ফেসবুক বিজনেস পেজ ব্যবহার করে ব্যবসা করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন ২০২৪

 আপনি কি একটি ফেসবুকের মাধ্যমে বিজনেস শুরু করার কথা ভাবছেন? জেনে অবাক হবেন যে একটি সাধারন ফেসবুক পেজের তুলনায় তুলনায় একটি প্রফেশনাল পেজে বেশি ফলোয়ার এবং কাস্টমার বেশি পাওয়া যায়। 

Statista এর ২০২১ সালের জরিপ অনুযায়ী সারা বিশ্বের প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন অর্থাৎ ৩৫০ কোটির অধিক মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে নিয়মিত। সুতরাং আপনি যদি একটি অনলাইন ভিত্তিক বিজনেস শুরু করতে চান। তাহলে ফেসবুক পেজ দিয়ে বিজনেস শুরু করার মত আর কোন সুবিধা জনক উপায় নেই। 

কিন্তু কিভাবে ফেসবুক ব্যবহার করে আপনি একটি বিজনেস পেজ তৈরি করবেন প্রফেশনালি সেটা একটু আপনার জন্য সমস্যা হতে পারে। 

চিন্তার বিষয় নেই, এজন্য আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব কিভাবে আপনি একটি প্রফেশনাল বিজনেস ফেসবুক পেজ তৈরি করবেন। এই গাইড লাইনের মধ্যে আমি বিস্তারিত আকারে আপনাদেরকে সমস্ত বিষয়ে খোলামেলা ভাবে জানানোর চেষ্টা করব।

ফেসবুক বিজনেস পেজ ব্যবহার করে ব্যবসা করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন ২০২৩

কিভাবে আপনি শূন্য থেকে শুরু করে একজন প্রফেশনাল বিজনেসম্যান হবেন এই বিষয়টাও ভালোভাবে ক্লিয়ার করার চেষ্টা করব। সহজে বলতে গেলে পেজ তৈরি থেকে শুরু করে কাস্টমারের সংখ্যা বাড়ানো এবং অন্যান্য সমস্ত বিষয় ক্লিয়ার করব। 

তাহলে চলো অতিরিক্ত কথা না বলে মূল আর্টিকেল শুরু করি। 

কেন ব্যবসার একটি ফেসবুক পেজ প্রয়োজন

বর্তমান সমাজ যেহেতু অনলাইন ভিত্তিক হয়ে গিয়েছে এজন্য আমাদেরকে বিজনেস করতে গেলে অবশ্যই অনলাইনে সাহায্য নিতে হবে। আর আপনি যদি অনলাইনে ব্যবসা করতে চান তাহলে ফেসবুকের থেকে ভালো কোন অপশন পাবেন না। 

সার্বিক দিক বিবেচনা করলে ফেসবুক পেজ একটি ব্যবসা দাঁড় করানোর জন্য ১০০% কার্যকরী মাধ্যম। কেননা বিশ্বের প্রায় ৩৫০ কোটি মানুষ নিয়মিত ফেসবুকের মধ্যে একটিভ থাকে। বাংলাদেশী প্রায় ১০ কোটির অধিক মানুষ নিয়মিত ফেসবুক ব্যবহার করে। 

সুতরাং আপনি যে ক্ষেত্রেই ব্যবসা শুরু করতে চান না কেন ফেসবুকের মধ্যে সব ধরনের মানুষের যাতায়াত রয়েছে। Facebook ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্সদের কাছে পৌঁছাতে পারবেন। 

ফেসবুকে যেহেতু কোটি কোটি মানুষ ব্যবহার করতেছে সেক্ষেত্রে এখানে আমাদের ফলোয়ার এবং কাস্টমার খুজে পাওয়া খুব একটা কঠিন কাজ হবে না। 

Facebook পেজ ব্যবহার করে বিজনেস করার সব থেকে ভালো একটি দিক হলো এখানে খুব সহজেই একটি বড় অ্যামাউন্ট এর অডিয়েন্স তৈরি করা সম্ভব। 

আপনি একটি নির্দিষ্ট বিষয়কে টার্গেট করে যদি প্রোডাক্ট সেল করতে চান, তাহলে জাস্ট সে রিলেটেড কিছু মার্কেটিং টেকনিক অবলম্বন করেই আপনার প্রোডাক্টগুলো ফ্রিতেই তাদের সামনে পৌঁছাতে পারবেন। 

আর আমরা যেহেতু নিয়মিত ফেসবুক ব্যবহার করি সেও তো আমাদেরকে আর ফেসবুক সম্পর্কে এক্সট্রা জ্ঞান অর্জন করতে হবে না। আর ফেসবুক পেজ তৈরি করা সম্পূর্ণ ফ্রি যার কারণে আমাদেরকে এক্সট্রা কোন টাকা খরচ করতে হবে না। 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের facebook পেজকে কেন্দ্র করে নতুন নতুন অনেক ছোটখাটো বিজনেস তৈরি হয়েছে। 

যেহেতু facebook ব্যবহার করা সহজ এবং হাতের নাগালের মধ্যে রয়েছে সে ক্ষেত্রে এখানে ছোটখাটো বিজনেস স্টার্ট করা খুব কঠিন কাজ না। 

আরেকটি বিষয় যে ফেসবুক ব্যবহার করে আমরা খুব সহজেই একটি  ব্র্যান্ডের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন তুলনামূলক সহজ। এছাড়াও facebook পেজের মাধ্যমে বিজনেস করা বাংলাদেশের সম্পূর্ণ বৈধ যার কারনে আপনাকে কোন আইনি জটিলতার মধ্যেও পড়তে হবে না। 

এছাড়াও facebook ব্যবহার করে খুব সহজেই প্রোডাক্টের আপডেট এবং নিত্য নতুন তথ্য গুলো সবার সামনে খুব সহজেই প্রচার করা সম্ভব। 

ফলোয়ারদের কমেন্ট এর রিপ্লাই থেকে শুরু করে শেয়ার এবং অন্যান্য অপশন গুলো তুলনামূলক ব্যবহার করা সহজ। ফেসবুকের সব থেকে ভালোলাগার মতো একটি বিষয় হলো খুব সহজেই যেকোনো একটি বিষয়ে ভাইরাল করা সম্ভব।   

আর ফেসবুক পেজ ব্যবহার করে মার্কেটিং এবং এডভার্টাইজিং খুব সহজেই করা যায়। এছাড়াও facebook পেজে রয়েছে একটি এনালেটিক্স অপশন যেখান থেকে খুব সহজেই পেজের যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব। 

এছাড়াও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফেসবুক মার্কেটপ্লেস, বিজনেস সুট ও ইনকামের নানা পদ্ধতি নিয়ে এসেছে। যার ফলে ফেসবুক পেজ ব্যবহার করে শুধুমাত্র একটি ছোট ব্যবসা থেকে শুরু করে বড় ব্যবসায় রূপান্তর করাও সহজ হয়ে গিয়েছে। 

সর্বশেষে বলতে চাই যে facebook বর্তমান সামাজিক মিডিয়ার অন্যতম একটি প্ল্যাটফর্ম। আর বর্তমান যুগ যেহেতু অনলাইন ভিত্তিতে রূপান্তর হওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে সেক্ষেত্রে ফেসবুক ব্যবহার করে বিজনেস না করে একটা বোকামির মতোই। 

বর্তমানে যত ছোট থেকে বড় কোম্পানি রয়েছে তাদের সবারই একটি ফেসবুক পেজ রয়েছে। এছাড়াও একটি ফেসবুক পেজ ব্যবহার করে নানা ধরনের কাজে ব্যবহার করা সম্ভব যা আমি বিস্তারিতভাবে নিচে আলোচনা করব।

ফেসবুকের মাধ্যমে করা যেতে পারে এমন ১০টি বিজনেস আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই আর্টিকেলটা পড়তে পারেন। 

ফেসবুকে বিজনেস পেজ তৈরির নিয়ম

ফেসবুকে একটি পেজ সেটাআপ করার মানে হচ্ছে আপনার একটি অনলাইনে বিশাল উপস্থিতি জানানোর প্রথম প্রক্রিয়া। বর্তমানে ফেসবুকে প্রফেশনাল ক্রিয়েট করতে গেলে অবশ্যই সব দিক বিবেচনা করতে হবে। 

একটি বিশাল অডিয়েন্স তৈরি করার জন্য আপনাকে তাদের মনোভাব এবং চাহিদার বিষয়গুলো ক্লিয়ার করতে হবে। নিচে আমি প্রত্যেকটি স্টেপ বিস্তারিত আকারে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব ছবিসহ যেন আপনারা সব বিষয়ে ভালোভাবে বুঝতে পারেন।  

যেহেতু বাংলাদেশের বেশিরভাগ জনের মোবাইল ব্যবহার করে আমাদের কার্যকলাপ গুলো করি সেজন্য আমি মোবাইল ফোন ব্যবহার করে সবকিছু করে দেখাবো। আপনারা চাইলে একই কাজ ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটার ব্যবহার করে করতে পারবেন। 

তাহলে চলুন জেনে নেই কিভাবে একটি প্রফেশনাল ফেসবুক ব্যবসায়ী পেজ তৈরি করবেন ইনকামের উদ্দেশে: 

১. প্রথমে প্রথমে আপনাকে আপনার ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্টে লগইন করতে হবে। যে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আপনার পেজ তৈরি করতে চাচ্ছেন।  

২. ফেসবুক একাউন্টে প্রবেশ করার পর ড্যাশবোর্ডে থেকে  আপনাকে থ্রি ডট মেনুতে ক্লিক করতে হবে।

ফেসবুক বিজনেস পেজ ব্যবহার করে ব্যবসা করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন ২০২৩

৩. ‌"All Shortcut" অপশন থেকে পেজ অপশন সিলেক্ট করে নিবেন। যদি প্রথমেই "Pages" অপশন না থাকে তাহলে "See More" অপশনে ক্লিক করে নিচে দেখতে পারেন যে "Pages" নামের একটি অপশন রয়েছে। 

ফেসবুক বিজনেস পেজ ব্যবহার করে ব্যবসা করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন ২০২৩

৪. "Pages" অপশনে ক্লিক করার পর আপনাকে একটি নতুন পেজে নিয়ে আসবে। সেখানে আপনার আগের সবগুলো পেজ দেখতে পারবেন আর যদি কোন পেজ ক্রিয়েট করে না থাকেন পূর্বে তাহলে সম্পূর্ণ ফাঁকা থাকবে। 

৫. ওপরে একটি "Create" নামে অপশন পাবেন। "Create" বাটনে ক্লিক করতে হবে।

ফেসবুক বিজনেস পেজ ব্যবহার করে ব্যবসা করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন ২০২৩

৬. বাটনে ক্লিক করার পর একটি নতুন পেজ ওপেন হবে। নিচের ছবির মত সেখান থেকে "Get Started" বাটনে ক্লিক করতে হবে।

ফেসবুক বিজনেস পেজ ব্যবহার করে ব্যবসা করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন ২০২৩

৭. "Get Started" বাটনে ক্লিক করার সাথে সাথে আপনাকে নতুন পেজে নিয়ে আসবে। 

৮. এই জায়গায় আপনাকে আপনার ফেসবুক পেজের নাম দিতে হবে। অবশ্যই এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ফেসবুক এ নিজের উপস্থিতি প্রকাশ করার জন্য। এখানে আপনার পেজের পছন্দের নামটি দিতে পারেন। কিভাবে একটি নাম সিলেক্ট করবেন এই বিষয়ে নিচে আরও ভালোভাবে বিস্তারিত দেয়া হয়েছে। 

ফেসবুক বিজনেস পেজ ব্যবহার করে ব্যবসা করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন ২০২৩

৯. "Page Title" বা পেজের নাম প্রদান করার পরে "Next" বাটনে ক্লিক করতে হবে। 

১০. পরবর্তীতে আপনাকে আপনার পেজের ক্যাটাগরি দিতে হবে। ক্যাটাগরি বলতে আপনি কোন টপিকের উপর আপনার ফেসবুক পেজ তৈরি করতে চাচ্ছেন। সর্বোচ্চ তিনটি ক্যাটাগরির পর্যন্ত এখানে দিতে পারবেন। অবশ্য মনে রাখবেন এখানে আপনার ব্যবসা রিলেটেড ক্যাটাগরি গুলো দিবেন অতিরিক্ত কোন ক্যাটাগরি দিবেন না। ফেসবুকে রিচ বাড়ানোর জন্য এটি অনেক কার্যকর। সেজন্য মনযোগ সহকারে আপনার পছন্দের ক্যাটাগরি গুলো দিবেন।

১১. ক্যাটাগরি দেয়া সম্পূর্ণ হয়ে গেলে নিচে একটি "Create" নামে বাটন পাবেন জাস্ট সেখানে ক্লিক করে দিতে হবে। ক্লিক করে দেয়ার সাথে সাথেই আপনার ফেসবুক পেজ ক্রিয়েট হয়ে যাবে। 

ফেসবুক বিজনেস পেজ ব্যবহার করে ব্যবসা করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন ২০২৩

উপরের পদ্ধতি অবলম্বন করে আপনি খুব সহজেই যে কোন ধরনের ফেসবুক বিজনেস পেজ ক্রিয়েট করতে পারবেন। অবশ্যই মনে রাখবেন যে ফেসবুক বিজনেস পেজ ক্রিয়েট করার একটি জাস্ট একটি সামান্য ধাপ এখনো আমাদের মেইন কাজগুলো বাকি রয়েছে। 

আপনি যদি ফেসবুক লাইট ব্যবহার করেন কিংবা পিসি দিয়ে ফেসবুক পেজ ক্রিয়েট করতে চান তাহলে কিছু অতিরিক্ত ইনফরমেশন চাইতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনি প্রদান করতে পারেন কিংবা স্কিপ করে দিতে পারেন৷ কারণ আমরা পরবর্তীতে সমস্ত বিষয় ক্লিয়ার করব।

প্রোফাইলে ইমেজ সেটআপ করা

একটি প্রফেশনাল ফেসবুক পেজ তৈরির ক্ষেত্রে ভিজুয়াল এলিমেন্ট গুলো পাওয়ারফুল ইম্প্রেশন তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটি পেজের প্রোফাইল পিকচার এবং কভার ফটো সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কারণ যখন কোন একটি ভিজিটর কিংবা কাস্টমার প্রোফাইলে আসে তারা এই জিনিসগুলোই প্রথমে লক্ষ্য করে। 

আর আমরা সবাই জানি যে ফাস্ট ইম্প্রেশন টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যেহেতু ব্যবসার জন্য ফেসবুক পেজ ব্যবহার করতেছেন সেহেতু আপনাদের কাস্টমারদের কে আটকানোর জন্য প্রফেশনাল কভার ফটো এবং প্রোফাইল পিকচার ব্যবহার করা উচিত। 

আর অবশ্যই ইমেজগুলোকে অপটিমাইজ করা খুবই জরুরী একটি প্রফেশনাল ফেসবুক পেজ তৈরি করার ক্ষেত্রে। 

প্রথমেই আমাদেরকে ফেসবুক এর জন্য একটি বিজনেস রিলেটেড হাই রেজুলেশন এবং হাই কোয়ালিটি সম্পূর্ণ প্রোফাইল পিকচার সংগ্রহ করতে হবে কিংবা তৈরি করতে হবে। যেহেতু আমরা বিজনেস করার জন্য প্রোফাইল বানাচ্ছি সে ক্ষেত্রে কারো কপিরাইট ম্যাটেরিয়াল অর্থাৎ কারো ব্যবহারিত ইমেজ না ব্যবহার করাই ভালো। 

আপনি চাইলে নিজে নিজেই প্রফেশনাল তৈরি করে নিতে পারবেন canva কিংবা অন্যান্য ফটো এডিটিং সফটওয়্যার দিয়ে। আর আপনি যদি একান্তই এই বিষয়ে অক্ষম হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনি গুগল থেকে ক্রিয়েটিভ কমন ইমেজ ব্যবহার করবেন সে ক্ষেত্রে সামান্য এডিট করা প্রয়োজন। 

লক্ষ্য রাখবেন কারো লোগো কিংবা অন্য কোন বস্তু ব্যবহার করা উচিত নয়। কেননা প্রোফাইল পিকচারের সাথে অডিয়েন্সদের সম্পর্ক অনেক গভীর হয়। 

আপনি যদি হঠাৎই পরবর্তীতে ইমেজ পরিবর্তন করেন সে ক্ষেত্রে অডিয়েন্সদের কিছু অংশ হারিয়ে যেতে পারে। এই জন্য প্রথমেই এমন একটি ইমেজ কালেক্ট করবেন যা আপনার ব্রান্ড কে সব সময় সবার সামনে ইউনিকভাবে উপস্থাপন করবে। 

ফেসবুক পেজের প্রোফাইল পিকচার টাকে অবশ্যই বর্গ আকৃতির চেষ্টা করবেন। আর অবশ্যই মনে রাখবেন ইমেজ যেন পরিষ্কার হয় এবং হাই রেজুলেশন এবং কোয়ালিটি যদি মেইনটেইন থাকে। 

যখন আপনি ইমেজ আপলোড করবেন সেক্ষেত্রে আপনার ইমেজের বিকৃতি ঘটতে পারে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন আপনার মূল উপাদান যেন ইমেজের মধ্যেই থাকে। অর্থাৎ যেন প্রফেশনাল ভাবে আপনার প্রোফাইল পিকচারটা সেট করা হয়।

একবার আপনার প্রোফাইল পিকচার সেটআপ হয়ে গেলে পরবর্তীতে আপনাকে কভার ফটো দেখে বেশি মনোযোগী হতে হবে। কভার ফটো মূলত আপনার ব্রান্ডের একটি স্বীকৃত এবং অডিয়েন্সদেরকে আকৃষ্ট করার দুর্দান্ত উপায়। 

আপনার ব্যবসার কোয়ালিটি প্রোডাক্ট সার্ভিস এবং অন্যান্য সমস্ত বিষয়ে আপনার কভার ফটো মধ্যে উপস্থাপন করার চেষ্টা করবেন। যেন কেউ যদি আপনার ফেসবুক বিজনেস পেজে ভিজিট করে তাহলে যেন সহজে বুঝতে পারে আপনার পেজ কি রিলেটেড। 

এছাড়াও আপনি চাইলে আপনার পছন্দমত যে কোন ইমেজে দিতে পারেন। কিন্তু লক্ষ্য রাখবেন ইমেজ যেন অবশ্যই high quality সম্পূর্ণ হয়। সহজ ভাবে বলতে গেলে এমন হাই কোয়ালিটি ইমেজ কভার ফটো হিসেবে ব্যবহার করতে হবে যেন আপনার ব্রান্ডের সহজেই উপস্থাপন করতে পারে। 

 উদাহরণস্বর আপনি যদি জুতা নিয়ে ব্যবসা করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনি আপনার জুতার সাথে সম্পর্কিত যে কোন একটি হাই কোয়ালিটি সম্পূর্ণ কভার ফটো হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। আর অবশ্যই আপনার কভার ফটোটি যেন নজরকাড়া এবং সঠিক আকারে হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।

আপনি চাইলে হাই কোয়ালিটি সম্পূর্ণ ইমেজ খুব সহজেই বানিয়ে নিতে পারবেন। ক্যানভা থেকে ইমেজ তৈরি করলে আপনি সেখানে ফেসবুক পেজের কিছু প্রিমেড টেমপ্লেট দেখতে পারবেন। আপনি চাইলে সেখান থেকেও আপনার বিজনেস পেজের প্রোফাইল পিকচার ও কভার ফটো তৈরি করে নিতে পারবেন। 

আরেকটি বিষয় সবসময় মাথায় রাখবেন আপনার প্রোফাইল পিকচার এবং কভার ফটো যেন সব সময় পরিষ্কার এবং সরল হয়। প্রোফাইল পিকচারে কিংবা কভার ফটো এর মধ্যে হাবিজাবি কোন প্রকার লেখালেখি কিংবা ইমেজ ব্যবহার না করাই উচিত। আপনি চাইলে আকর্ষণীয় গ্রাফিক্স ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনার বিজনেসের সাথে মিল রেখে করতে হবে। 

আপনার ফেসবুক বিজনেস পেইজে কভার ফটো এবং প্রোফাইল পিকচার আপলোড করার জন্য জাস্ট ক্যামেরা আইকনে ক্লিক করুন তারপর আপনার স্টোরেজ থেকে যেই ছবিটা ব্যবহার করতে চান সেটা আপলোড করে নিন জাস্ট হয়ে যাবে। 

সবশেষে বলতে চাই যে, আপনার ফেসবুক বিজনেস পেজ কে অবশ্যই প্রফেশনাল এবং প্রাসঙ্গিকভাবে এডিট করার জন্য হাই কোয়ালিটি সম্পূর্ণ প্রোফাইল পিকচার এবং কভার ফটো কোনো বিকল্প নেই। আর অবশ্যই এই লাইনটি মনে রাখবেন যে, অডিয়েন্সরা কিন্তু ইমেজ এতে সব থেকে বেশি প্রাধান্য দেয়। এজন্য কখনোই এমন ইমেজ ব্যবহার করবেন না যেটা দিয়ে আপনার বিজনেসের সুনামের থেকে দুর্নাম বেশি হয়। 

About Info সেকশন প্রফেশনালি সেট আপ করা

একটি ফেসবুক পেজ সম্পর্কে অডিয়েন্সদের কে  জানানোর জন্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো About Info সেকশন। একটি ফেসবুকে একটি বিজনেস তৈরির গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হলো About Us সেকশন প্রফেশনালি এডিট করা। এবাউট সেকশনে মূলত আপনার বিজনেস সম্পর্কে সমস্ত তথ্য প্রদান করার একটি উপযুক্ত স্থান। 

ফেসবুক বিজনেস পেজ ব্যবহার করে ব্যবসা করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন ২০২৩

এখান থেকে খুব সহজেই আপনার বর্তমান ঠিকানা, আবাসিক ঠিকানা , কন্টাক্ট ইনফরমেশন যেমন ইমেইল নাম্বার, সোশ্যাল মিডিয়া, ওয়েবসাইট  সম্পর্কে বেশ কিছু ইনফরমেশন প্রদান করা সম্ভব। 

ফেসবুক বিজনেস পেজ ব্যবহার করে ব্যবসা করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন ২০২৩

সহজে বলতে গেলে একটি বিজনেস কে দাঁড় করানোর জন্য অবশ্যই বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস। আর ফেসবুক বিজনেস পেজ কে সবার সামনে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য অবশ্যই আপনার বিজনেস সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য প্রদান করা উচিত। 

যেন কাস্টমার এবং ফলোয়াররা আপনার বিষয়ে সম্পূর্ণ তথ্য পেতে পারেন এবং কোন দ্বিধাবোধ না করে আপনার প্রোডাক্ট ক্রয় করতে পারে। About section কে কিভাবে সাজাবেন নিচে এই বিষয়ে সংক্ষিপ্ত ধারণা দেয়া হলো:

১. Category: আমরা পেজ খোলার সময় তিনটি ক্যাটাগরি দিয়েছিলাম হয়তো আপনাদের মনে রয়েছে। আপনার যদি কোন কারনে ক্যাটাগরি প্রদান করতে ভুল হয় তাহলে আপনি প্রথমে ক্যাটাগরি অপশন থেকে ক্যাটাগরি সিলেক্ট করে নিবেন। 

এখানে আপনার সমস্ত প্রকার ক্যাটাগরি পেয়ে যাবেন আপনার বিজনেস রিলেটেড ক্যাটাগরি দিবেন। যেন facebook আপনাদেরকে সঠিক অডিয়েন্সদের কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করতে পারেন। 

২. Add Addresses: বর্তমানে আপনার বিজনেসের মূল ঠিকানা কোথায় অর্থাৎ কোথা থেকে আপনি আপনার বিজনেস পরিচালনা করতেছেন সেই এড্রেস এখানে দিতে পারেন। অবশ্যই মনে রাখবেন আপনার আসল এড্রেস দেয়ার যেন কাস্টমাররা খুব সহজে আপনার ওপর বিশ্বাসযোগ্যতা আনতে পারে। এখানে আপনার স্থায়ী ঠিকানা এবং বর্তমান ঠিকানা আলাদা আলাদা ভাবে দিতে পারবেন।

৩. Add Email Address: অনলাইন মার্কেটিং এ সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যবহৃত জিনিস হলো ইমেল। অনলাইনে কোন কাজ করতে গেলে আপনাকে অবশ্যই ইমেইল প্রয়োজন হয়। আপনি যে ইমেইল ব্যবহার করে আপনার ফেসবুক বিজনেস পেজ পরিচালনা করতে চাচ্ছেন সেই ইমেইল এড্রেস এখানে যুক্ত করে দিবেন অবশ্যই। 

এই ইমেইল এড্রেস প্রদান করার অনেকগুলো সুবিধা রয়েছে। এছাড়াও কোন বিষয়ে যদি কাস্টমারদের কোন জানার থাকে কিংবা কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আপনার ইমেল এড্রেস ব্যবহার করে ও তারা আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে। 

৪. Add Service Area: আপনি যে স্থানকে কেন্দ্র করে আপনার ব্যবসা করতে চাচ্ছেন সেই এলাকাগুলো এখান থেকে যুক্ত করে দিতে পারেন। আপনি যদি কোন একটি নির্দিষ্ট লোকাল ছোট স্থান কে কেন্দ্র করে শুধুমাত্র বিজনেস করতে চান তাহলে শুধুমাত্র একটি লোকাল ছোট এলাকা কে কেন্দ্র করে বিজনেস করতে পারবেন। 

ফেসবুক বিজনেস পেজ ব্যবহার করে ব্যবসা করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন ২০২৩

এখানে চাইলে আপনি পুরো বিশ্বব্যাপীও যুক্ত করে দিতে পারেন। সার্ভিস এরিয়া যুক্ত করার ফলে যদি আপনি এডভার্টাইজিং করতে চান তাহলে এখান থেকে অনেক সুবিধা পেতে পারেন। আপনি চাইলে একটি নির্দিষ্ট জেলা বিভাগকে কেন্দ্র করে বিজনেস করতে পারবেন।

৫. Add work Experience: আপনি যদি অন্য কোথাও পূর্বে চাকরি কিংবা এক্সপেরিয়েন্স অর্জন করে থাকেন তাহলে এখানে যুক্ত করে নিতে পারেন। যেন অডিয়েন্সরা আপনার ওপর খুব সহজেই বিশ্বাস তৈরি করতে পারে। আপনি যেকোনো কোম্পানিকে কিংবা প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এখানে এক্সপেরিয়েন্স সংযুক্ত করে দিতে পারেন। কিন্তু মনে রাখবেন যদি আপনার অডিয়েন্স এর কাছে আপনি বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণ করতে চান তাহলে সঠিক এবং যুক্তিযুক্ত এক্সপেরিয়েন্স যুক্ত করবেন।

৬.  Add School, College বা University:  আপনি যদি কোন ইউনিভার্সিটি কিংবা কলেজে পড়ালেখা করেছেন সেটা আপনার অডিয়েন্স কে জানাতে চান তাহলে এখান থেকে আপনি চাইলে জানাতে পারেন। আপনি যদি এটি প্রদান করতে না চান আপনি না করলেও কোন সমস্যা হবে না। আর আপনি যদি চান যে আপনি কোথা থেকে পড়ালেখা করেছেন কিংবা কতদূর পড়ালেখা করেছেন তাহলে এখান থেকে সবার সামনে শেয়ার করতে পারেন।

৭. Price Range: আপনার প্রোডাক্টগুলো খুব সস্তা, না মাঝামাঝি, না খুবই এক্সপেন্সিভ আপনি চাইলে এখান থেকে যুক্ত করে দিতে পারবেন। যেন অডিয়েন্স রা এসে বুঝতে পারে আপনার প্রোডাক্ট গুলো স্বাভাবিকভাবে কিরকম প্রাইস। এখানে যুক্তিযুক্ত ভাবে আপনার প্রোডাক্টের ভ্যালু যুক্ত করে দিতে পারেন। কিন্তু আপনার প্রোডাক্ট যদি খুব দামি হয় তাহলে কখনোই খুব সস্তা বলে প্রচার করবেন না। নাহলে পরবর্তীতে অডিয়েন্সরা বিশ্বাস হারাতে পারে।

৮. অ্যাড সার্ভিস: আপনি মূলত কি ধরনের সার্ভিস প্রদান করে থাকেন এখান থেকে আপনি চাইলে যোগ করে দিতে পারেন। অবশ্যই মনে রাখবেন এখানে যেই সার্ভিস দিয়েছেন এর বাইরে দিতে পারবেন না এরকম কোন কথা নেই। 

বাট এখান থেকে দিলে ফেসবুক খুব সহজেই বুঝতে পারে যে আপনি কি ধরনের ব্যবসা মূলত করতে যাচ্ছেন। তখন তারা আপনাকে সেই ধরনের অডিয়েন্স দের কাছে বেশি পৌঁছাবে।

৯. ডাইভারসিটি ইনফরমেশন: এই সেকশনটা মূলত আমাদের জন্য না যারা হিজড়া প্রকৃতির কিংবা মাইনোরিটি তাদের জন্য। আমি এই সেকশনটাকে আমি পার্সোনালি খুবই অপছন্দ করি।

১০. open Hours: আপনার বিজনেসটা কত সময় ধরে খোলা থাকে সেটা জানানোর জন্য আপনি এখানে টাইম সেট করে দিতে পারেন। যেন অডিয়েন্স রা বুঝতে পারে যে আপনার বিজনেসটা কখন চালু হয় আর কখন বন্ধ হয়। উদাহরণস্বরূপ আপনি চাইলে সকাল দশটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত দিতে পারেন। 

অর্থাৎ আপনার বিজনেস যত সময় পর্যন্ত চালু থাকবে আপনি তত সময় পর্যন্ত দিতে পারেন। আপনি চাইলে অলওয়েজ ওপেন কিংবা নির্দিষ্ট সময় সেট করে দিতে পারেন।

১১. রিভিউ: কেউ যদি আপনার বিজনেস বা সার্ভিস সম্পর্কে কোন প্রকার রিভিউ দিতে চাও তাহলে আপনি চালু রাখতে পারেন।  তাহলে রিভিউ অপশন থেকে কেউ রিভিউ দিবে আপনার বিজনেস পেজে তা সরাসরি শো করবে। আর আমরা সবাই জানি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় বিজনেস পরিচালনার ক্ষেত্রে। সুতরাং আপনি চাইলে এখান থেকে আপনার বিজনেসের রিভিউ নিতে পারেন। 

আপনি এবাউট ইনফো থেকে এই বিষয়গুলোকে ভালোভাবে এডিট করতে পারবেন যেকোনো সময়। সব সময় মনে রাখবেন যে কখনোই ভুল তথ্য প্রদান করবেন না আপনার অডিয়েন্সদের সামনে। 

আপনার অরিজিনাল ইনফরমেশন গুলো যতদূর সম্ভব প্রদান করার চেষ্টা করবেন এর ফলে অডিয়েন্স খুব সহজেই আপনার উপর বিশ্বাস তৈরি করতে পারবেন। আর কেউ যদি আপনার প্রোডাক্ট ক্রয় করতে চায় তাহলে আপনার প্রোফাইল দেখে হয়তো খুব সহজেই বিশ্বাস করে নিতে পারবে। সমস্ত বিষয়গুলো ইডিট করার সময় মনোযোগ দিয়ে কাজ করবে এবং বারবার চেক করে নিবেন।

ফেসবুক বিজনেস পেজের মূল ইনফরমেশন এডিট করা

আমরা এতক্ষন বেসিক About ইনফরমেশন গুলো কিভাবে এডিট করতে হয় এই বিষয়গুলোকে ভালোভাবে ক্লিয়ার করে নিয়েছি। কিন্তু এখানে আমাদের কয়েকটি জিনিস এখনো শেখা হয়নি যার মধ্যে রয়েছে অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার লিংক যুক্ত করা এবং ওয়েবসাইটের লিংক যুক্ত করা। 

এছাড়াও এর পাশাপাশি বায়ো প্রদান করা তৈরি করা। আপনার ফেসবুকে বিজনেস করার জন্য এই ইনফরমেশন গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো কিভাবে করবেন সেটা চলুন জেনে নেই ভালোভাবে:

১. প্রথমেই আপনার পেজ এর মধ্যে চলে আসবেন । তারপর সেখান থেকে দেখতে পারবেন যে থ্রি ডট মেনু রয়েছে। সেখান থেকে "Edit" অপশন এ ক্লিক করবেন।

ফেসবুক বিজনেস পেজ ব্যবহার করে ব্যবসা করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন ২০২৩

২. একটু নিচে গেলে avatar নামে অপশন পাবেন সেখান থেকে আপনি চাইলে avatars যুক্ত করতে পারবেন।

৩. তারপর আপনি Bio অপশন পাবেন সেখান থেকে আপনার ১০১ ক্যারেক্টারের মধ্যে Bio প্রদান করতে পারেন অর্থাৎ শর্ট ডিসক্রিপশন প্রদান করতে পারেন।

৪. আপনি চাইলে Hobby অপশন থেকে আপনার পছন্দের hobby গুলো যুক্ত করে যেতে পারেন। যেহেতু এটা একটি বিজনেস ফেসবুক সে ক্ষেত্রে Hobby যুক্ত না করাই উচিত।

. তারপরে "Link" নামে একটি অপশন পাবেন সেখান থেকে আপনি চাইলে আপনার ওয়েবসাইটের লিংক যুক্ত করে দিতে পারেন কিংবা আপনার অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক লিংক যুক্ত করতে পারবেন।  

ফেসবুক বিজনেস পেজ ব্যবহার করে ব্যবসা করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন ২০২৩

এখান থেকেই আপনি আপনার অন্যান্য বাকি ইনফরমেশন গুলো এডিট করে নিতে পারবেন। এই ইনফরমেশন গুলো অবশ্যই আপনার বিজনেস রিলেটেড যদি হয় সেটিতে লক্ষ্য রাখবেন। অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করে কোন লেখালেখি করার চেষ্টা করবেন না। আপনার প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিসে যা যা প্রদান করেন তা এখানে যুক্ত করতে পারবেন।

ফেসবুক বিজনেস পেজে কল টু অ্যাকশন বাটন যুক্ত করার নিয়ম

একটি ওয়েবসাইটে কল টু একশন অর্থাৎ cta যুক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি চান এখানে কোন একটি বাটন যোগ করতে সেক্ষেত্রে আপনি খুব সহজে যোগ করতে পারবেন। কিভাবে আপনার ফেসবুক বিজনেস পেজে কল টু অ্যাকশন বাটন যোগ করবেন নিচে দেয়া হল:

১. প্রথমেই আপনার বিজনেস পেজের মধ্যে চলে আসবেন

২. এরপর পেজের থ্রি ডট থ্রি ডট অপশন থেকে পেজ সেটিং এ চলে আসবেন।

ফেসবুক বিজনেস পেজ ব্যবহার করে ব্যবসা করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন ২০২৩

৩. অ্যাড বাটন নামে একটি অপশন দেখতে পারবেন সেখানে ক্লিক করে দিতে হবে।

ফেসবুক বিজনেস পেজ ব্যবহার করে ব্যবসা করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন ২০২৩

৪. তারপর আপনার পছন্দের যেকোনো কল টু একশন বাটন যুক্ত করতে পারেন এবং আপনার লিংক যুক্ত করে দিতে পারেন।

৫. আপনার লিংক প্রদান করার পর সেভ অপশনে ক্লিক করে সবকিছু সেট করে নিবেন।

আপনি চাইলে শুধুমাত্র এই কয়েকটি নিয়ম ফলো করে আপনার ফেসবুক বিজনেস পেজের কল টু অ্যাকশন যুক্ত করে নিতে পারবেন। অবশ্যই মনে রাখবেন আপনার বিজনেস রিলেটেড কল টু একশন বাটন যুক্ত করার চেষ্টা করবেন।

কাস্টমার ও অডিয়েন্স এর সংখ্যা বাড়ানোর উপায়

প্রথমত আপনার এখন যখন বিজনেস পেজ তৈরি করা সম্পূর্ণ হয়ে যাবে তখন আপনাকে প্রথমে আপনার অডিয়েন্স তৈরি করতে হবে। 

সহজ ভাবে বলতে গেলে, অডিয়েন্স বলতে মূলত বুঝানো হয় আপনার অনুগামী বা ফলোয়ার যারা আপনাকে ফলো করে আপনার কথা মান্য করে। অডিয়েন্স জমা করার জন্য প্রথমত আপনাকে আপনার অরিজিনাল facebook অ্যাকাউন্ট থেকে আপনার ফ্রেন্ড কিংবা বিজনেস রিলেটেড বন্ধুদেরকে ইনভাইট জানাতে পারেন।

এছাড়াও বিশেষ কিছু মার্কেটিং ট্যাকটিক্স ব্যবহার করে আপনি আপনার ফেসবুক পেজের ফলোয়ার বাড়াতে পারেন। একটি ফেসবুক বিজনেস পেজে অবশ্যই সব সময় যত বেশি ফলোয়ার থাকে তত বেশি বিক্রয় এবং বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানো যায়। 

কিভাবে আপনার ফেসবুক বিজনেস পেজের ফলোয়ার এবং অডিয়েন্স বৃদ্ধি করবেন তা সম্পর্কে বেশি কিছু টিপস দেয়া হলো।

১. বন্ধুবান্ধবদেরকে ইনভাইট করা: যেহেতু একটি পেজ তৈরি করার পর প্রথমে কোন ফলোয়ার কিংবা লাইক থাকবে না এজন্য আপনার বন্ধুবান্ধবদের সাহায্য নিতে পারেন। কিংবা আপনার যারা সহযোগী থাকবে তাদের কাছ থেকেও সাহায্য নিতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার বন্ধু-বান্ধবদের সাহায্য নিয়ে তাদের প্রোফাইল থেকেও আপনি আপনার পেইজের জন্য অন্যদেরকে ইনভাইট করতে পারেন।

২. পেজকে ভাইরাল করার চেষ্টা করো: বিভিন্ন প্রকার তথ্য কিংবা ভিডিও শেয়ার করে আপনি আপনার ফেসবুক বিজনেস পেজকে প্রমোট করতে পারেন ফ্রিতে। আপনি যে রিলেটেড বিজনেস করবেন সেই রিলেটেড কিছু ইনফরমেটিভ ভিডিও তৈরি করে সেগুলোকে ভাইরাল করার চেষ্টা করতে পারেন। 

যদি একবার আপনার ভিডিও ভাইরাল করতে পারেন তাহলে আপনার ফলোয়ারের সংখ্যা নিজে নিজে বৃদ্ধি পাবে। আর এরকম ধরনের ফলোয়ারা মূলত আপনার মেইন কাস্টমার যারা আপনার প্রোডাক্ট পরবর্তীতে ক্রয় করবে।

৩. বিভিন্ন গ্রুপ এবং কমেন্টে আপনার বিজনেসকে শেয়ার করা: আপনি যে বিষয় নিয়ে বিজনেস করতে চাচ্ছেন সেই রিলেটেড কিছু ফেসবুক গ্রুপে জয়েন হয়ে সেখানে ইনফরমেশন দিতে পারেন। যার ফলে কেউ যদি আপনার ইনফরমেশন পছন্দ করে তাহলে আপনার সাথে যখন কথা বলবে তখন তাকে আপনি আপনার পেইজে লাইক করার অনুরোধ করবেন। 

তখন তিনি আপনার অনুরোধ গ্রহণ করে লাইক করতে পারে। এছাড়াও আপনি কমেন্ট সেকশনে জানাতে পারেন যে আপনি নতুন এর জন্য আপনাকে সহযোগিতা করার জন্য। সহজ ভাবে বলতে গেলে আপনার বিষয় অনুযায়ী আপনি ভালোভাবে বুঝে শুনে facebook গ্রুপগুলোতে মার্কেটিং করা।

৫. অ্যাডভার্টাইজিং করা: যদি আপনার ওপরের কোনো অংশই কাজ না করে তাহলে এখানে সব থেকে একটি ভালো উপায় হল এডভারটাইজিং করা। অ্যাডভার্টাইজিং এর মাধ্যমে আপনি প্রোডাক্ট এবং পেজ একই সাথে দুটি প্রমোট করতে পারবেন। নিচে এই বিষয়ে বিস্তারিত দেয়া হয়েছে সেগুলো পড়ে নিবেন।

আপনি মূলত এই ধরনের ট্রিক্স গুলো ব্যবহার করে আপনি চাইলে আপনার অডিয়েন্সের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারেন।

 অবশ্যই মনে রাখবেন যে ফেসবুক বিশ্বের সব থেকে বড় ব্যবহারিত ওয়েবসাইট এবং শীর্ষ সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ। আপনি খুব সহজেই আপনার টার্গেট অডিয়েন্স পেয়ে যাবেন কিন্তু সে ক্ষেত্রে আপনাকে যথেষ্ট পরিমাণে রিসার্চ করতে হবে এবং বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। আমি চাইলে সমস্ত পদ্ধতি একসাথে অবলম্বন করতে পারেন।

অ্যাডভার্টাইজিং বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য

অ্যাডভার্টাইজিং খুবই পাওয়ারফুল একটি টুলস যার মাধ্যমে ওয়েবসাইট কিংবা ফেসবুক পেজের রিয়াল ফলোয়ার এবং কাস্টমার খুজে পাওয়া সম্ভব। আপনি যদি শূন্য থেকে আপনার বিজনেস গুলো করতে চান সেক্ষেত্রে অ্যাডভার্টাইজিং খুবই ভালো একটি মাধ্যম হতে পারে। 

Advertising করার ফলে দুইটি সুবিধা ভালোভাবে পাওয়া যায়। প্রথমত আপনার ফলোয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। দ্বিতীয়ত আপনার প্রোডাক্ট বেশি সেল হয়। 

ধরে নেন আপনি একটি পোস্ট করলেন এবং সেটাকে এডভারটাইজিং করলেন তখন ওই প্রোডাক্টটা সবার কাছে পৌঁছে যাবে এবং এর পাশাপাশি আপনার পেজও সবার কাছে সহজেই পৌঁছে যাবে। খুব অল্প মূল্যের মধ্যেই বর্তমানে ফেসবুকে অ্যাডভার্টাইজিং করা সম্ভব। 

এক্ষেত্রে ভালোভাবে মনোযোগ সহকারে লক্ষ্য রাখতে হবে আপনার প্রডাক্ট যেন হাই কোয়ালিটি সম্পূর্ণ হয় এবং আপনাদের সার্ভিস যেন ভালো হয়। না হলে অ্যাডভার্টাইজিং এর ক্ষেত্রে অনেক সময় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। 

বিশেষ করে আপনার অ্যাডভার্টাইজিং দিয়ে যখন অন্যরা নেগেটিভ কমেন্ট করে তখন নতুন গ্রাহকদের বিশ্বাস অর্জন করতে সমস্যা হয়। এজন্য প্রথম থেকেই ফেসবুকে অডিয়েন্সদের সাথে ভালো ব্যবহার করা ও কোয়ালিটি সম্পূর্ণ সার্ভিস প্রদান করা। 

এডভার্টাইজিং সিস্টেম টা একটু তুলনামূলক কঠিন একটি বিষয়। আপনি যদি নতুন হয়ে থাকেন আর আপনি যদি এডভার্টাইজের ক্ষেত্রে ভালো হবে জ্ঞান না থাকে তাহলে আপনি হয়তো ভালোভাবে ফলাফল নাও পেতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার করণীয় হবে কোন একটি এজেন্সির কাছ থেকে কাজগুলো করিয়ে নিয়ে কিংবা সাহায্য নিয়ে। 

এই বিষয়ে আমাদের এজেন্সি ভালো হবে সার্ভিস প্রদান করে আসতেছি। আপনার যদি ফেসবুক বিজনেস এর জন্য বুস্টিং কিংবা অ্যাডভার্টাইজিং এর প্রয়োজন হয় তাহলে আমাদের এজেন্সির সাথে আপনি যোগাযোগ করতে পারেন। আমরা আপনাকে সর্বোচ্চ রেজাল্ট বয়ে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। এক্ষেত্রে আপনি চাইলে অন্য কারো সহযোগিতা নিতে পারেন। আর আপনি যদি নিজেই এডভেটাইজিং করতে চান সেক্ষেত্রে আরো ভালো হবে।

সর্বশেষে বলতে চাইছে ফেসবুকে প্রায় 280 কোটির মধ্যে আপনি কমপক্ষে ১-২ লাখ এমন ট্রাফিক পাবেন যা আপনার বিজনেস রিলেটেড এর সাথে সম্পর্কিত। সুতরাং আপনাকে শুধুমাত্র ভালো হবে কাজ চালিয়ে যেতে হবে এবং ধৈর্য ধরে থাকতে হবে। আর অলওয়েজ অডিয়েন্স এর সাথে ভালো সম্পর্ক রাখতে হবে।  

নিয়মিত তথ্য ও informative পোস্ট করা

যখন আপনি একটি ফেসবুকে বিজনেস পেজ ক্রিয়েট করে ফেলবেন। তখন আপনার কাজ হবে নিয়মিত ইনফরমেটিভ তথ্য শেয়ার করা আপনার বিজনেস রিলেটেড। মনে রাখবেন প্রথম দিকে যদি আপনার অডিয়েন্স কিংবা রিচ নাও থাকে সেক্ষেত্রে আপনাকে নিয়মিত পোস্ট করা চালিয়ে যেতে হবে। 

এছাড়াও এর পাশাপাশি ভিডিও অবশ্যই পাবলিশ করবেন এবং আপনার প্রোডাক্ট রিলেটেড ছোট ছোট রিল তৈরি করে ফেসবুকে শেয়ার করবেন। কেননা একটি পোস্ট ভাইরাল করা খুব সহজ কাজ নয় কিন্তু সেক্ষেত্রের ভিডিও ও রিল খুব সহজেই ভাইরাল করা সম্ভব। 

নিয়মিত এরকম যখন আপনি কাজ করবেন তখন অনেক অডিয়েন্স আপনার সাথে ভালোভাবে কানেক্ট হয়ে যাবে। এর পাশাপাশি আপনি বিভিন্ন আপনার বিজনেস রিলেটেড গ্রুপগুলোতে নিয়মিত পোস্ট শেয়ার করবেন এবং সেখান থেকে আপনার অডিয়েন্স কালেক্ট করা শুরু করবেন। 

একই পোস্ট বারবার শেয়ার করবেন না প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য এবং প্রোডাক্ট শেয়ার করার চেষ্টা করবেন। যখন প্রোডাক্ট শেয়ার করবেন তখন অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন আপনার প্রোডাক্ট এর ভালো দিকগুলো সবার সামনে উপস্থাপন করা। 

অর্থাৎ আপনার প্রোডাক্ট ক্রয় করলে তারা কি কি ধরনের সুবিধা পেতে পারে এ বিষয়গুলো সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করবেন। এক্ষেত্রে ফেসবুক মার্কেটিং এর পদ্ধতি গুলো আরো ভালোভাবে ফলো করলে বেশি কাস্টমার বয়ে আনা সম্ভব। খুব শীঘ্রই কিভাবে ফেসবুক মার্কেটিং করা হয় এই বিষয়ে একটি বিষয় আর্টিকেল দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। যদি ফেসবুক মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকবেন।

বিজনেস পেজকে মনিটরিং এবং অপটিমাইজ করা

যখন আপনার ফেসবুক বিজনেস পেজে নিয়মিত কনটেন্ট পাবলিশ করবেন এবং ভিডিও এবং পাবলিশ করবেন। তখন অবশ্যই আপনার কনটেন্ট গুলোকে মনিটরিং করা এবং অপটিমাইজ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আপনার কোন ধরনের প্রোডাক্ট এবং পোস্টগুলো বেশি ট্রেন্ডিং এবং ভালো কাজ করতেছে সেই ধরনের প্রোডাক্ট গুলো নিয়ে বেশি কাজ করা। নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে যে আপনার কোন মার্কেটিং পদ্ধতি মাধ্যমে আপনার বেশি অডিয়েন্স জোগাড় করতে পারছেন। যেই পদ্ধতি ভাল কাজ করবে সেই পদ্ধতিকে আরো অপ্টিমাইজ করতে হবে। অর্থাৎ সেই পদ্ধতিতে আরো নতুন নতুন টেকনিক আনতে হবে।

উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি শর্ট ভিডিওর মাধ্যমে বেশি অডিয়েন্স এবং কাস্টমার পান সে ক্ষেত্রে সেই পদ্ধতিতে বেশি মনোযোগী হতে হবে। কিভাবে আরো শর্ট ভিডিও কে এট্রাক্টিভ বানানো যায়, কিভাবে আর ভালোভাবে প্রোডাক্ট শেয়ার করা যায়, প্রোডাক্ট এর গুনাবলী গুলো কিভাবে আরো সবার কাছে তুলে ধরা যায় আর অন্যান্য সমস্ত বিষয়গুলো সহজে তুলে ধরবেন। যেন সবাই আপনার দিকে আরো বেশি আকৃষ্ট হয়। ঠিক একই ভাবে আপনার যে পদ্ধতি ভাল কাজ করবে সেই পদ্ধতিটাকে বেশি অবলম্বন করা। 

আরেকটি বিষয় সবসময় মাথায় রাখবেন যে, আপনি যখন নতুন ভাবে মার্কেটিং করতে যাবেন তখন আপনার অনেকগুলো ভুলের সম্মুখীন হতে হবে এবং হয়তো নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও পড়তে পারেন। তখন সেখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের ভুল যদি না হয় সেই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। 

সব সময় মনে রাখবেন আপনার দুর্বলতা যেন অন্য কেউ কখনোই জানতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আর আমি বারবার একটি কথা মনে করিয়ে দিতে চাইছি যে আপনার সার্ভিস বা প্রোডাক্ট যেন হাই কোয়ালিটি সম্পূর্ণ হয়, না হলে বর্তমান মার্কেটে টিকে থাকা খুবই মুশকিল। 

কাস্টমারদের সাথে সঠিকভাবে রিলেশন বজায় রাখা

মূলত আপনার ইনকাম এবং আপনার মূল উদ্দেশ্য রূপান্তর হবে কাস্টমারদের কে দিয়ে। এইজন্য কখনোই কাস্টমারদের সাথে এমন কোন আচরণ করবেন না যাতে তারা আপনার উপর অসুন্তুষ্ট হয়। 

এক্ষেত্রে যদি তাদের ভুল থাকে সেক্ষেত্র আপনারা মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করবেন এবং তাদের সাথে সম্পর্ক ভালো রাখবেন। চেষ্টা করবেন তারা যেন আপনার ব্রান্ডের প্রতি সব সময় ভালো মনোভাব রাখে। কাস্টমারদেরকে সব সময় যথাযথ তথ্য এবং ইনফরমেশন প্রদান করা। 

কেউ যদি আপনার কাছ থেকে কোন ইনফরমেশন চায় তাহলে কখনোই তাদেরকে ইগনোর করবেন না। কারণ তারাই আপনার ভবিষ্যৎ কাস্টমার। কাস্টমারদের সাথে সঠিকভাবে রিলেশন বজায় রাখার জন্য দুইটি ভালো পদ্ধতি রয়েছে।

১. কমেন্টে রিপ্লাই দেওয়া: ফেসবুক বিজনেস পেজ ফেসবুক গ্রুপ ভিডিও এডভার্টাইজিং এর অন্যান্য যতগুলো সিস্টেম রয়েছে সবগুলোতে অডিয়েন্সদের কমেন্টের রিপ্লাই দেয়া। কখনো কাউকে ছোট করে দেখবেন না সব সময় যথাযথ কমেন্ট করার চেষ্টা করবেন। 

কেউ যদি আপনার বিপক্ষে গিয়ে কথা বলে তবুও তার সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করার চেষ্টা করবেন। সহজ ভাবে বলতে গেলে সব সময় যে কোন প্রশ্নের যেকোন ইনফরমেশন এর জন্য কেউ যদি আপনাকে প্রশ্ন করে কমেন্টের মাধ্যমে নির্বিধায় উত্তর দিবেন।

২. মেসেজের দ্রুত রিপ্লাই দেওয়া: অডিয়েন্সদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখার এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি উপায়। কেউ যদি আপনাকে কোন মেসেজ করে তাহলে সাথে সাথে রিপ্লাই দেয়ার চেষ্টা করবেন। আপনি চাইলে ফেসবুক পেজের মধ্যে এর জন্য অটোমিশন (অটোমেটিক প্রিমেড উত্তর দেয়া) সিস্টেম চালু রাখতে পারেন। 

ধরে নাম কেউ আপনাকে একটি সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন করল তখন সেটার উত্তর কি হবে আপনি সেট করে রাখতে পারেন। তাহলে যে কেউ প্রশ্ন করার সাথে সাথে উত্তর পেয়ে যাবে যার ফলে তাদের মনোভাব আপনার বিজনেসের প্রতি আরো ভালো হবে। 

আপনার যদি জানতে চান যে কিভাবে অটোমেশন কমেন্ট রিপ্লাই দেয়া যায় তাহলে কমেন্ট করতে পারেন ইনশাল্লাহ পরবর্তীতে এই বিষয়ে একটি বিষয় আর্টিকেল দেয়ার চেষ্টা করব তাহলে। 

আপনি ওপরের দুইটি পদ্ধতি অবলম্বন করে সব সময় আপনার অডিয়েন্স দের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে পারবেন। অবশ্য মনে রাখবেন আপনার বিজনেস কিন্তু আপনার অডিয়েন্স এবং কাস্টমার এদেরকেই দিয়ে চলবে। 

সুতরাং তাদের সাথে কখনোই খারাপ আচরণ করার চেষ্টা করবেন না। পরিশেষে বলতে চাই যে, সময় নিয়ে সঠিক পদ্ধতি এবং সঠিক তথ্য নিয়ে বিজনেস করলে কখনোই অডিয়েন্সদের সাথে সম্পর্ক খারাপ হয় না এক্ষেত্রে কিছু ব্যতিক্রম হতেই পারে। 

কারণ আপনার বিজনেস নিয়ে সবাই সন্তুষ্ট থাকবে না, কেউ কেউ আপনার বিপক্ষে গিয়ে আপনার বদনাম করার চেষ্টাও করতে পারে। এক্ষেত্রে করণীয় কি নিচে এ বিষয়ে একটু ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব। 

ফেসবুক বিজনেস পেজে ব্যবসা করার সময় কেউ খারাপ মন্তব্য করলে করনীয় কি?

আপনি যখন বিজনেস করতে যাবেন তখন আপনার বিজনেসের সবাই খুশি হবে না, আপনার বিপক্ষে কথা বলার অনেক লোক তৈরি হবে। সে ক্ষেত্রে করনীয় কি? 

যখন আপনি একটি বিজনেস পেজ তৈরি করবেন এবং আপনার প্রোডাক্ট প্রমোট করবেন। তখন অবশ্যই চেষ্টা করবেন অডিয়েন্সদের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখা যায় আমি পূর্বে বললাম। কিন্তু এই ক্ষেত্রে অনেকজন রয়েছে যারা আপনার সব সময় বিরুদ্ধে গিয়ে আপনার অপপ্রচার করার চেষ্টা করবে তাদেরকে প্রতিরোধ করার জন্য নিজের পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করতে পারেন।

 ১. ইগনোর করা: যদি কেউ হুটহাট কোন কথা বলে যা আপনার বিজনেসের সাথে সম্পর্কিত নয় কিংবা বাস্তবে তার কোন প্রমাণ নেই তাহলে তাদের কথাগুলোকে ইগনোর করে চলা অর্থাৎ অযথা কোন রিপ্লাই না দেয়া। এই ক্ষেত্রে যদি কেউ সত্যিই আপনার কোন ভুল ধরেই দেয় তাহলে সেখান থেকে শিক্ষা নেয়া এবং আপনার ভুল স্বীকার করা এর পাশাপাশি যুক্তিসঙ্গত সুন্দরভাবে রিপ্লাই দেয়া।

 ২. যুক্তিসংগত তথ্য ও উপাত্ত প্রদান করা: যদি আপনি পোষ্টের মধ্যে কোন ইনফরমেশন কিংবা ভিডিওর মধ্যে ইনফরমেশন যুক্ত করেন তাহলে এর সোর্স প্রদান করা। যেন আপনার বিরুদ্ধে কেউ কথা না বলতে পারে। এছাড়াও আপনার অডিয়েন্স যেন আপনার উপর সবসময় বিশ্বাস বজায় রাখতে পারে।

 ৩. ব্লক করে দেয়া: কেউ যদি আপনার বিরুদ্ধে সব সময় বাজে মন্তব্য করে সেক্ষেত্রে তাকে ব্লক করে দেয়া উচিত। অনেকজন রয়েছে যারা কারণে অকারনে সব সময় বিজনেস কিংবা প্রোডাক্ট নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে। তাদেরকে আপনার ব্রান্ড থেকে দূরে সরিয়ে আনা অত্যন্ত প্রয়োজন। 

৪. সার্ভিস কিংবা প্রোডাক্ট এর কোয়ালিটি মেইনটেইন করা: একটি বিজনেসের প্রতি যখন মানুষের খারাপ ধারণা পোষণ করার প্রধান কারণ হল সার্ভিস বা প্রোডাক্ট। আপনার সার্ভিস এবং প্রোডাক্ট যদি হাই কোয়ালিটি সম্পন্ন হয় তাহলে যে কেউ আপনার বিরুদ্ধে যতই কথাগুলো কেন, দিনশেষে আপনি বিজয়ী হবেন। কেউ যদি আপনার সার্ভিস বা প্রডাক্ট সম্পর্কে প্রশ্ন তুলতে না পারে এই বিষয়ে সব সময় সতর্ক থাকবেন।

 ৫. সবার মতামত প্রকাশ করাতে দেয়া: একটা জিনিস মাথায় রাখবেন কখনোই কারো মতামতকে নিয়ে খেলা খেলবেন না। সবার মতামতকে গ্রহণযোগ্য মনে করে সবার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। যখন আপনি আপনার অডিয়েন্সের সাথে সম্পর্ক ভালো বজায় রাখবেন তখন আপনার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে আপনার অডিয়েন্স রাই তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে। 

 এছাড়া আরো কয়েকটি উপায় রয়েছে যেগুলো আপনারা অবলম্বন করে হেটার্সদের কাছ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন। চেষ্টা করবেন সবার সাথে যথাসম্ভব সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য। আপনি যদি নম্র ও ভদ্র ভাষায় সবার সাথে কথা বলতে পারেন। তাহলে দিনশেষে আপনার হেটাররাই একদিন আপনার ফলোয়ার হয়ে যাবে। 

ফেসবুক পেজ বিজনেসের পরিসর বৃদ্ধি করার কয়েকটি দুর্দান্ত উপায়

আপনার ফেসবুক পেজে যদি কোন এক সময় ভালো পরিমানে অডিয়েন্স এবং কাস্টমার আসা শুরু করে সেক্ষেত্রে আপনার একটি ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করে নিতে পারেন। ফেসবুক বিজনেস পেজে পাশাপাশি আপনার যাবতীয় ইনফরমেশন তথ্য এবং প্রোডাক্ট গুলো সেই গ্রুপের মধ্যে আমি আপনি প্রচার করতে পারবেন। 

আর একটি গ্রুপে একবার তাদেরকে যুক্ত করতে পারলে তারা যতদিন পর্যন্ত আপনার সাথে সম্পর্ক রাখবে ততদিনে আপনার প্রোডাক্ট ক্রয় করবে। এর পাশাপাশি আপনি চাইলে ফেসবুকের কমার্স থেকে প্রোডাক্ট যুক্ত করে নিতে পারবেন। 

ফেসবুক গ্রুপ থেকে খুব সহজেই একবারই আপনি সবার কাছে নোটিফিকেশন সেন্ড করতে পারবেন। যখন কোন প্রোডাক্টের আপডেট আসবে কিংবা নতুন কোন প্রোডাক্ট আসবে। 

আপনার ফেসবুক বিজনেস পেজের পাশাপাশি আপনি চাইলে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট কিংবা এজেন্সিও তৈরি করে নিতে পারেন। সেখান থেকে আপনার সার্ভিস কিংবা প্রোডাক্ট সেল করতে পারবেন। বর্তমানে যেহেতু ই-কমার্স ওয়েবসাইটের মাধ্যমে খুব ভালো পরিমাণে প্রোডাক্ট সেল করা যা।য় সেক্ষেত্রে আপনি পরবর্তীতে আপনার একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখান থেকেও আপনারা প্রোডাক্ট সেল করতে পারবেন। 

ই-কমার্স সাইট বানাতে চাইলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

ইউটিউবে আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে একটি চ্যানেল তৈরি করা। যেখানে আপনার প্রোডাক্টগুলো সম্পর্কে সবাইকে জানাতে পারেন এবং তা কিভাবে ব্যবহার করতে হয় এবং এর বৈশিষ্ট্য গুলো সবার কাছে প্রচার করতে পারেন।

 Youtube এ থেকে মূলত একটি বিগ অ্যামাউন্টের কাস্টমার কালেক্ট করা সম্ভব। আর আপনি যদি একবার youtube ভিডিওকে ভাইরাল করতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনার প্রোডাক্টের আরো বড় একটি বাজার পেতে পারেন।

এছাড়াও আরো আপনি অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াগুলো তো আপনার প্রোডাক্ট পরবর্তীতে শেয়ার করতে পারেন। কিন্তু মনে রাখবেন প্রথমে এক জায়গায় সেটেল হন তারপর অন্যান্য জায়গায়। 

প্রথমেই যদি আপনি সব স্থানে আপনার প্রোডাক্ট শেয়ার করতে যান এবং মার্কেটিং করতে চান সেক্ষেত্রে আপনার বিজনেস লস খাবে। কিন্তু আপনি যদি একটি বড়সড়ো বিজনেস করতে চান এবং আপনার যথেষ্ট পরিমাণের কর্মী থাকে তাহলে চেষ্টা করে দেখতে পারেন। 

কিন্তু আমার পার্সোনাল মতামত থাকবে আপনি যেকোনো একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে আপনার ব্যবসা শুরু করুন তারপর সমস্ত স্থানে এটার ব্যাপ্তি ঘটাবেন। আর সোশ্যাল মিডিয়া এবং সম্পূর্ণ অনলাইন জগতের মধ্যে ফেসবুক বিজনেস পেজের বিকল্প নেই বললেই চলে। 

ফেসবুক বিজনেস পেজের মাধ্যমে বিজনেস সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যফেসবুক বিজনেস পেজ ব্যবহার করে ব্যবসা করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন ২০২৩

আমরা প্রাথমিকভাবে কিভাবে ফেসবুক ব্যবহার করে বিজনেস তৈরি করতে পারি সে বিষয়ে কিছুটা হলেও অবগত হয়েছি। কিন্তু এখন কথা হচ্ছে অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া কিন্তু ওয়েবসাইট বাদ দিয়ে কেন আমরা ফেসবুক দিয়ে আমাদের বিজনেস শুরু করব। এই বিষয়টা জানার আগে চলুন আমরা অনেকগুলো রিপোর্ট এবং সম্পর্কে অবগত হওয়ার চেষ্টা করি।

১. Statista এর তথ্য অনুসারে পৃথিবীতে 2021 সালে ফেসবুক ব্যবহারকারী সংখ্যা ছিল প্রায় ২.৮ বিলিয়ন অর্থাৎ ২৮০ কোটি মানুষ। আর এগুলো ছিল একটিভ ইউজার। 

২. hubspot এর রিপোর্ট অনুসারে একটি ফেসবুক অবস্থিত বিজনেসগুলোর ওয়েবসাইটে একটি সাধারণ ওয়েবসাইটের থেকে 5 গুণ বেশি ট্রাফিক সোশ্যাল মিডিয়া থেকে যায়। যার মধ্যে সর্বোচ্চ ট্রাফিক পৌঁছায় ফেসবুক থেকে। 

৩. সোশ্যাল মিডিয়া এক্সামিনারের মতে Facebook video এর দ্বারা একটি প্রোডাক্টকে ১৩৫% পর্যন্ত বেশি পরিমাণ অর্গানিকলি সেল করা সম্ভব। আর ভিডিও পোস্ট এর মাধ্যমে প্রোডাক্ট প্রমোশন ফ্রিতে করার জন্য ফেসবুক এবং ইউটিউবকে সেরা বলে অভিহিত করা হয়। আরো তুলে ধরা হয় যে, ফটো পোষ্টের তুলনায় ভিডিও পোস্টে বেশি কাস্টমার পাওয়া সম্ভব। 

৪. স্প্রাউট সোশ্যাল এর একটি জরিপ এর মধ্যে দেখা গেছে যে 90% মানুষ একটি ব্র্যান্ড বা ব্যবসার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে Facebook ব্যবহার করেন। আরেকটি জরিপে marketing Dive ঠিক একই ধরনের তথ্য প্রদান করে। 

৫. হুটসুইট এর তথ্য অনুসারে, facebook পেজের মধ্যে সর্বাধিক ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য ফেসবুকে পোস্ট করার সর্বোত্তম সময় হল সপ্তাহের ছুটির দিনগুলোর সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। এক্ষেত্রে পশ্চিমা দেশগুলোর ক্ষেত্রে ছুটির দিন দুপুর ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত। 

৬. একই Hootsuite রিপোর্ট এর মধ্যে দেখা গিয়েছে যে ভিডিও কনটেন্ট ফেসবুকে অন্যান্য ধরণের কনটেন্ট এর তুলনায় 10 গুণ বেশি এনগেজমেন্ট পায়।

৭. ২০২০ সালের একটি প্রতিবেদনে CNBC ও Forbes জানিয়েছিল ফেসবুক তাদের বিজ্ঞাপন অর্থাৎ এডভার্টাইজিং এর মাধ্যমে প্রায় ২১.৪৭ বিলিয়ন ডলার আয় করেছিল। 

৮. দ্য ম্যানিফেস্ট দ্বারা পরিচালিত একটি জরিপের মধ্যে দেখা যায় যে 86% ছোট ব্যবসা ফেসবুককে তাদের মার্কেটিং প্রচেষ্টার জন্য সবচেয়ে কার্যকর সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হিসাবে বিবেচনা করে।

৯. সোশ্যাল মিডিয়া টুডে জানিয়েছে যে ২০২৮ সাল নাগাদ ফেসবুকে প্রায় নতুন 10000 বিজনেস পর্যন্ত তৈরি হতে পারে। শুধুমাত্র দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে। আর এই সংখ্যা সম্পূর্ণ বিশ্বে প্রায় ১০ লক্ষ বিজনেস পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে।

উপরে তথ্যগুলো আমরা বিশ্লেষণ করলে আরো বুঝতে পারি যে ভবিষ্যতে ফেসবুকে ব্যবহার করে বিজনেস তৈরি করা আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। যদি আপনি সত্যিই বিজনেস করতে চান তাহলে এই মুহূর্তেই বিজনেস শুরু করে দিবেন। কারণ আপনি যত দেরি করবেন আপনার কম্পিটিশন তাতে বৃদ্ধি পাবে। 

প্রথম দিকে ফ্রিতে প্রমোশন করা শুরু করেন পরবর্তীতে একটি ভালো পর্যায়ে চলে গেলে প্রমোশন থেকে শুরু করে অন্যান্য সকল প্রকার মার্কেটিং শুরু করে দিবেন। এবং নিজের ব্র্যান্ডকে আরো প্রতিষ্ঠিত করার জন্য অন্যান্য মাধ্যমগুলো ব্যবহার করবেন। কিন্তু প্রাথমিকভাবে ফেসবুক ব্যবহার করে আপনার প্রাথমিক সফলতা গুলো অর্জন করতে পারেন। 

ফেসবুক বিজনেস পেজের মাধ্যমে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ

১. ফেসবুকে যখন অ্যাডভারটাইজিং করতে যাবেন তখন অনেকগুলো ক্যাম্পেইন তৈরি করে নিবেন এবং সেগুলোর মধ্যে A/B testing করে নিবেন। A/B testing করার পর যেই ক্যাম্পেইন গুলো উপযুক্ত সেগুলোকে নিয়ে অ্যাডভার্টাইজিং শুরু করতে পারেন। অবশ্যই এডভারটাইজিং করার সময় কনটেন্টের দিকে বেশি নজর দিবেন। 

২. ফেসবুক বিজনেস পেজের মধ্যে অবশ্যই অটোমেশন চ্যাটবট সেট আপ করতে ভুলবেন না। অটমিশন চ্যাটবট ব্যবহারের ফলে আপনার রেসপন্স টাইম কমে যাবে এবং আপনি প্রাথমিক কোশ্চেন গুলোর জন্য অটোমেটিক আনসার রেখে দিতে পারেন। যার ফলে আপনাকে অতিরিক্ত সময়ের ব্যয় করতে হবে না। কেউ যদি আপনাকে কোন ছোট কোন প্রশ্ন করে আর আপনি যদি সেট আপ করে রাখেন তাহলে অটোমেশন তাদেরকে অটোমেটিক্যালি রিপ্লাই দিয়ে দিবে।

৩. অবশ্যই ভিজুয়াল ইমেজ এর দিকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। ফেসবুক বিজনেস পেজের মধ্যে ইমেজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা পালন করে। ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য অবশ্যই কাস্টম গ্রাফিক্স এবং ফটোগ্রাফির দিকে মনোযোগ দিবেন। আপনার কম্পিটিটরের তুলনায় কোয়ালিটি সম্পূর্ণ এবং আকর্ষণীয় ইমেজ ব্যবহার করবেন। এর ফলে  কাস্টমারদের কে বেশি আকৃষ্ট করতে পারবেন।

৪. কাস্টমারের সমস্যা সমাধানের দিকে বেশি মনোযোগী হতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনে ফেসবুক মেসেঞ্জার ব্যবহার করে তাদের সাথে লাইফ সাপোর্টে কথা বলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের কাস্টমার সার্ভিস দিতে হবে। যার ফলে গ্রাহক সাটিসফিকশন বৃদ্ধি পাবে।

৫. ফেসবুকের মধ্যে নিয়মিত বিজনেস রিলেটেড বিষয়গুলো নিয়ে ভিডিও পাবলিশ করতে হবে এবং আপনার প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিসের জন্য নিত্যনতুন আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি করতে হবে। 

৬. সপ্তাহে কিংবা মাসে একবার হলেও লাইভ ভিডিওতে অংশগ্রহণ করা। এর ফলে যে কেউ আপনাকে রিয়েল টাইমে যেকোন কোশ্চেন করতে পারে এবং তাদের সামনে আপনি সরাসরি প্রোডাক্ট প্রমোশন করতে পারবেন। আর লাইভ ভিডিওর মাধ্যমে কাস্টমারের যে কোন সমস্যা ও সমাধান করা সম্ভব।

৭. আপনার ফেসবুক বিজনেস পেজের প্রোফাইল পিকচারের সাইজ 180x180 pixels হওয়া উচিত। আর কভার ফটো এর ক্ষেত্রে 820x312 pixels হওয়া উচিত যা মোবাইল এবং ল্যাপটপ এর ক্ষেত্রে ই প্রযোজ্য।

৮. বিজনেস রিলেটেড ফেসবুক গ্রুপগুলোতে অংশগ্রহণ করা উচিত। এছাড়াও ফেসবুক গ্রুপগুলোতে প্রোডাক্ট প্রমোশন থেকে শুরু করে কাস্টমার কে আকৃষ্ট করা যায় হাই কোয়ালিটি কনটেন্ট প্রদান করা উচিত। 

৯. ফেসবুক বিজনেস পেজের পারফরম্যান্স নিয়মিত চেক করা উচিত এবং কোন ধরনের আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে মূলত তাদেরকে প্রাধান্য দিয়ে মার্কেটিং কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

১০. একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী facebook বিজনেস পেজের  ফিচার পোস্টের একটি ভিডিওর মাধ্যমে প্রোডাক্টের সার্বিক বিশ্লেষনের মাধ্যমে প্রোডাক্ট বিক্রির সম্ভাবনা ২০% পর্যন্ত বাড়িয়ে নেয়া যায়। 

১১. ফেসবুক বিজনেস এবাউট সেকশনে শুধুমাত্র বেসিক ইনফরমেশন এর পাশাপাশি ইউনিক কিছু ট্রাই করুন এবং একটি ব্র্যান্ড ভয়েস এবং স্টোরি তৈরি করার চেষ্টা করুন।

১২. যদি নিয়মিত আপনার ট্রাফিক আসে তাহলে সেক্ষেত্রে এডভারটাইজিং ব্যবহার না করে অর্গানিকভাবে ট্রাফিক নেয়ার চেষ্টা করতে হবে। 

১৩. একটি লং টাইম বিজনেস প্ল্যান তৈরি করুন এর ফলে ভবিষ্যতে আপনার বিজনেসকে আরো বড় এবং শক্তিশালী রূপান্তর করতে পারবেন।

১৪. বিশেষ দিবসগুলোতে আপনি ছাড় দিতে পারেন এর ফলে আপনার বিক্রয় হার বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু খুব বেশি পরিমাণে ছাড় দিতে যাবেন না যার ফলে যেন আপনার লস হয়।

১৫. এক্সপার্ট দের কাছ থেকে সবসময় সাহায্য গ্রহণ করবেন। এর ফলে আপনার সাথে তাদের একটি সম্পর্ক তৈরি হবে। যার ফলে ভবিষ্যতে তাদের দিয়েও আপনি মার্কেটিং করিয়ে নিতে পারবেন। প্রয়োজনে কলাবেরেশন করতে পারেন

ফেসবুক বিজনেস পেজ থেকে ইনকাম করার উপায়

আমাদের মধ্যে অনেকজন রয়েছে যারা ফেসবুকে বিজনেসের পাশাপাশি একটি ইনকামের জন্য ভিন্ন উপায় খুঁজতে চায়। হ্যাঁ আপনি চাইলে ফেসবুক থেকেও বিজনেস পাশাপাশি ইনকাম করতে পারবেন আলাদাভাবে। 

কিন্তু এখানে অনেক সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে যা আমাদেরকে প্রথমেই চিহ্নিত করতে হবে। তারপর ডিসাইড করতে হবে আপনি ফেসবুক থেকে ইনকাম করতে চান কিনা বা কিভাবে ফেসবুক বিজনেস পেজ থেকে ইনকাম করা যেতে পারে।

সুবিধা গুলো

১. ইনকামের একটি বিকল্প অপশন থেকে যার ফলে বিজনেস খুব একটা ভালো পজিশনে না গেলে ও ইনকামের অন্য একটি অপশন থাকে।

২. ফেসবুকে যে ভিডিও কিংবা রিলস পাবলিশ করা হয় সেখান থেকে ইনকাম করা সম্ভব কোন প্রকার আলাদা খাটনি না করে।

৩. ফেসবুকে ইনকাম তুলনামূলক স্টাবল অর্থাৎ প্যাসিভ করা সম্ভব। যার ফলে কোনদিন বিজনেস বন্ধ হয়ে গেলেও ইনকামের একটি আলাদা উপায় থেকে যাবে।

এই সুবিধা গুলো ছাড়াও কয়েকটি সুবিধা রয়েছে যেগুলো খুব একটা ফেক্ট করে না।

ফেসবুক বিজনেস পেজে আলাদা ভাবে ইনকামের অসুবিধা 

ফেসবুক বিজনেস এই যে আলাদা হবে ইনকামের অনেক অনেক অসুবিধা রয়েছে। কয়েকটি প্রধান অসুবিধাগুলো জেনে নেই:

১. ফেসবুক যেহেতু অডিয়েন্সদের অ্যালগরিদম এর উপর অ্যাডভারটাইসিং দেখায় সেহেতু আপনার অডিয়েন্সের বেশিরভাগ অংশ যখন আপনার ভিডিও  দেখবে তখন অন্য ব্রান্ডের প্রতি আকর্ষিত হতে পারে।

২. প্রোডাক্ট সেল কমে যেতে পারে

৩. রিপুটেশন কমে যাবে এবং বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে

৪. নানা ধরনের বিতর্কের জন্ম দিতে পারে

৫. ধীরে ধীরে অডিয়েন্স এর সংখ্যা কমে যাবে 

এছাড়াও অনেক অনেক ধরনের বড় বড় অসুবিধা হবে। সব থেকে বড় অসুবিধাটা হলো আপনার ব্র্যান্ড থেকে অন্য একটি ব্রান্ডে আপনার অডিয়েন্সরা টান্সফার হবে। কারণ এডভার্টাইজিং সেক্টর টা এমন সিস্টেমে তৈরি করা হয়েছে ফেসবুকের জানো অডিয়েন্সরা তাদের পছন্দমত অ্যাড দেখতে পারে। 

সুতরাং তারা যদি আপনার ব্রান্ডের প্রীতি শ্রদ্ধাশীল হয় তাহলে তাদেরকে সেই রিলেটেড অর্থাৎ আপনার কম্পিটিটরের এ্যাডগুলো দেখাবে তখন তাদের প্রতি আপনার অডিয়েন্স রা তাদের প্রতে আকৃষ্ট হতে পারে। আপনি যদি একটি বিজনেস করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার বিজনেসের দিকে বেশি মনোযোগী হতে হবে, ইনকামের দিকে নয়। 

ফেসবুকে বিজনেস পেজের জন্য নাম কোথায় পাওয়া যাবে

অনেক শুনে প্রশ্ন করেন যে একটি ফেসবুক পেজের কিংবা ওয়েবসাইটের নাম কি দেয়া উচিত। এর উত্তর খুবই স্বাভাবিক আপনি যে রিলেটেড বিষয় নিয়ে কাজ করেন এবং যে বিষয় নিয়ে বিজনেস করার ইচ্ছা রয়েছে সেই রিলেটেড নাম দেয়ার চেষ্টা করবেন। 

আপনার ইচ্ছামত নাম দিতে পারেন সে ক্ষেত্রে কোন বাধা নেই। কিন্তু নাম দেয়া ক্ষেত্রে অবশ্যই মনে রাখবেন আপনার বিজনেস এর নামটা যেন প্রফেশনাল দেখায় এবং ভবিষ্যতে যেন একটি বড় প্রতিষ্ঠানের রূপ দেওয়া যায়। আপনি যদি কোন ভালো নাম খুঁজে না পান সে ক্ষেত্রে আপনি নিচে ট্রিকটি অনুসরণ করতে পারেন

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে নাম সিলেক্ট করা

বর্তমানে অনেক ধরনের বিসনেস নাম জেনারেটর নামে অনেকগুলো টুলস পাওয়া যায় যেগুলোর মাধ্যমে ইউনিক সব বিজনেস নাম পাওয়া যায়। আপনি অনলাইনে সার্চ করলেই দেখতে পাবেন এরকম হাজার হাজার টুলস রয়েছে। যেখান থেকে আপনি চাইলে আপনার পছন্দমত যেকোনো একটি নাম সিলেক্ট করতে পারেন। 

এছাড়াও চ্যাট জিপিটি কিংবা গুগল বার্ড ব্যবহার করেও আপনার বিজনেসের নাম জেনারেট করতে পারেন। অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন আপনার ইন্ডাস্ট্রির সাথে মিল রেখে নাম সিলেক্ট করার। আপনি যখন google বার্ড কিংবা চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করবেন তখন শুধুমাত্র ভালো দেখে proompt ব্যবহার করলেই আপনি অসাধারণ সব ইউনিক ইউনিক নেম খুঁজে পাবেন। যা আপনি পছন্দ মতো ব্যবহার করতে পারেন। 

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর

ফেসবুক বিজনেস পেজ কী?

ফেসবুকের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম।

ফেসবুক বিজনেস পেজ কেন তৈরি করবেন?

ব্যবসাকে অনলাইনে মার্কেটিং এবং বিকাশের জন্য।

ফেসবুক বিজনেস পেজ কীভাবে তৈরি করবেন?

ফেসবুকের ওয়েবসাইট বা অ্যাপ ব্যবহার করে।

ফেসবুক বিজনেস পেজের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য কী কী?

ব্যবসায়ের নাম, ঠিকানা, ওয়েবসাইট, ইমেল, ইত্যাদি।

ফেসবুক বিজনেস পেজের জন্য সঠিক টার্গেটিং কীভাবে করবেন?

জনসংখ্যা, আগ্রহ, আচরণ, ইত্যাদির ভিত্তিতে।

ফেসবুক বিজনেস পেজে কিভাবে পোস্ট করবেন?

টেক্সট, ছবি, ভিডিও, ইত্যাদি ব্যবহার করে।

ফেসবুক বিজনেস পেজে কিভাবে ভিডিও পোস্ট করবেন?

ফেসবুকের ক্রিয়েটর স্টুডিও অপশন থেকে ভিডিও আপলোড করা সম্ভব।

ফেসবুক বিজনেস পেজে কিভাবে অ্যাডস দেবেন?

ফেসবুকের অ্যাডস ম্যানেজার ব্যবহার করে।

ফেসবুক বিজনেস পেজের সফলতার জন্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত?

নিয়মিত পোস্ট করা, অডিয়েন্সদের সাথে যোগাযোগ করা, নতুন নতুন কৌশল ব্যবহার করা ইত্যাদি।

ফেসবুক বিজনেস পেজের জন্য একটি ভালো নাম কীভাবে বেছে নেবেন?

ব্যবসায়ের পরিচয় এবং টার্গেট অডিয়েন্সের জন্য উপযুক্ত একটি নাম বেছে নিন।

ফেসবুক বিজনেস পেজের জন্য একটি ভালো লোগো কীভাবে তৈরি করবেন?

ব্যবসায়ের ব্র্যান্ডিংয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি লোগো তৈরি করুন।

ফেসবুক বিজনেস পেজের জন্য একটি ভালো থাম্বনেইল কীভাবে তৈরি করবেন?

পোস্টের মূল কনটেন্টকে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করে একটি থাম্বনেইল তৈরি করুন।

ফেসবুক বিজনেস পেজের জন্য একটি ভালো ক্যাপশন কীভাবে লিখবেন?

ফেসবুক বিজনেস পেজে ক্যাপশন লেখার জন্য আপনি চ্যাট জিপিটি কিংবা গুগল বার্ড এর সাহায্য নিতে পারেন। পোস্টের কনটেন্টকে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করে এবং অডিয়েন্সদের পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করে একটি ক্যাপশন লিখুন।

ফেসবুক বিজনেস পেজের জন্য একটি ভালো কন্টেন্ট কীভাবে তৈরি করবেন?

অডিয়েন্সদের আগ্রহ এবং চাহিদা পূরণ করে এমন আকর্ষণীয় এবং তথ্যপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করুন।

ফেসবুক বিজনেস পেজের জন্য একটি ভালো ভিডিও কীভাবে তৈরি করবেন?

অডিয়েন্সদের আগ্রহ ধরে রাখে এমন আকর্ষণীয় এবং তথ্যপূর্ণ ভিডিও তৈরি করুন।

ফেসবুক বিজনেস পেজের জন্য একটি ভালো অ্যাডস কীভাবে তৈরি করবেন?

টার্গেট অডিয়েন্সদের কাছে পৌঁছাতে এবং তাদের পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করতে একটি অ্যাডস তৈরি করুন।

উপসংহার

লাস্ট কয়েক বছরের পরিসংখ্যান গুলো আমরা বিশ্লেষণ করলে দেখতে পারব যে ফেসবুক ব্যবহার করে নতুন নতুন বিজনেস তৈরি হচ্ছে ফেসবুকে। আপনি যদি একটি ব্যবসায় দাঁড় করাতে চান সে ক্ষেত্রে আপনি যদি টাকা পয়সা ঝামেলা ছাড়া ব্যবসা করার আগ্রহ থাকে তাহলে ফেসবুক দিয়ে শুরু করতে পারেন। 

ফেসবুক বিজনেস পেজ তৈরি করে সেখানে আপনি আপনার যাবতীয় প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিস খুব সহজভাবে প্রচার করে ব্যবসা দাঁড় করাতে পারবেন। কিভাবে বিজনেস পেজ তৈরি করতে হয় এবং কিভাবে সেটা দিয়ে বিজনেস করা সম্ভব এই বিষয়টা আমি আজকের এই আর্টিকেলে সংক্ষিপ আকারে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। ফেসবুকের মাধ্যমে বিজনেস করা ভবিষ্যতে হয়তো আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। 

এজন্য এখন থেকে ভালো হবে প্রস্তুতি নিতে হবে। বিভিন্ন পরিসংখ্যান অনুযায়ী সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে কোটি কোটি মানুষ নিয়মিত একটিভ থাকে সেক্ষেত্রে একটি বড় পরিমাণের অডিয়েন্স তৈরি করা সম্ভব ফেসবুক পেজ ব্যবহার করেন। সুতরাং আপনি যদি ব্যবসা করতে চান ফেসবুক পেজ ব্যবহার করে তাহলে আজকে থেকেই শুরু করে দিতে পারেন। 

এই সম্পর্কে যদি আরো কিছু জানার থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট সেকশনে জানিয়ে দিতে পারেন। ইনশাআল্লাহ যথাযথ উত্তর সময়ের মধ্যে দেয়া হবে। তো আজকের এই আর্টিকেল এই পর্যন্তই, সবাইকে আসসালামু আলাইকুম। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url