিটি প্রায় কতটি ভাষায় উত্তর দিতে পারে?

চ্যাট জিপিটি বর্তমানে প্রায় ৫০টির অধিক ভাষায় পারদর্শী। অর্থাৎ চ্যাট জিপিটির মাধ্যমে আপনি ৫০ টি অধিক ভাষায় আপনার প্রশ্ন কিংবা উত্তর পেতে পারেন। বিশ্বের সবথেকে উল্লেখযোগ্য ভাষা যেমন ইংরেজি, স্প্যানিশ, ফ্রান্স, হিন্দিসহ অন্যান্য ভাষায় উত্তর দিতে পারে। এছাড়া বাংলা ভাষা চ্যাট জিপিটি বুঝতে পারে এবং উত্তর দিতে পারে। তবে বাংলা ভাষার উত্তর গুলো কিছুটা অপ্রাসঙ্গিক এবং ভাষাগুলো খুবই জটিল হয়। 

উপসংহার

বর্তমান সময়ে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আর বর্তমানে সব থেকে জনপ্রিয় এবং বহুল প্রচলিত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স হলো ChatGPT। আজকের এই আর্টিকেলে চ্যাট জিপিটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এই আর্টিকেলের এর মধ্যে আলোচনা করা হয়েছে চ্যাট জিপিটি কি, এর ইতিহাস, চ্যাট জিপিটির ব্যবহারকারী সংখ্যা কত, চ্যাট জিপিটির সুবিধা অসুবিধা, চ্যাট জিপিটি কিভাবে কাজ করে এবং চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায় এরকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটা আপনাদের অবশ্যই কাজে দিবে। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url