ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো সম্পূর্ণ গাইডলাইন ২০২৪

 

ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার এর সম্পূর্ণ গাইডলাইন
ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার এর সম্পূর্ণ গাইডলাইন
বর্তমানে অনলাইন থেকে ইনকাম করার সবথেকে জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। বর্তমানে বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং করার আগ্রহির সংখ্যা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং কি এবং কিভাবে শুরু করতে হয় এ বিষয়ে সম্পূর্ণ ধারণা না থাকার কারণে বেশিরভাগ জনই এই সেক্টর থেকে শূন্য হাতে ফিরে যায়। 

তবে সব থেকে ভালো ব্যাপার হচ্ছে বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১০ লাখের অধিক ফ্রিল্যান্সার রয়েছে যারা নিয়মিত অনলাইন সেক্টরে কাজ করতেছে। 

এছাড়াও ফ্রিল্যান্সিং এর বিভিন্ন ধরনের সুবিধা থাকার কারণে এই সেক্টরে যুবকদের আগ্রহ তুলনামূলক বেশি। এছাড়াও আপওয়ার্কের তথ্য অনুসারে বাংলাদেশ আইটি সেক্টরে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ডমিনেটিং কান্ট্রি। 

আপনিও যদি ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে ভালো কিছু করতে চান এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে ভালোভাবে প্রাথমিক জ্ঞান রাখতে হবে। কেননা আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে প্রাথমিক রাখতে না পারেন সেক্ষেত্রে  সফল হওয়া অনেক টাফ বিষয়। 

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে যাবতীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য যে বিষয়গুলো আপনাকে প্রাথমিকভাবে অবশ্যই জানতে হবে। 

এই আর্টিকেলে আমরা বিশেষভাবে আলোচনা করব ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবেন, নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং, বিনা মূল্যে ফ্রিল্যান্স কাজ শিখবেন, ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে কি কি জানতে হবে। 

এছাড়াও আমরা আলোচনা করব মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবেন, ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি এবং ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে। 

তাহলে চলুন অতিরিক্ত introduction না বাড়িয়ে আমাদের মূল আর্টিকেল তথা ফ্রিল্যান্সিং কি এবং ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার যাবতীয় গাইডলাইন নিয়ে আলোচনা করি।

ফ্রিল্যান্সিং কি?

ফ্রিল্যান্সিং কি?
ফ্রিল্যান্সিং কি?
চলুন প্রথমে আমরা ফ্রিল্যান্সিং এর বেসিক ধারণাটা ক্লিয়ার করি। ফ্রিল্যান্সিং হলো এক ধরনের প্রফেশন বা পেশা যার মাধ্যমে যে কেউ তার স্কিল (দক্ষতা) ব্যবহার করে তার পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের কাজ করার মাধ্যমে অনলাইন থেকে আয় করতে পারে। 

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট কোনো অফিসে যেতে হবে না। আপনি চাইলে খুব সহজেই ঘরে বসে আপনার ল্যাপটপ কিংবা পিসি ব্যবহার করে পুরো বিশ্বব্যাপী কাজ করতে পারবেন। 

আচ্ছা বিষয়টাকে আরেকটু সহজ ভাবে উপস্থাপন করা যাক;

মূলত ফ্রিল্যান্সিং হলো এক ধরনের ভার্চুয়াল কাজের ব্যবস্থা যেখানে যেখানে আপনি নির্দিষ্ট কোন কোম্পানির কর্মচারী না হয়ে, সেই কোম্পানিকে সার্ভিস প্রদান করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনাকে নির্দিষ্ট কোন বসের আন্ডারে কাজ করতে হবে না, আপনি নিজের স্বাধীনতা অনুযায়ী কাজ করতে পারবেন। 

মূলত একজন ফ্রিল্যান্সার তার নিজের কাজের সময় নির্ধারণ করে কাজ করে। সে চাইলে যেকোনো সময় কাজ করতে পারে। 

এছাড়াও একজন ফ্রিল্যান্সার তার কাজের জন্য কত টাকা নেবেন তা নিজেই নির্ধারণ করে থাকে। স্কিল যত উন্নত হবে এবং এক্সপেরিয়েন্স যত বেশি হবে আয় করার সম্ভাবনাও তত বৃদ্ধি পাবে। 

এছাড়াও যে কোন সময় যে কোন কাজ ছেড়ে দেওয়ার মতো ক্ষমতা রাখে। অর্থাৎ নিজের ইচ্ছামত কাজ করার সুযোগ রয়েছে ফ্রিল্যান্সিংয়ে। আর সব থেকে বড় বিষয় হল ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর থেকে অনেক বেশি পরিমাণে আয় করা সম্ভব। 

ফ্রিল্যান্সার কারা?

ফ্রিল্যান্সার কারা?
ফ্রিল্যান্সার কারা?
যারা মূলত ফ্রিল্যান্সিং করে তাদেরকেই ফ্রিল্যান্সার বলা হয়ে থাকে। আরো সহজ ভাবে বলতে গেলে, যে ব্যক্তি ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে যুক্ত থেকে কাজ করে তাকে ফ্রিল্যান্সার বলে। 

মূলত একজন ফ্রিল্যান্সার তার নিজস্ব স্কিল বা দক্ষতা কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ক্লায়েন্টের জন্য কাজ করে টাকা ইনকাম করে। 

এছাড়াও ফ্রিল্যান্সার এদেরকে তো মুক্তপেশাজীবী বলেও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। যে কেউ চাইলে একজন ফ্রিল্যান্সার হতে পারে উদাহরণস্বরূপ, একজন লেখক, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, কনটেন্ট রাইটার, গ্রাফিক্স ডিজাইনার, ওয়েব ডিজাইনার, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটার, প্রোগ্রামার সহ বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে পারে।

ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার?

ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার?
ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার?
ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার, এই প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করে কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং ভাগ করা হচ্ছে তার ওপর ভিত্তি করে। ফ্রিল্যান্সিং মোট কত প্রকার তা নির্দিষ্টভাবে বলা অসম্ভব। 

তবে ফ্রিল্যান্সিং কে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যায়। যেমন, কাজের ধরণ অনুসারে, কর্মক্ষেত্র অনুসারে, কর্মঘণ্টা অনুসারে বা কর্মের স্থায়িত্ব অনুসারে। চলুন প্রত্যেকটি ধরনকে সংক্ষেপে জেনে নেয়ার চেষ্টা করি;

১. কাজের ধরণ অনুসারে ফ্রিল্যান্সিং এর প্রকারভেদ

কাজের ধরন অনুযায়ী ফ্রিল্যান্সিংকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে।

  1. ফিক্সড প্রাইস অনুসারে: বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস যেমন ফাইভার এবং আপওয়ার্ক ফিক্সড প্রাইস অনুযায়ী ফ্রিল্যান্সিং করা যায়। সহজ হবে বলতে গেলে যখন কোন ক্লায়েন্ট একটি কাজ নির্দিষ্ট কোন টাকার বিপরীতে কাজ করায় তখন তাকে ফিক্সড প্রাইস বলে। 
  2. প্রজেক্ট অনুসারে: আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার ডট কম এবং বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসেই প্রজেক্ট অনুসারে কাজ করার সুযোগ থাকে। অর্থাৎ আপনাকে একটি ক্লায়েন্ট নির্দিষ্ট কাজের জন্য হায়ার করবে, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার কাজ সম্পূর্ণ করতে না পারেন আপনি সেই কাজের সাথে জড়িত থাকবেন। সহজ ভাবে বলতে গেলে নির্দিষ্ট একটি প্রজেক্ট এর জন্য কাজ করা। আর প্রজেক্ট অনুসারে কাজ করলে প্রতি ঘন্টা অনুযায়ী ক্লায়েন্ট আপনাকে পেমেন্ট করবে।

২. কর্মক্ষেত্র অনুসারে ফ্রিল্যান্সিং এর প্রকারভেদ

কর্মক্ষেত্র অনুসারেও ফ্রিল্যান্সিংকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যথা:

  1. সরাসরি মার্কেটপ্লেসে ফ্রিল্যান্সিং: এত বেশিরভাগই এই ভাগের মধ্যে পড়ে কেননা বেশিরভাগ জনই ফ্রিল্যান্সিং করে অনলাইনে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে। এখান থেকে সরাসরি একজন ফ্রিল্যান্সার বিভিন্ন ক্লায়েন্টের সাথে অনলাইনে কার্যকলাপ করে থাকে। তাহলে মূলত ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস থেকেই কাজ পায় এবং ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে ই তাদের ক্লায়েন্টের যাবতীয় কাজ করে এবং সাবমিট করে।
  2. আউট অফ মার্কেটপ্লেস ফ্রিল্যান্সিং: এ ধরনের ফ্রিল্যান্সিং মূলত প্রফেশনাল রা করে থাকে। তারা বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করে অনলাইন থেকে ক্লাইন্ট হান্টিং করে অর্থাৎ ক্লায়েন্ট খুঁজে বের করে তারপর তাদের সাথে সরাসরি চুক্তির মাধ্যমে কাজ করে থাকে কোন প্রকার মার্কেটপ্লেসের ঝামেলা ছাড়াই। মূলত যখন একজন ফ্রিল্যান্সার প্রফেশনাল হয় এবং তার নির্দিষ্ট ক্লায়েন্ট থাকে তখন তারা এই পদ্ধতি অবলম্বন করে। অনেক সময় অনেক এজেন্সি ও এই ধরনের পদ্ধতির মধ্যে পড়ে যায়।

৩. কর্মের ধরণ বা স্থায়িত্বের অনুসারে ফ্রিল্যান্সিং এর প্রকারভেদ

একজন ফ্রিল্যান্সার তার ক্লায়েন্টের সাথে বিভিন্ন ভাবে কাজ করে থাকে। তবে কর্মের ধরন এবং স্থায়িত্বের অনুসারে ফ্রিল্যান্সিংকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যথা; 

  1. স্বল্পমেয়াদী: যদি স্বল্প সময়ের জন্য কোন ক্লায়েন্টের সাথে কোন ফ্রিল্যান্সার কার্যকলাপ করে তখন তা স্বল্পমেয়াদি ফ্রিল্যান্সিং এর আওতাভুক্ত হয়ে যায়। স্বল্প মেয়াদী বা শর্ট টাইম ফ্রিল্যান্সিং থেকে খুব একটা ভালো আয় করা যায় না তবে বিভিন্ন স্কিল অর্জন হয়। এই ধরনের কাজগুলো মূলত পার্ট টাইম করা হয়ে থাকে। আর এই ধরনের স্বল্প মেয়াদী কাজগুলো নতুন ক্লায়েন্টের সাথে করা হয়ে থাকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। 
  2. দীর্ঘমেয়াদী: যখন একই ক্লায়েন্টের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করা তখন তা দীর্ঘমেয়াদী ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যে পড়ে। এই ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কাজ গুলো খুবই আকর্ষণীয় হয়ে থাকে এবং ভালো একটি প্রফিট অর্জন করতে সহায়তা করে। এছাড়াও ক্লায়েন্টের সাথে গভীর সম্পর্ক তৈরি করতে সাহায্য করে। আর এই ধরনের কাজগুলো করার মাধ্যমে বড় বড় পদ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

তবে এগুলো মূলত অনির্দিষ্ট প্রকারভেদ তবে নির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয় যে ফ্রিল্যান্সিংকে কত ভাগে ভাগ করা যায়। কেননা এই বিষয়ে অনেক জনের অনেক রকম মন্তব্য রয়েছে। তবে অনলাইন থেকে পাওয়া এই প্রকারভেদ গুলো বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। 

তবে একটি কথা সবসময় মাথায় রাখবেন, ফ্রিল্যান্সিং কাজের ধরণ তথা; কপিরাইটিং ডিজাইন প্রোগ্রামিং কিংবা ডিজিটাল মার্কেটিং এগুলো কোন প্রকারভেদ নয়। এগুলো এক একটি ক্যাটাগরি যার আন্ডার বিভিন্ন ধরনের স্কিল তৈরি করার সম্ভাবনা থাকে। 

ফ্রিল্যান্সিংয়ের সুবিধা ও অসুবিধা

ফ্রিল্যান্সিংয়ের সুবিধা ও অসুবিধা
ফ্রিল্যান্সিংয়ের সুবিধা ও অসুবিধা
ফ্রিল্যান্সিং এর অনেকগুলো সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে যা অবশ্যই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার পূর্বে ভালোভাবে জেনে নেয়া উচিত। নিচে ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা গুলোকে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো। 

ফ্রিল্যান্সিংয়ের সুবিধা:

নিচে ফ্রিল্যান্সিং এর কিছু সুবিধা উল্লেখ করা হলো;

১. ফ্লেক্সিবিলিটি

ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে ভালো এবং বড় সুবিধা হল আপনি যেকোনো সময় ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন। 

এছাড়াও আপনি আপনার নিজের কাজের সময় নির্ধারণ করতে পারবেন। তথাকথিত কোন চাকরির মত নির্দিষ্ট সময় ধরে আপনাকে কাজ করতে হবে না। 

আপনি আপনার পছন্দ সময় অনুসারে কাজ করতে পারবেন। 

ইচ্ছা করলে আপনি দিনে ১ ঘন্টাও কাজ করতে পারেন অথবা দিনে চাইলে ২০ ঘন্টা কাজ করতে পারেন

২. কাজের স্থান

ফ্রিল্যান্সিংয়ের দ্বিতীয় সব থেকে বড় সুবিধা হল আপনি যেখানে খুশি সেখান থেকে কাজ করতে পারবেন। 

আপনি চাইলে আপনার বেডরুম থেকেও ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন। কোন অফিসে গিয়ে আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং করতে হবে না। 

আপনি চাইলে বাসায় বসে খুব সহজেই ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন। যা বর্তমান সময়ে অনেক সুবিধাদায়ক একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

৩. পছন্দের কাজ করার সুযোগ

ফ্রিল্যান্সিং মূলত করা হয়ে থাকে যে এই বিষয়ে আপনি দক্ষ এবং যে বিষয় সম্পর্কে আপনার অনেক আগ্রহ রয়েছে। 

আপনার যদি পছন্দের কোন একটি স্কিল থাকে তাহলে আপনি সেই স্কিল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন। 

এখানে আপনি কোন প্রকার চাপ ছাড়াই নিজের মতো করে কাজ করতে পারবেন। আর প্রোডাক্টিভিটি বাড়ার সব থেকে বড় একটি কৌশল হচ্ছে পছন্দ অনুসারে কাজ করা।

 আপনি যদি আপনার পছন্দ অনুযায়ী কাজ করতে পারেন তাহলে আপনার সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বৃদ্ধি পাবে। যা ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে বড় সুবিধাগুলো আরেকটি। 

৪. একাধিক কাজ ও ক্লায়েন্ট

আপনি চাইলে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে একাধিক কাজ একই সময়ে করতে পারবেন। 

এছাড়াও আপনি চাইলে একাধিক ক্লায়েন্টের সাথে একই সময়ের কাজ করতে পারবেন। 

এছাড়াও আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী ক্লায়েন্টদের সাথে কাজ করতে পারেন। যদি কোন ক্লায়েন্টের সাথে আপনার আন্ডারস্ট্যান্ডিং খুব ভালো না হয় সেক্ষেত্রে আপনি যেকোনো সময় তা কাজ ছেড়ে দিতে পারবেন। 

৫. ব্যাপক আয় করার সম্ভাবনা

ফ্রিল্যান্সিং করার মাধ্যমে আপনি অনেক বেশি পরিমাণে আয়র করতে পারেন। 

যদি আপনার পর্যাপ্ত পরিমাণে স্কিল এবং এক্সপেরিয়েন্স থাকে তাহলে আপনি মাসে ১ লাখ টাকার উপরে খুব সহজে আয় করতে পারবেন। 

এছাড়াও আপনি যত বেশি কাজ করবেন তত আয় করার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে। 

কোন নির্দিষ্ট চাকরির মতো আপনাকে বেতন পেতে হবে না বরং আপনি আপনার ইচ্ছামত করতে পারবেন। যা আপনার ক্যারিয়ারকে অন্যান্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম হবে।

৬. বিশ্বব্যাপী কাজের সুযোগ 

ফ্রিল্যান্সিং করার মাধ্যমে আপনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্যক্তির সাথে পরিচিত হতে পারবেন। এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কালচার এবং সংস্কৃতির সাথে আপনি পরিচিত হতে পারবেন। 

যা আপনার এক্সপেরিয়েন্সকে আরো উন্নত এবং সমৃদ্ধ করবে। এছাড়াও আপনি যদি ক্লায়েন্ট এর সাথে ভালোভাবে পরিচিত হতে পারেন তাহলে বিভিন্ন দেশে ক্লায়েন্টের সাথে সরাসরি কাজ করার সুযোগ পেতে পারেন।

৭. নতুন দক্ষতা

আপনি যখন ফ্রিল্যান্সিং করবেন তখন আপনি নতুন নতুন স্কিল ডিভালাপ করতে পারবেন। নতুন নতুন এক্সপেরিয়েন্স এবং কাজের ধারণা সৃষ্টি হবে। 

কেননা আপনি যখন ফ্রিল্যান্সিং করবেন তখন আপনি নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হবেন এবং সেগুলোকে সমাধান করতে করতে তখন সেই বিষয়ে নতুন দক্ষতা অর্জন করবেন। 

আর যত নতুন দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন তত আপনি নিজেকে আরও পেশাদার হিসেবে সবার সামনে উপস্থাপন করতে পারবেন। 

৮. নেটওয়ার্কিং

নেটওয়ার্কিং আপনাকে অনেক বেশি পরিমাণে সুযোগ দেয় বিশেষ করে নতুন ক্লায়েন্ট খুঁজে পেতে, নতুন দক্ষতা শিখতে এবং আপনার কর্মজীবনকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করতে পারে। 

এছাড়াও আপনি যেই ফিল্ডে কাজ করেন সেই ফিল্ডের বড় বড় প্রতিনিধি এদের সাথে যখন আপনি কাজ করবেন তখন আপনি আরো অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন। 

এছাড়াও তাদের সাথে যখন আপনি কথাবার্তা বলবেন তখন আপনার ভুলগুলো বুঝতে পারবেন। 

এছাড়াও এই নেটওয়ার্কিং কে কাজে লাগিয়ে আপনি অনেক লাভজনক ব্যবসা করতে পারেন এবং চাইলে ইউটিউবিং এর মত অপশন শুরু করতে পারেন। 

এগুলো ছাড়া আরো অনেক ধরনের সুবিধা রয়েছে ফ্রিল্যান্সিং করার। তবে আমার কাছে এগুলোই মুখ্য সুবিধা বলে মনে হয়েছে। 

যদি আপনাদের আরো সুবিধা জানা থাকে তাহলে কমেন্ট সেকশনে জানাতে পারেন তাহলে পরবর্তীতে সেগুলো যুক্ত করে নেয়া হবে। 

ফ্রিল্যান্সিংয়ের অসুবিধা:

বরাবরের মত প্রত্যেকটি জিনিসের সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধা থেকে যায়। ফ্রিল্যান্সিং এর ব্যতিক্রম নয়। ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যেও রয়েছে কতগুলো অসুবিধা যা ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার পূর্বে অবশ্যই জেনে নেয়া উচিত।

১. অনির্দিষ্ট আয়ের সম্ভাবনা

একটি সাধারণ চাকরিতে যেমন আমরা বেতনের গ্যারান্টি পাই ফ্রিল্যান্সিং এ কিন্তু তা আমরা পাইনা। 

ফ্রিল্যান্সিং করে কখনো কখনো ভালো পরিমাণে আয় করা যায় আবার কখনো কখনো হাজার চেষ্টা করেও সহজে আয় করা যায় না। 

বিশেষ করে যারা নতুন ফ্রিল্যান্সাররা তাদের প্রথম এক থেকে দুই বছর খুবই কষ্টের সাথে কাটে। 

এখানে কোন মাসে হয়তো আপনার অনেক বেশি ইনকাম হবে আবার কখনো কখনো এমন হবে যে আপনার কোন ইনকাম ই হবে না। 

যার ফলে এখানে অনির্দিষ্ট আয়ের সম্ভাবনা দেখা দেয় যা ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার কে প্রভাবিত করতে পারে।

২. ক্লায়েন্ট খুঁজে বের করা

ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ অসুবিধা হচ্ছে ক্লায়েন্ট খুঁজে বের করা। একজন প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সার থেকে শুরু করে একজন সাধারণ ফ্রিল্যান্সার সবাইকে এই বিষয়টি অনেক ভোগায়। 

ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে বেশিরভাগ সময় আপনি ভালো ক্লায়েন্ট খুঁজে বের করতে পারবেন না। বিশেষ করে আপনি যদি নতুন হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে তো অনেক বড় সমস্যা হবে। 

প্রাথমিকভাবে ক্লাইন্টকে খুঁজে বের করা তারপর তার বিশ্বাস অর্জন করার এবং প্রথমদিকে ক্লায়েন্টকে আন্ডারস্ট্যান্ডিং করা অনেক কঠিন একটি বিষয়। 

যা ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে অনীহা সৃষ্টির কারণ হতে পারে।

৩. কাজের চাপ

ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কখনো কখনো কাজ পাওয়া যায় না আবার এমন সময় আসে যে এত পরিমাণে কাজ আসে সেটাকে কন্ট্রোল করা যায় না। 

তাড়াতাড়ি কাজ সম্পূর্ণ করার চাপ, ক্লাইন্টকে খুশি রাখা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে করতে একসময় কাজের চাপ অনেক বেশি হয়ে যায়। যা অনেক ডিপ্রেশনের নিয়ে যেতে পারে। 

এজন্য বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সারে যারা প্রফেশনাল হয়ে থাকে তারা কয়েকজন ছোট ছোট ফ্রিল্যান্সারদের সাথে যোগাযোগ রাখে। 

কোন কাজ পেলে তারা তখন ছোটদের কে দিয়েই করে নেয়।

আবার অনেক জন আছে যারা এজেন্সি তৈরি করে এই কারণে। 

কিন্তু ইন্ডিভিজুয়ালি কাজ করে যদি এরকম পরিস্থিতিতে পারেন তখন অনেক কাজের চাপ বৃদ্ধি পায় এবং ডিপ্রেশন ফিল হবে।

৪. একাকীত্ব

ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কাজ করতে গেলে এই সমস্যাটি আপনি অবশ্যই একবার হলেও সম্মুখীন হবেন। 

আপনি প্রায় একাকী হয়ে যাবেন এই ধরনের কাজ করতে করতে যার ফলে একসময় আপনাকে বিদঘুটে অভিজ্ঞতা ফিল করতে হবে। 

যখন আপনি একা একা সবসময় কাজ করবেন তখন কাজের প্রতি এক ধরনের অনিহা সৃষ্টি হতে পারে। 

এছাড়াও সব সময় একাকী থাকার কারণে কখনো মানসিক সমস্যা হতে পারে। গত ২/১ বছরে যা ব্যাপারে দেখা যাচ্ছে। 

৫. স্বাস্থ্যগত সমস্যা

ফ্রিল্যান্সিং এর এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি সমস্যা যা হয়তো আপনাকে অনেক খারাপ ভাবে প্রভাবিত করতে পারে। 

নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা অবশ্যই দেখা দিবে বিশেষ করে চোখের সমস্যা। 

এছাড়াও আরো অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যা হবে বিশেষ করে ওজনাধিক্য বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও ডায়াবেটিস এবং হার্টের সমস্যা অনেক সময় দেখা দেয় সব সময় বসে থাকার কারণে। 

তবে ফ্রিল্যান্সিংয়ের পাশাপাশি আপনি যদি নিয়মিত পরিশ্রম করতে পারেন এবং ব্যায়াম করতে পারেন তবে এই সমস্যা থেকে সমাধান পেতে পারেন। 

তবে এগুলো ছাড়াও আরো কিছু অসুবিধা রয়েছে যেমন; নিজের মার্কেটিং, কাজের ব্যবস্থাপনা, প্রযুক্তিগত দক্ষতা , অবকাশ এর মত অসুবিধা। হয়তো সবার ক্ষেত্রে এই অসুবিধা গুলো নাও হতে পারে। 

তবে আরেকটি সমস্যা যা অবশ্যই হয়ে থাকে সেটি হচ্ছে পারিবারিক সাপোর্ট। 

যখন আপনি প্রাথমিকভাবে প্রায় দুই এক বছর ঠিক মতো কাজ করতে পারবেন না, তখন পারিবারিকভাবে অনেক সমস্যার ফিল করবেন। 

যা ফ্রিল্যান্সিং কে আপনার জন্য অনেক কঠিন করে তুলবে।

ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে কি কি জানতে হবে?

ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে কি কি জানতে হবে
ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে কি কি জানতে হবে
ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে আপনাকে প্রয়োজনীয় দক্ষতা, টেকনোলজিক্যাল জ্ঞান, কমিউনিকেশন সহ বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে। 

তবে নির্দিষ্টভাবে বলা অসম্ভব কেননা এক একটা স্কিলের জন্য এক একটা স্পেশাল নলেজ রাখতে হয়। 

তবে যেই জিনিসগুলো অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে সেই জিনিসগুলো নিচে ধারাবাহিক আকারে দেয়া হলো।

১. কাজের দক্ষতা: 

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য আপনাকে প্রথম কাজের দক্ষতা বা স্কিল অর্জন করতে হবে। 

আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর যে সেক্টর নিয়ে কাজ করতে চান সে বিষয়ে আপনাকে পর্যাপ্ত দক্ষতা অর্জন করতে হবে। 

আর যদি আপনার পর্যাপ্ত স্কিল না থাকে তাহলে প্রথমে স্কিল অর্জনের দিকে নজর দিন। 

কেননা পর্যাপ্ত পরিমাণে স্কিল না থাকলে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে টিকে থাকা অসম্ভব। 

এর পাশাপাশি অভিজ্ঞতা অর্জনের দিকেও মনোযোগী হতে হবে যেন ক্লাইন্টকে খুব সহজেই কনভিন্স করা যায়।

২. কমিউনিকেশন স্কিল: 

ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে আপনাকে অবশ্যই এই বিষয়ের ওপর পর্যাপ্ত পরিমাণে জ্ঞান রাখতে হবে। 

কিভাবে ক্লাইন্টকে খুব সহজেই কনভেন্স করা যায়, ক্লায়েন্ট এর কাছ থেকে কিভাবে সহজে কমিউনিকেট করে কাজ পাওয়া যায়, কিভাবে প্রফেশনাল ভাবে কথা বলতে হয় এই সম্পর্কে আপনাকে ভালোভাবে জানতে হবে।  

স্পষ্ট ও সাবলীলভাবে কথা কথা বলার ও লেখার দক্ষতা অর্জন করতে হবে। 

কেননা ক্লায়েন্ট পাওয়ার পর আপনাকে ক্লাইন্টকে ম্যানেজ করার জন্য কমিউনিকেশন স্কিল অনেক ভালো রাখতে হবে।

যদি আপনি অনেক কাজ পারেন কিন্তু সেটা যদি বুঝাতে না পারেন তাহলে ক্লায়েন্ট কিন্তু আপনার কাছে থাকবে না। 

এজন্য অবশ্যই কিভাবে বায়ারদের সাথে কমিউনিকেশন করতে হয় এই বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করার চেষ্টা করবেন। 

৩. টাইম ম্যানেজমেন্ট স্কিল: 

টাইম ম্যানেজমেন্ট স্কিল জীবনের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ স্কিল। একজন মানুষের সাধারণ জীবনেও এই স্কিল টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

আর আপনি যখন ফ্রিল্যান্সিং করতে আসবেন তখন এটি আপনাকে আরো ব্যাপক আকারে শিখতে হবে। 

ফ্রিল্যান্সিং করার সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আপনি টাইম ম্যানেজমেন্ট করতে পারবেন না যা আপনার প্রোডাক্টিভিটি কমিয়ে দিবে।

এইজন্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার এবং সেটাকে উন্নত করার দিকে মনোযোগী হতে হবে এবং টাইম ম্যানেজমেন্ট স্কিলটাকে ভালোভাবে অর্জন করতে হবে।  

৪. সমস্যা সমাধানের দক্ষতা:

কাজ করার সময় আপনি এমন সব সমস্যার সাথে সম্মুখীন হবেন যা আপনি কখনো পূর্বে সম্মুখীন হননি। 

এই সমস্যাগুলো সমাধান করার স্কিল আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে অর্জন করতে হবে। কিভাবে এই সমস্যাগুলো থেকে উত্তরণ হওয়া যায় এই বিষয়ে সামান্য হলেও নলেজ থাকতে হবে। 

এইজন্য প্রয়োজনে আপনি youtube অথবা যে কোন ব্লগ থেকে সাহায্য নিতে পারেন। 

আর এই জন্য অবশ্যই নেটওয়ার্কিং মজবুত রাখবেন যেন অন্যান্য ফ্রিল্যান্সাররা আপনাকে এই কাজগুলোতে সাহায্য করতে পারে।

আর সমস্যা সমাধান করতে করতে আপনি নতুন নতুন স্কিল অর্জন করতে পারবেন যা আপনার প্রোডাক্টিভিটি আরো বাড়িয়ে দিবে।

৫. কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের জ্ঞান: 

কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রাথমিক জ্ঞান জ্ঞানগুলোকে অবশ্যই জানা থাকতে হবে। বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ব্যবহারের জ্ঞান এই সম্পর্কেও জ্ঞান থাকতে হবে। 

টাইপিং স্কিল, কপি এবং পেস্ট করার স্কিল, ব্রাউজারের প্রাথমিক টুলগুলো সম্পর্কে জ্ঞান, এক্সটেনশন এবং এডিটিং সম্পর্কে জ্ঞান অবশ্যই রাখতে হবে।

তবে এই জিনিসগুলো আপনি কাজ করার সাথে সাথে শিখতে পারবেন। তবে প্রাথমিক জ্ঞানটুকু জেনে রাখা অবশ্যই আবশ্যক। 

৬. ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে নলেজ

ফ্রিল্যান্সিং করার পূর্বে আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম এবং মার্কেটপ্লেস গুলো সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে। 

নতুনদের জন্য সেরা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস রিলেটেড আমি একটি ইতিমধ্যে আর্টিকেল লিখেছি আপনারা চাইলে সেটি পড়ে নিতে পারেন, তাহলে প্রাথমিক বিষয়গুলো ক্লিয়ার করে নিতে পারবেন। 

উপরের বিষয়গুলো সম্পর্কে আপনাকে অবশ্যই প্রাথমিক জ্ঞান রাখতে হবে। তবে এর পাশাপাশি আরও কয়েকটি বিষয় রয়েছে যেগুলো আপনাকে অবশ্যই ভালোভাবে শিখতে হবে। 

যেমন; ইংরেজি ভাষার জ্ঞান, যা অবশ্যই আপনাকে রপ্ত করা শিখতে হবে। কারণ আপনি ইন্টারন্যাশনাল এই যত ক্লায়েন্ট পাবেন তাদের সকলের সাথে আপনাকে ইংরেজি ভাষাতে কথা বলতে হবে। অনেক সময় আপনাকে ভিডিও কলে ও আসতে হবে। 

এজন্য আপনি যদি ভালোভাবে কথাবার্তা বলতে না পারেন সে ক্ষেত্রে ক্লাইন্ট দ্বিধাগ্রস্ত হবে। এইজন্য ইংরেজি ভাষার জ্ঞান অর্জন করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ফ্যাক্টর ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে। 

এছাড় ধৈর্য ও আত্মবিশ্বাস এর মত বিষয়গুলোর সাথে আপনাকে ভালোভাবে মানিয়ে নিতে হবে। ফ্রিল্যান্সিংয়ে আপনাকে বারবার ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হবে এবং নিজের আত্মবিশ্বাসের প্রমাণ দিতে হবে।  

কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখবো 

কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখবো
কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখবো 
ফ্রিল্যান্সিং শেখা কঠিন নয়, তবে ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য প্রচুর সময়, প্রচেষ্টা এবং ধৈর্য্যের প্রয়োজন। তবে সত্যি বলতে ফ্রিল্যান্সিং শেখা অনেক লং টাইম বা দীর্ঘমেয়াদী একটি প্রক্রিয়া। 

তবে আপনি যদি সঠিকভাবে প্রাক্টিস করতে পারেন এবং ধৈর্য ধরে কাজ করতে পারেন তাহলে আপনি খুব সহজেই ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারবেন। 

আর ফ্রিল্যান্সিং শিখার জন্য আপনি নিচের পদ্ধতিগুলো ইউজ করতে পারেন। 

১. অনলাইন কিংবা অফলাইন কোর্স করা

আপনি যদি কোন বিষয়ে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চান তাহলে অবশ্যই ফ্রিল্যান্সিং শিখার জন্য কোন একটি ভাল প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যক্তির কাছ থেকে কোর্স করা প্রয়োজন। 

বিশেষ করে আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং রিলেটেড কাজ শিখতে চান সেক্ষেত্রে অবশ্যই ভালো কোর্স করা আবশ্যনীয়।

তবে আপনাকে যে প্রিমিয়াম কোর্স করতে হবে তা কিন্তু নয় আপনি চাইলে অনেক ফ্রী কোর্স রয়েছে সেগুলো করতে পারেন। 

যদি আপনি ইংরেজি ভাষায় পারদর্শী হন তাহলে Udemy, Coursera, Skillshare, edX এর মত অনলাইন প্লাটফর্ম গুলো থেকে ভালো কোর্স বেছে নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শেখা শুরু করে দিতে পারেন। 

আর যদি আপনি ইংরেজি ভাষায় পারদর্শী না হন সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে কোন ভালো মেন্টরের কাছ থেকে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারেন। 

তবে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে অনেক প্রতারক রয়েছে তাদের কাছ থেকে অবশ্যই সাবধান থাকবেন। 

আপনি যেই বিষয় রিলেটেড স্কিল ডেভেলমেন্ট করতে চান সেই রিলেটেড বড় বড় ব্যক্তিদের কাছ থেকে সাজেশন নিন এবং তারপর কোর্স করতে পারেন। 

তবে বিভিন্ন ধরনের কোর্স অনেক সময় ফ্রিতে পাওয়া যায় যেগুলো আপনি চাইলে সেগুলোতে ইনরোল করতে পারেন। 

২. Youtube ব্যবহার করে (রিকমেন্ডেড) 

আপনি যদি সত্যিই আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি ইউটিউব দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শেখা শুরু করতে পারেন। 

কেননা ইউটিউবে সব বিষয়েই হাজার হাজার ভিডিও পাবেন। আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করতে চান এবং ফ্রিতে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চান তাহলে আপনি ইউটিউব অবশ্যই ব্যবহার করবেন। 

এখানে আপনি অনেক অনেক বিষয় শিখতে পারবেন এবং আরো অ্যাডভান্স লেভেলে জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন। 

গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সহ প্রত্যেকটি বিষয়ের উপর আপনি কম্পেন্সিভ ইউটিউব টিউটোরিয়াল পেয়ে যাবেন। 

আর সবথেকে মজার বিষয় হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান ইউটিউবে তাদের প্রিমিয়াম কোর্সগুলো ফ্রিতে দিয়ে দেয়। আপনি চাইলে সেগুলো ফ্রিতে দেখতে পারেন। 

আর আপনি যখন একটি বিষয়ের উপর অনেকগুলো ভিডিও দেখবেন তখন প্রত্যেকটি বিষয়ে আপনি ক্লিয়ার হতে পারবেন যা একটি কোর্সের থেকেও অনেক ভালো কিছু প্রদান করবে। 

আর ইউটিউব ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য আমি নিজেও রেকমেন্ড করে থাকি। 

৩. ব্লগ ও টিউটোরিয়াল

এই পদ্ধতিতে ফ্রিল্যান্সিং শেখা টাফ বিষয়ে তবে আপনার যদি আগ্রহ এবং প্রবল ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনি বিভিন্ন ধরনের ব্লগ ও টিউটোরিয়াল পড়ার মাধ্যমে ও ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারবেন। 

অনলাইনে প্রায় প্রত্যেকটি স্কিলের ওপর বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠান নিয়মিত টিউটোরিয়াল এবং ব্লগ পাবলিশ করে। আপনি চাইলে সেগুলো পড়েও ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারেন। 

তবে আমার রিকমেন্ডেশন থাকবে আপনি প্রাথমিক জ্ঞান অর্জন করার জন্য ইউটিউব ভিডিও দেখবেন। আর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য এবং জ্ঞান অর্জনের জন্য আপনি টিউটোরিয়াল ও ব্লগ করতে পারেন। 

৪. অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে

ইউটিউব, ফেসবুক সহ বিভিন্ন ধরনের প্লাটফর্মে আপনি অনেক এক্সপার্ট বা অভিজ্ঞদের সাহায্য নিতে পারেন ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য। 

আপনি যেই বিষয়ে স্কিল ডেভেলপ করতে চান সেই বিষয়ে ফেসবুকে অনেক গ্রুপ পেয়ে যাবেন সেগুলো তো আপনি জয়েন হতে পারেন। 

বিভিন্ন ধরনের গ্রুপে অনেক সময় ফ্রি ক্লাস থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের গাইডলাইন পাওয়া যায় সেগুলো অনুসরণ করতে পারেন। 

এছাড়া এই গ্রুপগুলোতে যারা এক্সপার্ট রয়েছে তাদের কাছ থেকে প্রত্যেকটি বিষয় সম্পর্কে সাহায্য নিতে পারেন। 

যখন আপনি পার্সোনালি কারো কাছ থেকে শিখে নিবেন তখন এই বিষয়গুলো আরো ক্লিয়ার হতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য অভিজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

৫. প্রাকটিস করা

Youtube এ ভিডিও দেখুন কিংবা কোর্স করুন অথবা অভিজ্ঞদের পরামর্শ দিন তাতে যায় আসে না যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি নিজের প্র্যাকটিস করেন। 

যখন আপনি একটি বিষয় সম্পর্কে জানবেন কিংবা শুনবেন সেই বিষয় নিয়ে সাথে সাথে রিসার্চ করবেন এবং সেগুলো প্র্যাকটিস করার চেষ্টা করবেন। 

প্র্যাকটিস করার মাধ্যমে আপনি একটি বিষয় সম্পর্কে খুব দ্রুত শিখতে এবং জানতে পারবেন। 

আর কাজ করা ক্ষেত্রে যদি কোন সমস্যা হয় তাহলে সাথে সাথেই সেই সমস্যা সমাধান করে নিবেন। 

আপনি যত বেশি পরিমাণে প্র্যাকটিস করবেন আপনার স্কিল develop হওয়ার সম্ভাবনা তাতে বেশি থাকবে। 

প্রাথমিকভাবে আপনি এই কয়েকটি পদ্ধতি ইউজ করেই ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারবেন। 

ফ্রিল্যান্সিং শেখার আরো কয়েকটি মাধ্যম রয়েছে তবে সেগুলো হয়তো বর্তমানে খুব একটা কার্যকর নয়। 

আপনি যদি প্রাথমিক টাকা খরচ করতে চান এবং বেসিক ক্লিয়ার করতে চান তাহলে আপনি কোন অনলাইন কোর্স কিংবা অফলাইন কোর্স করতে পারেন। 

আর আপনি যদি রিসার্চ করতে পছন্দ করেন এবং নতুন নতুন বিষয় প্রফেশনাল ভাবে শিখতে চান তাহলে ইউটিউব এর সাহায্য নিতে পারেন। 

এর পাশাপাশি আপনি অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিবেন ব্লগ ও টিউটোরিয়াল পড়বেন এবং নিয়মিত প্র্যাকটিস করবেন। 

এই পদ্ধতি অবলম্বন করেই আপনি খুব সহজেই ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারবেন। আশা করি কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখবেন এই বিষয়টি আপনার ক্লিয়ার হয়েছে।

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো
মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো
মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শেখা এবং করার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। 

আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চান তাহলে উপরের পদ্ধতি ফলো করে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারবেন। 

বিশেষ করে youtube ভিডিও দেখা, ব্লগ টিউটোরিয়াল পড়া, এবং অভিজ্ঞদের কাছে পরামর্শ চাওয়ার জন্য মোবাইল অনেক ভালো একটি ডিভাইস। 

এছাড়াও আপনি মোবাইল দিয়ে অনলাইন কোর্স করতে পারবেন। 

কিন্তু মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করা মোটেও সহজ ব্যাপার নয়। 

এছাড়াও অনেক জনের মতে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করা অনেক কষ্টসাধ্য। আর মোবাইলের লিমিটেড রিসোর্স ও ফিচার এর কারনে আপনি গুরুত্বপূর্ণ স্কিল নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন না। 

উদাহরণস্বরূপ ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন এর মত কাজগুলো মোবাইল দিয়ে করা প্রায় অসম্ভব। 

তবে ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য আপনি মোবাইল ইউজ করতে পারেন। 

তবে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং অসম্ভব তা কিন্তু নয় মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন কিন্তু কিছু নির্দিষ্ট সেক্টরে। 

নিচে কয়েকটি সেক্টরের নাম দেয়া হলো যেগুলোতে আপনি মোবাইল দিয়েও ফ্রিল্যান্সিং করতে হয় পারবেন।

১. কনটেন্ট রাইটিং

আপনি চাইলে মোবাইল ব্যবহার করে কন্টেন্ট রাইটিং করতে পারবেন। মোবাইল ব্যবহার করে খুব সহজেই কন্টেন্ট রাইটিং করা সম্ভব। 

যদি আপনার মোবাইলে টাইপিং স্পিড ভালো থাকে এবং লিখতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন তাহলে চাইলে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন কনটেন্ট রাইটিং সেক্টরে। 

সত্য বলতে বর্তমান অনেক কনটেন্ট রাইটার মোবাইল ব্যবহার করে তাদের কন্টেন্ট রাইটিং গুলো সম্পূর্ণ করেন।

তবে মোবাইল দিয়ে কন্টেন্ট রাইটিং করতে গেলে তুলনামূলক একটু সময় বেশি লাগে, তবে মোবাইল দিয়ে কনটেন্ট রাইটিং করে ফ্রিল্যান্সিং করা সম্ভব।

২. সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট

আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া সেক্টরে দক্ষ হয়ে থাকেন এবং সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে ভালো নলেজ রাখেন তাহলে এই সেক্টরে আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন মোবাইল ব্যবহার করে। 

আর এই সেক্টরটা খুব একটা কঠিন নয়, কেননা বেশিরভাগ সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাপ পাওয়া যায় যেগুলো আপনি মোবাইলে ব্যবহার করতে পারবেন অনায়াসে। 

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট এর বেশিরভাগ কাজ গুলোই আপনি মোবাইলে করতে পারবেন তবে কিছু কাজ রয়েছে যেগুলো আপনি ব্রাউজার ব্যবহার করে ডেক্সটপ মুডে করতে পারবেন। 

৩. ফটোগ্রাফ এন্ড ফটো এডিটিং

আপনি আপনার মোবাইল দিয়ে ছবি তুলে সেগুলোকে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস সেল করতে পারবেন। 

এছাড়াও আপনি যদি ফটো এডিটিং এ খুব ভালো দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে এই সেক্টরে ও মোবাইল দিয়ে আয় করা সম্ভব। 

এই দুটি সেক্টর মূলত মোবাইল দিয়েই করা সম্ভব তবে কিছু লিমিটেশন থেকেই যায়। তবে আপনার যদি স্কিল ভালো থাকে তাহলে ফটোগ্রাফ এন্ড ফটো এডিটিং মোবাইল দিয়েই করা সম্ভব।

৪. ট্রান্সলেশন

আপনি যদি ট্রান্সলেট বা অনুবাদ রিলেটেড কোন কাজ করতে চান ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এ তাহলে সেগুলো মোবাইল দিয়ে করতে পারবেন। 

এই কাজ করার জন্য মোবাইল কোন প্রকার সমস্যার সম্মুখীন হবেন না আপনি। প্রয়োজনে বিভিন্ন ধরনের ট্রানসলেশন অ্যাপ ইউজ করতে পারবেন। 

এছাড়াও ব্রাউজার ব্যবহার করেও অনেক সাহায্য নিতে পারবেন। 

৫. ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট রিলেটেড কাজ গুলো আপনি মোবাইল দ্বারা সম্পূর্ণ করতে পারবেন। আর ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজগুলো তুলনামূলক সহজ হয় যা খুব একটা সমস্যার সম্মুখীন করার কথা না। 

কিন্তু এখানেও কিছু লিমিটেশন অবশ্যই পাবেন, তবে বেশি কাজগুলো মোবাইল দিয়ে খুব সহজে সম্পন্ন করতে পারবেন। 

এই কাজগুলো ছাড়াও আরো অনেকগুলো কাজ রয়েছে যেগুলো মোবাইল দিয়ে করা সম্ভব। 

তবে আপনার যদি মোবাইলের পারফরম্যান্স ভালো থাকে এবং আপনি যদি দক্ষ হন তাহলে মোবাইল দিয়ে যেকোনো ধরনের কাজ করতে পারবেন। 

কেননা মোবাইলে বর্তমানে এমন সব কিছু ফিচার যুক্ত হচ্ছে যেগুলো ব্যবহার করে আপনি ল্যাপটপে যে কাজগুলো করতে পারতেন সেই একই কাজ এখানেও করতে পারবেন। 

বিশেষ করে আপনি যদি হাই পারফরমেন্সের মোবাইল ইউজ করেন তাহলে আপনি samsung ব্রাউজার এবং ক্রোম ব্রাউজার ব্যবহার করেও অনেক কাজ করতে পারবেন সেম ল্যাপটপের মত। 

তবে মোবাইল দিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে অনেক লিমিটেশন পাবেন সব ক্ষেত্রেই। তবে ধৈর্য এবং ইচ্ছা থাকলে মোবাইল দিয়েও ফ্রিল্যান্সিং করা সম্ভব।

ফ্রিল্যান্সিং-এর জন্য জনপ্রিয় কাজসমূহ

ফ্রিল্যান্সিং-এর জন্য জনপ্রিয় কাজসমূহ
ফ্রিল্যান্সিং-এর জন্য জনপ্রিয় কাজসমূহ
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে অনেকগুলো কাজ রয়েছে যেগুলো করা যেতে পারে।

তবে এমন কিছু কাজ রয়েছে যেগুলো মার্কেটে সব সময় ডিমান্ড এবং ভবিষ্যতেও এগুলোর ভালো ডিমান্ড থাকতে পারে। 

নিচে এরকম সেরা ৫ স্কিলের নাম দেয়া হলো যেগুলো বর্তমানে অনেক চাহিদা সম্পন্ন এবং ভবিষ্যতেও অনেক চাহিদা সম্পন্ন থাকবে বলে ধারণা করা হয়ে থাকে।

১. ওয়েব ডেভেলপমেন্ট: 

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এমন একটি ফ্রিল্যান্সিং স্কিল যা সব সময় চাহিদা সম্পন্ন। 

প্রত্যেকটি ব্যবসার মালিক তাদের ব্যবসার জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করে নেয় এবং বিভিন্ন ধরনের ব্যক্তি তাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে ওয়েবসাইট তৈরি করেন। 

আর একটু ওয়েবসাইট তৈরি করতে হলে অবশ্যই ওয়েব ডেভলপারের সাহায্য নিতে হয়। 

একজন ওয়েব ডিভালপার মাসে ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকার অধিক ইনকাম করে থাকে। 

২. ভিডিও এডিটিং: 

বর্তমানে সব থেকে জনপ্রিয় যে স্কিল গুলো বেশি চাহিদা সম্পন্ন তার মধ্যে ভিডিও এডিটিং সবার উপরে থাকে। 

ভিডিও এডিটিং এর মধ্যে ব্যক্তি কিংবা কোন প্রতিষ্ঠানের অ্যাডভার্টাইজিং থেকে শুরু করে টিউটোরিয়াল অথবা নানা ধরনের কাজে ব্যবহার করা হয়। 

এছাড়া বিভিন্ন প্রচারণামূলক কাজের ক্ষেত্রেও ভিডিও এডিটিং স্কিল অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

ভিডিও এডিটিং কাজের মধ্যে ভিডিও গ্রাফিক্স এবং এনিমেশন এই রিলেটেড কাজগুলো এখন বেশি মার্কেটে চলতেছে। 

এছাড়াও সাবটাইটেল যুক্ত করা, ভিডিও কে ট্রান্সলেট করা রিলেটেড কাজগুলো ভালো পাওয়া যাচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে। 

আর বর্তমানে সবাই ভিডিও দেখতে বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করে আর্টিকেল পড়ার থেকে। 

একজন ভিডিও এডিটর মাসে ৪০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে ইনকাম আরো অনেক বেশি হয়ে থাকে।

৩. সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন:

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা SEO অন্যতম একটি চাহিদা সম্পন্ন ফ্রিল্যান্সিং স্কিল যা বর্তমানে খুবই ট্রেন্ডে রয়েছে। 

প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটের মালিক চায় তাদের ওয়েবসাইট কে অর্গানিকভাবে সবার উপরে রাখতে এবং ওয়েবসাইটে ট্রাফিক নিয়ে আসতে। 

আর ক্ষেত্রেই একজন এসইও এক্সপার্ট ওয়েবসাইটের অর্গানিক ট্রাফিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। বর্তমানে এই পেশায় অনেক বড় বড় এক্সপার্টরা জয়েন হচ্ছে। 

এই সেক্টরে মাসে ৩০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব কখনো কখনো এর থেকে অনেক বেশি আয় করা যায়।

৪. সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং:

প্রত্যেকটি কোম্পানি কিংবা প্রতিষ্ঠান তাদের প্রমোশন এবং তাদের ইউজারকে আপডেট রাখার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে থাকে। 

এক্ষেত্রেই একজন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটার প্রয়োজন হয় যারা সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়াতে তাদের কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালনা করে। 

এই কাজটি বর্তমানে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কেননা প্রত্যেকটি কোম্পানি এখন তাদের ব্র্যান্ডিং করার জন্য এবং তাদের অডিয়েন্স কে আপডেট রাখার জন্য। 

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট বা মার্কেটিং এ টাকা ইনভেস্ট করতেছে। এই সেক্টরে মাঝারি মানের আয় করা যায়। 

এক মাসে ২০ থেকে ৬০ হাজার টাকার উপরে আয় করা সম্ভব কখনো কখনো এক লাখ টাকার কাছাকাছি ও আয় করা যায়। 

৫. গ্রাফিক্স ডিজাইন

গ্রাফিক্স ডিজাইনের চাহিদা পূর্বের তুলনায় দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রত্যেকটি কোম্পানি তাদের ব্যানার, লোগো কিংবা ইনফো গ্রাফিক্স ডিজাইন করার জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের হায়ার করে। 

এই সেক্টরের চাহিদা সব সময় অনেক বেশি এবং ভবিষ্যতেও এই সেক্টরের চাহিদা অনেক বেশি থাকে বলে আশা করা হয়। আপনাদের মধ্যে যারা গ্রাফিক্স নিয়ে কাজ করতে চান তারা গ্রাফিক্স ডিজাইন সেক্টর টাতে জয়েন হতে পারেন। 

এই সেক্টরে মাসে ৩০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার অধিক আয় করা সম্ভব।

এগুলো ছাড়াও আরো অনেক ধরনের ফ্রিল্যান্সিং স্কিল রয়েছে যেগুলো বর্তমান সময়ে অনেক ডিমান্ড সম্পূর্ণ। 

শুধু যে বর্তমানে এই স্কিলগুলো চাহিদা সম্পূর্ণ তা কিন্তু নয় ভবিষ্যতেও এই কাজগুলোর চাহিদা সম্পন্ন থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এগুলো ছাড়াও আরো অনেক স্কিল রয়েছে যেমন:

  • মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপার
  • সফ্টওয়্যার ডেভেলপার
  • ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার
  • ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট
  • ডেটা এন্ট্রি স্পেশালিস্ট
  • কাস্টমার সার্ভিস রিপ্রেজেন্টেটিভ
  • অ্যানিমেশন ভিডিও
  • ডিজিটাল মার্কেটিং 
  • কন্টেন্ট রাইটিং
  • অনলাইন টিউটরিং
  • ডাটা এন্ট্রি
  • ভির্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট 
  • ট্রান্সক্রিপশন
  • ট্রান্সলেশন সার্ভিস

এছাড়াও আরো অনেক স্কিল রয়েছে। বর্তমানে সব থেকে চাহিদা সম্পূর্ণ স্কিল গুলো সম্পূর্ণ জানতে এই আর্টিকেলটা পরে আসতে পারেন। 

সবথেকে জনপ্রিয় ১০ টি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস

সবথেকে জনপ্রিয় ১০ টি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস
সবথেকে জনপ্রিয় ১০ টি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস
বর্তমানে অনলাইনে অনেক ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস রয়েছে যেগুলোতে আপনি করতে পারবেন। তবে এর মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় দশটি freelance মার্কেটপ্লেস হলো:

  1. Upwork
  2. Freelancer
  3. Fiverr
  4. Toptal
  5. Guru
  6. PeoplePerHour
  7. 99designs
  8. FlexJobs
  9. Freelance Writing Gigs
  10. SimplyHired

এই দশটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে আপনি অনায়াসে অ্যাকাউন্ট তৈরি করে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন। 

আর এই সাইটগুলো সম্পূর্ণ সুরক্ষিত এবং নিরাপদ, প্রতারিত হওয়ার কোন সুযোগ নেই এই প্লাটফর্ম গুলোতে। 

বিশেষ করে নতুনদের জন্য এইসব ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস জনপ্রিয় হয়ে থাকে। নতুনদের জন্য সেরা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে একটি আর্টিকেল লিখেছি আপনারা চাইলে পড়ে আসতে পারেন। 

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ল্যাপটপ 

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ল্যাপটপ
ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ল্যাপটপ
ফ্রিল্যান্সিং করার সময় সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ যে উপাদানটি প্রয়োজন হয় সেটি হল ল্যাপটপ। 

তবে আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে চান তাহলে আপনাকে ভালো মানের ল্যাপটপ ব্যবহার করতে হবে। ল্যাপটপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে যা অবশ্যই লক্ষ্য রাখা উচিত। 

ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য একটি ভাল মানের ল্যাপটপ নির্বাচন করার সময় নিচের বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখা উচিত:

১. প্রসেসর: প্রসেসর হল ল্যাপটপের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক। মূলত প্রসেসর একটি ল্যাপটপ এর কাজের গতি নির্ধারণ করে থাকে।  ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য Intel Core i5, i7, AMD Ryzen 5, 7 এর মত শক্তিশালী প্রসেসর ব্যবহার করতে পারেন।

২. RAM: RAM ল্যাপটপের মাল্টিটাস্কিং ক্ষমতা নির্ধারণ করে দেয়। ফ্রিল্যান্সিং কাজে যত RAM বেশি হবে তত কাজ করতে সুবিধা হবে। ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য, 8GB RAM বা তার বেশি থাকা উচিত বলে ধারণা করা হয়।

৩. স্টোরেজ: স্টোরেজ আপনার ডেটা এবং সফটওয়্যার সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হয়। ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য, 512GB SSD বা তার বেশি থাকা উচিত। ভিডিও এডিটিং কিংবা এই ধরনের কাজের জন্য আরও বেশি স্টোরেজ থাকা প্রয়োজন।

৪. ডিসপ্লে: ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার করার ক্ষেত্রে ডিসপ্লেও অনেক বড় একটি ভূমিকা রাখে। বেশিরভাগ জনের মতে ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য ১৪" বা তার বেশি আকারের একটি উচ্চ-রেজোলিউশনের Full HD (1920x1080) রেজোলিউশন ডিসপ্লে ব্যবহার করা উচিত।

৫. ব্যাটারি লাইফ: ব্যাটারি লাইফ একটি ল্যাপটপের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পার্টগুলো অন্যতম একটি। ব্যাটারি লাইফ আপনাকে বিদ্যুৎ ছাড়া কাজ করার সুবিধা প্রদান করে। অ্যাভারেজ ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য, ৬-৮ ঘন্টা বা তার বেশি ব্যাটারি লাইফ থাকা অবশ্যক বলে ধারণা করা হয়।

ল্যাপটপের বাজেট কত হতে পারে:

আপনার প্রয়োজনীয়তার উপর ডিপেন্ড করে আপনাকে ল্যাপটপের বাজেট নির্ধারণ করতে হবে। তবে ল্যাপটপের কোয়ালিটি অনুযায়ী ল্যাপটপে আমরা নিচে তিন ভাগে ভাগ করলাম। 

১. ৳50,000 - ৳70,000: এই বাজেটে আপনি প্রাইমারি স্পেসিফিকেশন সহ একটি ভালো মানের ল্যাপটপ ক্রয় করতে পারেন। যা দিয়ে বেসিক ও মাঝারি সাইজের কাজগুলো করা সম্ভব।

২. ৳70,000 - ৳1,00,000: এই বাজেটের মধ্যে আপনি উন্নত স্পেসিফিকেশন সহ বিভিন্ন ফিচার সমৃদ্ধ ল্যাপটপ পেতে পারেন। এই ধরনের ল্যাপটপগুলো দিয়ে মধ্যম এবং উচ্চ রিলেটেড কাজগুলো করতে পারবেন। 

৩. ৳1,00,000+: এই হাই বাজেটে আপনি প্রিমিয়াম স্পেসিফিকেশন সহ বিভিন্ন ফিচার সমৃদ্ধ ল্যাপটপ অনায়াসে নিতে পারবেন। এই ধরনের ল্যাপটপগুলো দিয়ে ডেডিকেটেড কাজগুলো করতে পারবেন যেমন ভিডিও এডিটিং এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্টের মতো কাজগুলো।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য সেরা ৫টি ল্যাপটপ (আমাদের  সাজেশন) 

১. Apple MacBook Pro 14-ইঞ্চি

২. Dell XPS 15

৩. HP Spectre x360 14

৪. Microsoft Surface Laptop Studio

৫. Lenovo ThinkPad X1 Carbon Gen 10

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ল্যাপটপ নাকি কম্পিউটার কোনটি ভালো?

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ল্যাপটপ
ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ল্যাপটপ
ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ল্যাপটপ নাকি কম্পিউটার, কোনটি ভালো হবে এই প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করে আপনার কাজের ধরণ এবং ব্যক্তিগত পছন্দের উপর। 

তবে আমরা নিচে ল্যাপটপের এবং ডেস্কটপের আলাদা আলাদা ভাবে সুবিধা আলোচনা করার চেষ্টা করব এবং পরিশেষে একটি টেবিলের সাহায্যে আপনাদেরকে সহজেই একটি ওভারভিউ দেয়ার চেষ্টা করব:

ল্যাপটপের সুবিধা:

১. পোর্টেবল: ল্যাপটপ খুব সহজে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বহন করা যায়। এছাড়াও যে কোন স্থানে বসে কাজ করার সুবিধা রয়েছে।

২. কম জায়গা নেয়: একটি ল্যাপটপ একটি ডেস্কটপের তুলনায় অনেক কম জায়গা নেয়। এজন্য যদি আপনার কাজের ঘর ছোট হয়ে থাকে তাহলে ল্যাপটপ একটি ভালো অপশন হতে পারে।

৩. অল-ইন-ওয়ান সমাধান: ল্যাপটপে সবথেকে ভালো একটি সুবিধা হল অল ইন ওয়ান সমাধান। ল্যাপটপ এর মধ্যে ইন্টেগ্রেটেড কীবোর্ড, মাউস, ট্র্যাকপ্যাড এবং ডিসপ্লে থাকে। এই কারণে আপনাকে আলাদা হবে কীবোর্ড, মাউস বা মনিটর কেনার দরকার হবে না।

ডেস্কটপের সুবিধা:

১. শক্তিশালী পারফরমেন্স: ডেস্কটপ ল্যাপটপের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী পারফরমেন্স দিয়ে থাকে। এছাড়াও নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকে। 

২. আপগ্রেডযোগ্য: ডেস্কটপের মধ্যে অন্তর্গত বিভিন্ন কম্পোনেন্ট, যেমন RAM, প্রসেসর এবং গ্রাফিক্স কার্ড সহজেই আপগ্রেড করা সম্ভব। যা ল্যাপটপে অনেক ব্যয়বহুল। 

৩. কম দামি: একই স্পেসিফিকেশনের একটি ল্যাপটপের তুলনায় একটি ডেস্কটপ এর দাম অনেক কম হয়ে থাকে। যা একজন বিগিনার ফ্রিল্যান্সারের জন্য অনেক ভালো হয়। 

কিছু লক্ষণীয় বিষয়

আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং কিংবা  প্রোগ্রামিংয়ের মতো ভারী কাজ করতে চান, তাহলে অবশ্যই একটি শক্তিশালী ডেস্কটপ ব্যবহার করা উচিত হবে আপনার। 

অপরদিকে আপনি যদি অল্প এবং ছোট ছোট কাজ করেন অর্থাৎ, আপনি যদি writing, translation, ডিজিটাল মার্কেটিং এবং ডেটা এন্ট্রির মতো হালকা কাজ করেন, তাহলে একটি হাই পারফরম্যান্স যুক্ত ল্যাপটপ যথেষ্ট হবে। 

তবে সব থেকে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে একটি ল্যাপটপ একটি ডেস্কটপের তুলনায় বেশি দামি হয়ে থাকে প্রায় ক্ষেত্রে। 

তবে কিছু লোক ডেস্কটপ ব্যবহার করতে পছন্দ করে এর মূল কারণ হল ডেক্সটপে বড় মনিটর এবং আরামদায়ক কীবোর্ড ব্যবহার করা যায় এবং ভালোভাবে মাউস দিয়ে কন্ট্রোল করা যায়।  

অন্যদিকে, কিছু লোক ল্যাপটপ ব্যবহার করতে পছন্দ করে কারণ এটি পোর্টেবল এবং খুব সহজে এই ব্যবহার করা যায়। 

ফিচার ল্যাপটপ ডেস্কটপ
পোর্টেবিলিটি বেশি কম
স্পেস বা জায়গা কম বেশি
মূল্য বেশি কম
আপগ্রেডযোগ্যতা কম বেশি
পারফর্মেন্স কম বেশি
কাস্টমাইজেশন কম বেশি
মনিটর ছোট বড়
কীবোর্ড এবং মাউস ইন্টেগ্রেটেড আলাদা
বিদ্যুৎ খরচ কম বেশি

তবে আপনি ল্যাপটপ নাকি পিসি কোনটা ইউজ করবেন সেটা ডিপেন্ড করে আপনার পার্সোনাল অপিনিয়ন এবং আপনার কাজের ধরনের। আপনি এই বিষয়ে আরও এক্সপার্টদের সাথে যোগাযোগ করে কথা বলতে পারেন।

নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং (৭ টিপস)

নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং (৭ টিপস)
নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং (৭ টিপস)
নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা একটু কঠিন হতে পারে, তবে সঠিক গাইডলাইন এবং পদ্ধতি অবলম্বন করে নতুনরাও খুব ভালোভাবে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবে। 

এছাড়াও অভিজ্ঞতা ছাড়াও ফ্রিল্যান্সিং করার ও সম্ভাবনা রয়েছে। নিচে ৭ টি টিপস দেওয়া হল যা ফ্রিল্যান্সিং জার্নিতে সহায়ক হবে বলে আশা করি।

১. স্কিল ডেভলপমেন্ট করা

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সাকসেসফুল হতে হলে আপনাকে প্রথমেই একটি নির্দিষ্ট স্কিল অর্জন করতে হবে। আপনি যে বিষয় নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে চান সেটাকে সিলেক্ট করতে হবে।  

আপনি যে বিষয় সম্পর্কে আগ্রহী এবং কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে সেই সেক্টরের মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার চেষ্টা করবেন। 

আর ভালোভাবে যদি আপনি স্কিল অর্জন করতে পারেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং দুনিয়ায় কখনো কাজের অভাব পড়বে না। 

স্কিল ডেভেলপ করার জন্য আপনি ইউটিউব প্রিমিয়াম কোর্স কিংবা অন্যান্য পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। আর স্কিল ইম্প্রুভ করার জন্য সব সময় প্র্যাকটিস এর মধ্যে থাকার চেষ্টা করবেন।

২. পোর্টফোলিও তৈরি

আপনি যদি নতুনভাবে ফ্রিল্যান্সিং করতে চান অথবা নতুন ফ্রিল্যান্সার হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে একটি পোর্টফোলিও তৈরি করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। 

পোর্টফোলিও মূলত আপনার দক্ষতা এবং এক্সপেরিয়েন্স কে প্রকাশ করে। আর এটি একজন ক্লায়েন্টকে কনভেন্স করার ক্ষেত্রে অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখে। 

আপনি আপনার ওয়ার্ক ফিল্ডের রেজাল্ট ও এক্সপেরিয়েন্স সহ যাবতীয় বিষয় পোর্টফোলিওর মধ্যে যুক্ত করে দিবেন। এটি অবশ্যই একজন নতুন ফ্রিল্যান্সারের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ পাওয়ার জন্য। 

৩. প্রোফাইল তৈরি ও অপটিমাইজ করা

নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে যখন আপনি কোন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে যুক্ত হবেন তখন আপনাকে প্রথমেই আপনার প্রোফাইল তৈরি করতে হবে এবং প্রোফাইল কে অপটিমাইজ করতে হবে। 

কেননা আপনার প্রোফাইল যত উন্নত ও সমৃদ্ধ হবে এবং যত এট্রাক্টিভ হবে তত আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে। 

আর অবশ্যই বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে একই সাথে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করবেন। প্রাথমিক ভাবে আপনি নিজেই ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস থেকে ভালো ফলাফল পাবেন, সেগুলোতে আরো ভালোভাবে যুক্ত থাকার চেষ্টা করবেন। 

আর আপনি বিশেষ করে Upwork, Fiverr, Freelancer এর মত মার্কেটপ্লেসগুলোতে নিয়মিত একটিভ থাকার চেষ্টা করবেন। কেননা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসের বেশিরভাগ কাজ এই প্লাটফর্ম গুলো থেকেই পাওয়া যায়।

৪. ক্লায়েন্ট আউটরীচ করা

নতুন হিসেবে আপনি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে প্রথমদিকে কাজ পাবেন না আর পেলেও খুব কম পরিমাণে পাবেন। 

এই জন্য আপনাকে বিকল্প পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে অর্থাৎ ক্লাইন্ট আউট রিচ করতে হবে। অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট প্লেস এর বাইরে গিয়ে ম্যানুয়ালি আপনাকে ক্লায়েন্ট খুঁজে বের করতে হবে। 

আপনি বিভিন্ন ছোট ছোট ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ইমেইলে কোল্ড ইমেইল পাঠাতে পারেন। এছাড়াও আরো বিভিন্ন পদ্ধতির রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করে আপনি ক্লায়েন্টকে আউটরিচ করতে পারবেন। এই সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে ইউটিউবের সাহায্য নিতে পারেন।

৫. কমিউনিকেশন স্কিল ডেভেলপ করা

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এ নতুন হোক কিংবা পুরাতন সবাই বায়ারের সাথে কমিউনিকেশনে অনেকটাই ঘাবড়ে যায়। 

আপনি যেহেতু নতুন নতুন প্রাথমিকভাবে আপনার কমিউনিকেশন স্কিল ক্লিয়ার এবং স্পষ্ট করার চেষ্টা করবেন।

ক্লায়েন্ট আপনাকে কখনো কখনো ভিডিও কলে আসতে বলতে পারে সে ক্ষেত্রে পূর্ব উপস্থিতি নিয়ে রাখবেন। 

বেশি কথা বলতে হবে না ক্লায়েন্টের সামনে জাস্ট আপনার মূল টপিক কিংবা ফ্যাক্টগুলো বলতে পারেন। 

আপনি যদি আপনার ক্লাইন্টকে কমিউনিকেশনের মাধ্যমে কনভেন্স করতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনার কাজ পাওয়ার চান্স অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে। 

তবে ইংরেজি ভাষা শেখা উচিত ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে। কেননা বিশ্বের প্রায় সব দেশী দেখলে আপনার সাথে ইংরেজি ভাষায় কথা বলবে এজন্য ইংরেজি ভাষাটাও ক্লিয়ার করে রাখা উচিত ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে। 

৬. শেখা চালিয়ে যান এবং নিজেকে আপডেট করুন

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এবং ফ্রিল্যান্সিং জব গুলো প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হতে থাকে। এছাড়াও বাজারে নতুন নতুন প্রযুক্তি এবং এলগরিদম চেঞ্জ হওয়ার ফলে আপনাকে সব সময় আপডেট থাকতে হবে। 

নতুন নতুন টেকনোলজি এবং নতুন নতুন বিষয়গুলোর সাথে মানিয়ে নিতে হবে। 

এছাড়াও সব সময় নিজের শেখার গতিকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করবেন। নতুন নতুন বিষয়গুলো নিয়ে এক্সপ্লোর করার চেষ্টা করবেন। 

এতে করে আপনার স্কিল আরো উন্নত হবে এবং আপনার ডিমান্ড আরও বৃদ্ধি পাবে।

৭. ধৈর্য ধরা

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এ সফল হওয়া নতুনদের জন্য খুব সহজ ব্যাপার নয়। প্রাথমিকভাবে প্রথম ছয় মাস আপনাকে অনেক কষ্ট করে সামাল দিতে হবে এবং ক্লাইন্টকে খুঁজে বের করতে হবে। 

এছাড়াও কোন প্রকার হয়তো ইনকাম নাও হতে পারে। এজন্য ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করার ক্ষেত্রে সবথেকে বড় একটি চ্যালেঞ্জ হলো ধৈর্য ধরা। 

আপনি যদি ধৈর্য ধরে দুই এক বছর প্র্যাকটিস করতে পারেন এবং কাজ করতে পারেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে আপনার একটি জায়গা তৈরি করে নিতে পারবেন। 

উপরে শুধুমাত্র কয়েকটি টিপস দেয়া হলো এছাড়াও আরো অনেক টিপস আছে। যেগুলো আপনি google করলেই খুজে পাবেন অথবা আপনি ইউটিউবে সাহায্য নিতে পারেন এই বিষয়গুলো সম্পর্কে আরো বিস্নতারিত জানতে। 

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কি কি জিনিস দরকার হয়?

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কতগুলো বিষয় জানা থাকা প্রয়োজন তা সম্পূর্ণ ডিপেন্ড করবে আপনি কোন বিষয়ের ওপর কাজ করতে চান। 

তবে, সাধারণভাবে কিছু বিষয় আছে যেগুলো সব সেক্টরেই লাগে। এই বিশেষ বিষয়গুলো আপনার জানা থাকলে আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করা সহজ হবে। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দরকার:

১. দক্ষতা - আপনি কোন বিষয়ের উপর কাজ করতে চান সেটা প্রথমেই সিলেক্ট করার পর সেই হিসেবে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। যেমন: রাইটিং, প্রোগ্রামিং, ডিজাইন, মার্কেটিং ইত্যাদিতে দক্ষতা। ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রেই দক্ষতা সব থেকে বেশি প্রাধান্য প্রাপ্ত একটি বিষয়। কেননা আপনার দক্ষতা না থাকলে আপনি কোথাও কাজ করতে পারবেন না যতই আপনার অন্যান্য স্কিল থাকুক না কেন।

২. ইংরেজি দক্ষতা - অনলাইনে কাজ করার জন্য ইংরেজিতে দক্ষ হওয়া খুবই দরকার। কেননা আপনি যখন ক্লাইন্ট এর সাথে কথা বলবেন তখন সমস্ত ক্লায়েন্ট আপনার সাথে ইংরেজি ভাষাতে কথা বলবে। আর তখন যদি আপনি ভালোভাবে ইংরেজি কথা বলতে না পারেন তখন আপনার ক্লায়েন্ট হয়তো নেগেটিভ মাইন্ডে নিতে পারে। এজন্য ইংরেজি ভাষায় দক্ষ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে।

৩. কম্পিউটার স্কিল - ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য কম্পিউটার স্কিল অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা পালন করে। আপনি কম্পিউটার সম্পর্কে যত বেশি জানবেন ফ্রিল্যান্সিং কাজ আপনি তত তাড়াতাড়ি সম্পন্ন করতে পারবেন। বিশেষ করে টাইপিং স্কিল এবং ইন্টারনেট জগতের স্কিল অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে।

৪. ইন্টারনেট সংযোগ - ফ্যাস্ট ইন্টারনেট সংযোগ থাকা প্রত্যেক ফ্রিল্যান্সারের জন্য অনেক ইম্পরট্যান্ট একটি বিষয়। কেননা আপনি যখন অনলাইনে কাজ করবেন তখন নেটওয়ার্ক হয় সেক্ষেত্রে অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে। বিশেষ করে আপনি যদি অনলাইন ক্লাস কিংবা লাইভ ভিডিও করেন সেক্ষেত্রে স্লো নেটওয়ার্ক হলে সমস্যার মধ্যে করতে পারেন। এজন্য সব সময় ওয়াইফাই কিংবা মোবাইলে নেটওয়ার্ক ফার্স্ট হয় এদিকে লক্ষ্য রাখবেন।

৫. টাইম ম্যানেজমেন্ট - এই গুণাবলীটি মূলত প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সারদের প্রয়োজন। কেননা তারা বিভিন্ন প্রজেক্ট একই সময়ে রান করে। যার কারণে তারা টাইম ম্যানেজমেন্ট সঠিকভাবে করতে পারেনা। আর টাইম ম্যানেজমেন্ট না করার ফলে অনেক সময় অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। তবে বিগিনারদের প্রাথমিকভাবে এই বিষয়টাতে গুরুত্ব না দিলেও চলবে।

৬. মার্কেটিং স্কিল - ক্লায়েন্ট এবং অডিয়েন্সের সামনে নিজেকে উপস্থাপন এবং নিজেকে মার্কেটিং করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি স্কিল এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ফ্রিল্যান্সিংয়ে ভালো কিছু করার জন্য। এইজন্য সবসময় নিজেকে মার্কেট করার দিকে মনোযোগী হতে হবে। 

৭. ধৈর্য্য ও আত্মবিশ্বাস - ব্যক্তিগত গুণাবলীর মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং মূল বিষয় হলো আত্মবিশ্বাস এবং ধৈর্য। আপনার মধ্যে যদি এই দুইটি থাকে তাহলে আপনি যেকোন কাজ করতে পারবেন এবং সফল হতে পারবেন। আর এই দুটি গুণাবলী যদি আপনার মধ্যে না থাকে তাহলে সহজে কখনো সফল হতে পারবেন না। সফলতা অর্জনের জন্য এই দুটি গুণাবলী অনেক জরুরী। 

ফ্রিল্যান্সিং করতে কি টাকা লাগে ?

ফ্রিল্যান্সিং করতে সরাসরি কোন টাকা লাগে না। তবে পরোক্ষভাবে টাকা খরচ হতেও পারে। উদাহরণস্বরূপ;

ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে নিয়মিত ইন্টারনেট প্রয়োজন হয় এজন্য আপনাকে হয়তো ইন্টারনেট খরচের জন্য পরোক্ষভাবে টাকা ইনভেস্ট করতে হবে। 

এর পাশাপাশি ল্যাপটপ কিংবা পিসির জন্যও অনেক সময় তারা খরচ করতে হতে পারে। 

তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার কিংবা টুলস ক্রয় করার সময় টাকা লাগতে পারে। 

আর আপনি যদি দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য অনলাইন কোর্স ক্রয় করেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই টাকা খরচ করতে হবে। 

এছাড়াও আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এ নিজেকে প্রমোট করতে চান তাহলেও আপনার টাকা লাগতে পারে।

তবে শুরুতে বেশি টাকা লাগার কথা নয়। কিছু ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা যায় খুব কম বিনিয়োগ প্রয়োজন হয় আবার কোথাও অনেক বেশি পরিমাণে প্রয়োজন হয়। যেমন:

যেহেতু আমরা নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করি সেক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যালেন্স উল্লেখযোগ্য ভাবে ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে এক্সট্রা ভাবে নাও লাগতে পারে। 

কেননা ফ্রিল্যান্সিং না করলেও আমাদেরকে নিয়মিত ইন্টারনেট প্যাকেজ ক্রয় করতে হতে লাগে। 

আর আপনি চাইলে ফ্রিল্যান্সিং কাজে বিভিন্ন ফ্রি সফটওয়্যার এবং টুলস ব্যবহার করতে পারেন। 

এছাড়াও অনলাইনে বিভিন্ন কোর্স এবং ভিডিও পাওয়া যায় আপনি চাইলে সেগুলো থেকেও নিজেকেই প্রফেশনাল ভাবে গড়ে তুলতে পারবেন। 

অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে আপনার কোন টাকা লাগবে কিনা অর্থাৎ খরচ করতে হবে কিনা সেটা সম্পূর্ণ ডিপেন্ড করে আপনার ওপর। 

আপনি যদি অধিক ফেসিলিটি পেতে চান তাহলে আপনাকে টাকা খরচ করতে হতে পারে আর যদি আপনি নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেন তাহলে টাকা নাও লাগতে পারে। তবে ফ্রিল্যান্সিং করতে সরাসরি কোন টাকার প্রয়োজন হয় না।

ফ্রিল্যান্সিং এ সফল হতে কত সময় লাগে?

ফ্রিল্যান্সিং এর সফল হতে কত সময় লাগবে এরা কখনোই নির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়। ফ্রিল্যান্সিং মূলত এমন একটি কাজ যেখানে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে সফলতা অর্জন করা যায়। 

আপনার কাজের কোয়ালিটি যত উন্নত হবে এবং দক্ষতা যত বেশি হবে তত তাড়াতাড়ি সাকসেসফুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। 

এছাড়াও এক্সপেরিয়েন্স, কমিউনিকেশন স্কিল, ক্লাইন্ট ম্যানেজমেন্ট এর মত বিষয়গুলোও ফ্রিল্যান্সিং এ সাকসেসফুল হওয়ার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। 

আর আপনি কোন বিষয়ে কাজ করতেছেন, সেখানে কম্পিটিশন কেমন এই বিষয়গুলো সাকসেসফুল হওয়ার ক্ষেত্রে বিবেচনা করতে হবে। 

তবে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে সফল হওয়ার জন্য সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যে বিষয়টি সেটি হল ভাগ্য, পরিশ্রম এবং মেধা। 

আপনি নিয়মিত পরিশ্রম করার মাধ্যমে খুব সহজেই সফল হতে পারেন। তবে এখানে ভাগ্য অনেকটা বড় ইফেক্ট রাখে।

কেননা অনেকজন এরকম পাবেন যারা অনেক স্কিল সমৃদ্ধ ব্যক্তি কিন্তু  কোনো কাজ পাচ্ছে না আবার অনেক জন এরকম পাবেন যাদের কাজের স্কিল নেই কিন্তু কাজ পাচ্ছে।

তবে গড় হিসাব করলে দেখা যায় যে, একজন সাধারণ ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য কমপক্ষে ৬ মাস থেকে ২ বছর সময় লাগতে পারে। তবুও এটা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত নির্ভর করবে ফ্রিল্যান্সারের কাজের কোয়ালিটি, এক্সপেরিয়েন্স, স্কিল, ধৈর্য ও পরিশ্রম এর ওপর। 

ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি?

ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ বরাবরের মতো সব সময় উজ্জ্বল। আমি যদি এর কারণ উল্লেখ করতে চাই তাহলে অনেক কারণ হয়তো উপস্থাপন করা সম্ভব। তবে ফ্রিল্যান্সিংয়ের ভবিষ্যত তার সব থেকে বড় কারণ রয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ, বিভিন্ন লোকাল বিজনেস থেকে শুরু করে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কাজ করানোর জন্য সব থেকে ভালো ব্যক্তিদের হায়ার করতে চায়। 

এজন্য বিজনেস মালিকরা কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে পছন্দ না করে তারা ফ্রিল্যান্সিং কমিউনিটি থেকে সবথেকে ভালো ফ্রিল্যান্সারদেরকে বেশি নেওয়ার চেষ্টা করে। যে তার ব্যবসাকে সর্বোচ্চ রেভিনিউ নিয়ে আসতে সাহায্য করে। 

বর্তমানে যেহেতু বিভিন্ন কোম্পানি আরও সৃষ্টি হচ্ছে সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে কাজ বৃদ্ধি পাওয়ার আরো অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। আর এখানেই ফ্রিল্যান্সারদের ভবিষ্যৎ আর ইম্প্রুভ করার অপশন থেকে যায়। 

তবে ফ্রিল্যান্সিং কাছে পূর্বের তুলনায় হয়তো অনেক চ্যালেঞ্জ আসতে পারেন। যার অন্যতম হলো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর প্রভাব। 

বর্তমানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার প্রত্যেকটি ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে করা হচ্ছে। যার ফলে ফ্রিল্যান্সারদের প্রভাব কোন কোন অংশে কমে যাচ্ছে। 

তবে এখানে একটি আশার বানীও রয়েছে, যেমন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিভিন্ন কাজের পরিমাণ কমে আসতেছে ঠিক তেমনি ভাবে এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর কারণে আরো নতুন নতুন জব সৃষ্টি হচ্ছে। 

যেমন; প্রম্পট ডিভালপার, ডাটা এনালেটিক্স, Development, AI Applications, AI Integrations, AI Chatbot, AI Music Videos, AI Video Art, AI Spokespersons Videos, Custom GPT Apps সহ আরো অনেক অনেক জব ক্ষেত্র। 

তবে ভবিষ্যতে সবথেকে বড় যে চ্যালেঞ্জটি আসবে সেটি হলো কম্পিটিশন। এছাড়াও বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিংয়ে অনেক কম্পিটিশন চলতেছে যার কারণে কাজ পাওয়া পূর্বের তুলনায় অনেক মুশকিল হয়ে উঠতেছে। 

যা ভবিষ্যতে হয়তো আরো বড় আকার ধারণ করবে। তবে যদি পারফেক্ট স্কিল থাকে এবং পরিশ্রমী হয়ে থাকে তাহলে এই সেক্টরে আরো ভালো কিছু করা সম্ভাবনা রয়েছে। 

সবদিক থেকে ভেবে দেখলে দেখা যাচ্ছে যে ভবিষ্যতে ফ্রিল্যান্সিং এর অবস্থা বর্তমান অবস্থার থেকেও আরো ভালো হবে। 

আরো বেশি পরিমাণে আয় করা সম্ভবনা বৃদ্ধি পাবে এবং কাজের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উপস্থাপন হতে পারে কম্পিটিশন। 

এজন্য এখন থেকেই ভালোভাবে স্কিল ডেভেলপেন্ট করতে হবে যেন ভবিষ্যতে কাজ পেতে সমস্যা না হয়।

ফ্রিল্যান্সাররা যেসব ভুল বেশি করে

ফ্রিল্যান্সাররা সহজে সাকসেসফুল না হওয়ার পিছনে তাদের অনেকগুলো ভুল থাকে। যেই ভুল গুলোর কারণে তারা সহজে কাজ পায় না কিংবা কাজ পেলেও সঠিকভাবে সম্পূর্ণ করতে পারে না। 

যার কারনে রেটিং খারাপ থেকে শুরু করে নানা ধরনের সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। নিচে কিছু কমন ভুল দেয়া হলো যেগুলো ফ্রিল্যান্সাররা প্রাথমিক অবস্থায় করে থাকে

১. দক্ষতা অর্জনের আগেই কাজ শুরু করা:

বর্তমান সময় দেখা যাচ্ছে যে বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সার দ্রুত ইনকামের আশায় প্রয়োজনীয় স্কিল ডিভেলপ না করেই কাজ করা শুরু করে দিচ্ছে। 

যার ফলে তারা ক্লায়েন্টকে লো কোয়ালিটি সম্পন্ন কাজ হস্তান্তর করতেছে। এর ফলে খারাপ রিভিউ, ভবিষ্যতে কাজ না পাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। 

এছাড়াও বর্তমানে দেখা যাচ্ছে যে অল্প স্কিল নিয়ে মার্কেটপ্লেস এ যুক্ত হওয়ার ফলে ক্লায়েন্টের রিকোয়ারমেন্ট ফুল ফিল করতে না পারার কারণে তারা বিভিন্ন সময় অর্ডার ক্যানসেল করতে বাধ্য হন।

২. সঠিক মার্কেটপ্লেস নির্বাচন না করা:

বর্তমানে দেখা যাচ্ছে যে বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সার শুধুমাত্র ফাইভার, আপওয়ার্ক এবং  ফ্রিল্যান্সার ডটকম এর মতো প্ল্যাটফর্ম গুলোতেই যুক্ত হচ্ছে। আর এই মার্কেটপ্লেসগুলোতে যেহেতু বেশি কম্পিটিশন সেক্ষেত্রের কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা তুলনামূলক কম। 

বর্তমানে আরো বিভিন্ন ভালো ভালো ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস রয়েছে যেগুলোতেও বিভিন্ন রা খুব সহজে কাজ করতে পারে। 

কিন্তু তারা সেগুলোতে কাজ না করে কয়েকটি মার্কেটপ্লেস এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে যার ফলে তারা সহজে কাজ পাচ্ছে না। 

আবার অনেকজনের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে এমন কিছু প্লাটফর্মে যুক্ত আছে যেগুলোতে কখনো কাজ পাওয়ার সম্ভাবনাই নেই। এই ধরনের প্লাটফর্ম গুলোতে জয়েন হওয়া প্রয়োজন নেই যেগুলোতে কোন প্রকার কাজ পূর্বে পাওয়া যায়নি। 

কয়েকটি সুপ্রতিষ্ঠিত ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এর পাশাপাশি আরো কয়েকটি ভালো ভালো ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস রয়েছে সেগুলোতে জয়েন হতে পারেন।

৩. প্রোফাইল ও পোর্টফোলিও তৈরিতে অবহেলা:

প্রোফাইল ও পোর্টফোলিও একজন ক্লায়েন্টকে আকৃষ্ট করার জন্য এবং নিজের কাজের নমুনা প্রদর্শনের জন্য উপযুক্ত স্থান। 

আপনি আপনার পোর্টফোলিও এবং প্রোফাইল যত সুন্দর ভাবে সাজাতে পারবেন আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনাও তাতো বৃদ্ধি পাবে। 

বর্তমানে দেখা যায় যে বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সার তাদের প্রোফাইল সঠিকভাবে ডিজাইন করতে পারেনা। আর করতে পারলেও খুব একটা মনোযোগী হয় না। 

সব সময় মাথায় রাখবেন আকর্ষণীয় প্রোফাইল ও পোর্টফোলিও ক্লায়েন্টদের আকৃষ্ট করতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

৪. জব প্রপোজাল পাঠানোর ক্ষেত্রে ভুল:

একটি কাজের প্রস্তাব বা জব প্রপোজাল পাঠানোর ক্ষেত্রে অনেকগুলো বিষয় লক্ষ্য রাখতে হয়। 

সব থেকেই ভালোভাবে লক্ষ্য রাখতে হয় যেন ক্লায়েন্টের সমস্ত রিকোয়ারমেন্ট এর উপযুক্ত উত্তর প্রদান করা এবং নিজের এক্সপার্টাইজ ও এক্সপেরিয়েন্সের নমুনা প্রদান করা। 

বর্তমানে দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সার তাড়াহুড়া করে প্রপোজাল পাঠায়, জব ডিস্ক্রিপশন ভালো করে না পড়েই। আর এক্ষেত্রে যদি আপনি সঠিক এবং উপযুক্ত প্রপোজাল না পাঠাতে পারেন সে ক্ষেত্রে কাজ পাওয়া সম্ভব না নেই বললেই চলে। 

এছাড়া অনেক সময় দেখা যায় যে অস্পষ্ট এবং ইনকমপ্লিট প্রপোজালও অনেকজন সেন্ড করে থাকে, যা অনেক বড় একটি ভুল। 

৫. কাজের মূল্য নির্ধারণে ভুল:

এই সমস্যাটি মূলত নতুনদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে সে তারা তাদের কাজের যথাযথ মূল্য নির্ধারণ করতে পারেনা। 

বর্তমানে অনেকেই দেখা যায় যে তারা তাদের স্কিলের মূল্য অনেক কমিয়ে দেয়, যা মার্কেটে তাদের দক্ষতার অবমূল্যায়ন করে। 

এক্ষেত্রে অনেক সময় ক্লাইন্ট কাজের কোয়ালিটি নিম্ন ভেবে কাজ প্রদান করতে চায় না। 

আবার অনেক জনকে দেখা যায় যে তারা খুব বেশি পরিমাণে মূল্য নির্ধারণ করে যা ক্লায়েন্টদেরকে আকৃষ্ট করতে এবং নিয়োগ প্রদান করতে বাধা প্রদান করে।  

৬. যোগাযোগে ঘাটতি:

যোগাযোগের ঘাটতি বিষয়টা অনেক বড় একটি প্রবলেম। ফ্রিল্যান্সিংয়ের সুস্পষ্ট এবং ওয়েল কমিউনিকেশন অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ফ্যাক্টর নিজেকে উপস্থাপন করার এবং নিজের স্কিলকে উপস্থাপন করার জন্য। 

নতুন অনেক এরকম ফ্রিল্যান্সারকে পাওয়া যায়, যারা ক্লায়েন্টের সাথে সঠিকভাবে যোগাযোগ করতে পারেনা। যার ফলে তারা ভুল বুঝাবুঝির শিকার হয় এবং তারা ক্লায়েন্টের রিকোয়ারমেন্ট সঠিকভাবে ফুলফিল করতে পারেনা। 

আর করতে পারলেও লং টাইমের জন্য কাজ করতে পারে না। আর সঠিকভাবে যোগাযোগ করতে না পারলে ক্লায়েন্ট আপনাকে নিম্ন রেটিং পর্যন্ত দিতে পারে যা আপনার কাজের কোয়ালিটি কে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।

৭. একাধিক কাজের মাঝে হারিয়ে যাওয়া:

এই ধরনের ভুলগুলো মূলত যারা মিডিয়াম কিংবা এক্সপার্ট লেভেলে তারাই করে থাকে বেশিরভাগ সময়। 

আমার অনেক সময় নতুনদের মধ্যেও এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। একসাথে অনেকগুলো কাজ নেয় কিন্তু সেগুলো সময়মতো করতে পারেনা। 

আর কাজগুলো করতে পারলেও কাজের কোয়ালিটি ঠিক রাখতে পারেনা। ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারকে যদি আপনি লং টাইমে রান করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই কাজের ভারসাম্য বজায় রেখে চলতে হবে। 

যেন সবসময় কাজের কোয়ালিটি ঠিক থাকে এদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এতে করে একই ক্লাইন্ট দিয়ে বারবার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

৮. প্রজেক্টের স্কোপ ঠিকমতো বুঝতে না পারা:

অনেক সময় দেখা যায় যে অনেক ফ্রিল্যান্সার জব ডেসক্রিপশন না পড়েই কাজের জন্য এপ্লাই করে। ক্লাইন্ট কি রিকোয়ারমেন্ট দিয়েছে এবং কি রেজাল্ট চাচ্ছে সেদিকে লক্ষ্য রাখেনা। 

এই ভুলগুলো ছাড়াও আরো অনেক ধরনের ভুল করে থাকে। যেগুলো ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। এগুলো ছাড়াও আরো অনেক ধরনের ভুল থাকে যেমন:

  1. নিজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা সম্পর্কে অতিরঞ্জন
  2. পেশাদারী মনোভাবের অভাব
  3. মার্কেট সম্পর্কে জ্ঞানের অভাব
  4. নিজের ব্র্যান্ডিং না করা
  5. নিজের স্বাস্থ্যের যত্ন না নেওয়া
  6. শেখা বন্ধ করে দেওয়া

অবশ্যই এই ভুলগুলো এড়িয়ে চলা উচিত নিজের ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে ভালো পজিশন অর্জন করার জন্য।

নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস

নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য নিচে কিছু সংক্ষিপ্ত টিপস দেয়া হলো যা অনুসরণ করলে ভালো ফলাফল পাবেন।

১. স্পষ্ট এবং আকর্ষণীয় প্রোফাইল তৈরি করুন। আর প্রোফাইলের মধ্যে অবশ্যই নিজের স্কিল, অভিজ্ঞতা এবং পোর্টফোলিও তুলে ধরুন।

২. ভালো রেটিং এবং রিভিউ সংগ্রহ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন। প্রত্যেকটি প্রজেক্টকে সমান গুরুত্ব দেয়ার চেষ্টা করুন।

৩. প্রথমদিকে কম প্রাইস দিয়ে সার্ভিস দিন এবং পরবর্তীতে প্রাইজ বাড়ান। দক্ষতা বাড়ার সাথে সাথে প্রাইস বাড়ালে কোন সমস্যা হবে না কিন্তু প্রথমেই অনেক প্রাইজ বেশি রাখলে ক্লায়েন্ট পেতে সমস্যা হবে। 

৪. ক্লায়েন্টদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন এবং তাদের রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী কাজ করতে থাকুন।

৫. টাইম ম্যানেজমেন্ট এবং ডেডলাইন মেনে চলা খুবই জরুরি, এইজন্য টাইম ম্যানেজমেন্ট এর দিকে লক্ষ্য রাখবেন। একসাথে অনেক কাজ নিবেন না যতটুকু পারবেন ততটুকুই নিবেন।

৬. ইংরেজি ভাষায় যোগাযোগ দক্ষতা ইমপ্রুভ করার দিকে অতিরিক্ত নজর দিন।

৭. নিজেকে সব জায়গায় প্রমোট করুন এবং এর পাশাপাশি নেটওয়ার্কিং গড়ে তুলুন যেন পরবর্তীতে আপনার ব্যবসা করার সময় সুবিধা হয়। 

৮. নতুন নতুন বিষয় শিখার দিকে মনোযোগী হন এবং নিজের স্কিলকে আরো উন্নত করুন।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর

বিনামূল্যে ফ্রিল্যান্স কাজ শিখবেন?

ইউটিউব, ব্লগ এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে নিজেকে শিখতে পারেন। ফ্রিলান্সিং প্ল্যাটফর্মে নিজেকে রেজিষ্টার করে ছোট ছোট প্রজেক্ট গ্রহণ করে কাজ করতে পারেন। প্রতিটি সফল প্রজেক্ট থেকে রিভিউ সংগ্রহ করে নিজের প্রোফাইলকে শক্তিশালী করতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং করে কিভাবে আয় করা যায়?

অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রজেক্ট বা কাজ করে আয় করা যায়। যথেষ্ট প্রজেক্ট সম্পন্ন করে ভালো রেটিং পেলে বেশি আরো বেশি প্রজেক্ট পাওয়া যায়। এছাড়াও নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখান থেকে বিভিন্ন ধরনের সার্ভিস বিক্রি করেও আয় করা সম্ভব।

ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে সহজ কাজ কোনটি?

রাইটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট ফ্রিল্যান্সিং এর কিছু সবচেয়ে সহজ কাজের মধ্যে পড়ে। এগুলো শিখতে খুব কম সময় লাগে এবং দক্ষতা অর্জনের পর দ্রুত কাজের ট্রেন্ড ধরে রাখা সম্ভব। গ্রাফিক্স ডিজাইনের ক্ষেত্রে কোন ডিজাইন সফ্টওয়্যার ব্যবহার করা লাগে সেটা শিখতে হবে।

ফ্রিল্যান্সিং শিখতে হলে কি করতে হবে?

ফ্রিল্যান্সিং শিখতে হলে প্রথমে সঠিক স্কিল বেছে নিতে হবে। এরপর সেই স্কিলে দক্ষতা অর্জনের জন্য অনলাইন কোর্স, ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখা উচিত। ছোট ছোট প্রজেক্ট নিয়ে প্রাথমিক অভিজ্ঞতা অর্জন করা দরকার।

Upwork এ কি ধরনের কাজ পাওয়া যায়?

Upwork এর মতো ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম থেকে রাইটিং, ওয়েব ডিজাইন, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট, ভিডিও এডিটিং, প্রোগ্রামিং, ডাটা এন্ট্রি এবং আরো অনেক ধরনের কাজ পাওয়া যায়। তবে নিজের দক্ষতার উপর ভিত্তি করে সঠিক কাজ বেছে নিতে হবে।

ফ্রিল্যান্সারদের জন্য দরকারী সরঞ্জামগুলো কি কি?

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির মধ্যে রয়েছে- কম্পিউটার বা ল্যাপটপ, ইন্টারনেট সংযোগ, স্কিল সেট, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম অ্যাক্সেস, প্রয়োজনীয় সফ্টওয়্যার।

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ধৈর্য গুরুত্বপূর্ণ কেন?

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ধৈর্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ এতে সফলতা আসার জন্য সময় লাগে। শুরুতে খুব বেশি কাজ পাওয়া যায় না, তবে ধৈর্য ধরে থাকলে পরবর্তীতে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

ক্লায়েন্ট খুঁজে পাওয়ার টিপস

ক্লায়েন্ট খুঁজে পাওয়ার জন্য অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা যেতে পারে। নিজের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেও ক্লায়েন্ট খোঁজা যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় উপস্থিত থাকা এবং নিজের কাজের নমুনা তুলে ধরা গুরুত্বপূর্ণ।

উপসংহার

বর্তমান সময়ে সাধারণ চাকরির পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং এর চাহিদা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের দিনে দিনে ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা পূর্বে তুলনায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

তবে ফ্রিল্যান্সিং করার পূর্বে ফ্রিল্যান্সিং এর বেসিক জিনিসগুলো ক্লিয়ার করা খুবই জরুরী। ফ্রিল্যান্সিং এর বেসিক যদি আপনার ক্লিয়ার হয় সেক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং করা আপনার জন্য তুলনামূলক সহজ হবে। 

এছাড়াও ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে একটি ক্যারিয়ার গঠন করার জন্য অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কে ধারণা রাখতে হয়। 

আপনারা যারা ফ্রিল্যান্সিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে চান তারা অবশ্যই সম্পূর্ণ বিষয়গুলো জেনে তারপর ফ্রিল্যান্সিংয়ে যুক্ত হবেন। 

তাহলে আপনার সফলতার হার বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

আর ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বেসিক ধারণাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমরা আর্টিকেলের মধ্যে বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং এর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। 

আমরা আরো আলোচনা করেছি ফ্রিল্যান্সিং কি, কত প্রকার, ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা ও অসুবিধা, ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবেন, ফ্রিল্যান্সিং করতে কোন কোন বিষয়ে জানতে হয়। 

এছাড়াও আরো অনেক সহায়ক বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছে আর্টিকেলের মধ্যে। এছাড়া ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে আমাদের ওয়েবসাইটে আরো কয়েকটি আর্টিকেল রয়েছে যেগুলো আপনি চাইলে পড়ে নিতে পারেন। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url