ইউটিউবের ভবিষ্যৎ কী? ভবিষ্যতে ইউটিউবের বিকল্প আসতে পারে কি?

 

ইউটিউবের ভবিষ্যৎ কী? ভবিষ্যতে ইউটিউবের বিকল্প আসতে পারে কি?
বর্তমানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর উত্থানের পর হতে অনলাইনের সমস্ত কাজের একটি ভবিষ্যৎ অগোছালো হয়ে গিয়েছে। এর পাশাপাশি তৈরি হয়েছে ব্যাপক কম্পিটিশন। এখন আপনাদের মধ্যে যারা ইউটিউবে রয়েছেন তাদের অনেক জনের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে, ইউটিউব ও ইউটিউবারদের ভবিষ্যৎ কেমন? 

আসলে এই প্রশ্নটা সমস্ত ইউটিউবার দের মধ্যে একটি কমন প্রশ্ন। বর্তমানে ইউটিউব আগের তুলনায় আরো কঠিন হচ্ছে এবং তারা নানা ধরনের গাইডলাইন তৈরি করতেছে। যার কারণে অনেক ইউটিউবাররা আগের মত আর সহজেই  সফল হতে পারতেছে না। এই পর্যায়ে এসে এখন আমাদের ইউটিউব আবার ভাবতে বাধ্য করেছে যে ইউটিউবারদের ভবিষ্যৎ কেমন

এজন্য আজকের এই আর্টিকেলে আমি বিস্তারিত হবে জানানোর চেষ্টা করব যে ইউটিউবাররা কি ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে এবং ইউটিউব ও ইউটিউবারদের ভবিষ্যৎ কেমন? আশা করি সমস্ত প্রকার তথ্য এবং রিসার্চ পেয়ে যাবেন তখন আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন যে ইউটিউবিং করা আপনার জন্য উপযুক্ত কিনা এবং ইউটিউবারদের ভবিষ্যৎ কি রকম। 

তাহলে চলুন অতিরিক্ত কথা না বলেই আমরা জেনে নেই আগামী বছরগুলোতে ইউটিউব ও ইউটিউবারদের ভবিষ্যৎ কেমন হতে পারে?

ইউটিউব ও ইউটিউবারদের বর্ধমান অবস্থা

আমরা সবাই জানি যে ইউটিউব গুগলের একটি সাব ব্রান্ড। যে যত কথাই বলুক না কেন youtube এর ভবিষ্যৎ সব সময় উজ্জ্বল এবং এটা কখনোই শেষ হওয়ার মতো বর্তমানে অবস্থা নেই। বর্তমানে ইউটিউবে নিয়মিত ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ২৯০ কোটি। 

২৯০ কোটি মানুষ যখন নিয়মিত একটি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে তখন বুঝতে হবে যে সে প্লাটফর্ম এর ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। ইউটিউব তাদের নতুন নতুন ফিচার ও নতুন নতুন সুবিধা নিয়ে আসতেছে। যেন খুব সহজেই ইউটিউব ব্যবহার করতে পারে এবং সেখানে সক্রিয় থাকতে পারে। কিন্তু আমরা যদি বর্তমানে ইউটিউবের সমসাময়িক আপডেট গুলো লক্ষ্য করি।  

সেক্ষেত্রে একটি জিনিস আমাদের কাছে ক্লিয়ার হতে পারি যে ইউটিউব কিন্তু আগের মত আর নরম প্রকৃতির নেই। এখন ইউটিউব নতুন নতুন কঠোর এবং শক্তিশালী গাইডলাইন তৈরি করতেছে। এটা ইউজারদের জন্য সুবিধা জনক হলেও যারা ইউটিউবার রয়েছে তাদের জন্য নানা ধরনের সমস্যা তৈরি করতেছে। ইউটিউবের নতুন নতুন আপডেটের কারণে অনেক নতুন ইউটিউবাররা আর আগের মত নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারতেছে না। 

এই ক্ষেত্রে একটি ভিডিওকে ভাইরাল করা অথবা এসইও করার জন্য আগের তুলনায় বেশি পরিমাণে সময় এবং অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। হয়তো এই ক্ষেত্রে নতুন ইউটিউবারদের একটু সমস্যা হতে পারে কিন্তু সঠিকভাবে কাজ চালিয়ে গেলে এবং নিয়মিত ভিডিও আপলোড করতে পারলে অবশ্যই তাদের ভবিষ্যতে অনেক উজ্জ্বল হতে পারে। 

যেহেতু youtube নতুন নতুন আপডেট নিয়ে আসতেছে এবং তাদের অ্যালগরিদম চেঞ্জ করতেছে। সেহেতু সব সময় ইউটিউবারদের কে আপডেট ও অ্যালগরিদম এর সাথে মানিয়ে চলতে হবে। এর পাশাপাশি ইউটিউব তাদের মনিটাইজ করার জন্য অনেকগুলো অপশন নিয়ে আসতেছে যা আরও ইউটিউবারদের জন্য সফলতা অর্জনের সহায়তা করবে। 

মোট এক কথায় উত্তর দিতে গেলে ইউটিউব এর ভবিষ্যৎ আগের তুলনায় আরো ভবিষ্যতে উন্নত হবে কিন্তু এর পাশাপাশি অনেক ধরনের কঠোর গাইডলাইন আসতে পারে।

ইউটিউব-কে কি ফুল-টাইম ক্যারিয়ার হিসেবে নেওয়া যেতে পারে?

আপনাদের মধ্যে কেউ যদি ইউটিউবকে ফুল টাইম কে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে চান সেক্ষেত্রে এর কিছু সুবিধা অসুবিধা উভয় রয়েছে। কিন্তু আপনি যদি অসুবিধা গুলোকে অভারকাম করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে অনেক ধরনের গাইড লাইন মেনে চলতে হবে।।

 যেহেতু বর্তমানে অনলাইন ভিত্তিক বিষয়গুলোকে আমরা বেশি প্রাধান্য দিয়ে কাজ করতেছি সেক্ষেত্রের ইউটিউবে অনলাইন থেকে আয় করার একটি অন্যতম উপায় হতে পারে। কিন্তু এই উপায়কে কি সরাসরি ফুলটাইম ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নাকি আসলেই যুক্তিসঙ্গত হবে কিনা সেটা অনেকের মনে প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে। 

সবার জীবনে ই ক্যারিয়ার গঠন করার একটি ইচ্ছা রয়েছে অনলাইন কে কেন্দ্র করে। কিন্তু প্রায় ৯০ শতাংশ ব্যক্তির এটি শুধুমাত্র একটি আশা মধ্যেই থেকে যায়। অনলাইন পেশায় ফুল টাইম ক্যারিয়ার গড়ে তোলা একটি তুলনামূলক কঠিন কাজ। 

২০২৪ সালে আপনি যদি ইউটিউবকে ফুল টাইম ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে চান সেক্ষেত্রে এটা আমার মতে এটি অবশ্যই ভালো হবে তবে এখানে কিছু সমস্যা থেকেই যায়। ইউটিউব কে পেশা হিসেবে বেছে নিলেও এর পাশাপাশি আপনাকে অনলাইন থেকে আয়ের করার আরো অনেকগুলো পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। 

সহজ ভাষায় বলতে গেলে শুধুমাত্র ইউটিউবের উপর ডিপেন্ড না করে youtube এর পাশাপাশি কিছু অপশন হাতে রেখে দিতে হবে। যেগুলো থেকেও ক্যারিয়ারের একটি উল্লেখযোগ্য সুবিধাকে পেতে পারেন। আপনি ইউটিউবিং এর পাশাপাশি ব্লগিং, এসইও কিংবা ছোট ছোট এই রিলেটেড কাজগুলো করতে পারেন। এর পাশাপাশি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা যেতে পারে। 

এছাড়াও আপনাকে রিসার্চ এবং ধৈর্যের ব্যাপারে সবসময় এগিয়ে থাকতে হবে। কখনোই হাল ছাড়া যাবেনা কারণ একবার আপনি হাল ছেড়ে দিলে তখন আর কখনোই আপনার দ্বারা ভালো কিছু করা সম্ভব হবে না। বর্তমানে যেহেতু কম্পিটিশন অর্থাৎ প্রতিযোগিতা আগে তুলনায় অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে সে ক্ষেত্রে আপনাকে আরো ইউনিক বিষয় নিয়ে রিসার্চ করতে হবে। 

এমন কিছু তথ্য এবং কনটেন্ট নিয়ে কাজ করতে হবে যেগুলো সব ব্যক্তিই পছন্দ করে কিংবা এতে কোন নেগেটিভ দিক কাজ না করে। নতুন নতুন টেকনোলজির সাথে নিজেকে মানিয়ে চলতে হবে এবং নতুন নতুন আপডেটের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। মূলত এই ধরনের কাজগুলো আপনি যদি করতে পারেন এবং আপনার প্রচন্ড পরিমাণে আত্মবিশ্বাস থাকলে আপনি এই সেক্টরের সফল হতে পারেন। 

আর তাহলেই আপনি ইউটিউবিংকে আপনার ফুল টাইম ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে পারেন। কিন্তু অবশ্যই মনে রাখবেন youtube এর পাশাপাশি অন্যান্য ছোটখাট কিছু অপশন রেখে দেয়ার। কারণ ভবিষ্যতে অনলাইনে যে কোন সময় যেকোনো কিছু হতে পারে এর জন্য বিকল্প রেখে দেয়া অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। 

ইউটিউবের ভবিষ্যৎ কেমন হতে পারে?

বর্তমান পরিস্থিতি হিসেবে বিশেষজ্ঞরা মনে করতেছে ইউটিউবের ভবিষ্যৎ বেশ উজ্জ্বল। পূর্ব তুলনায় বর্তমানে আরো ইন্টারনেটের ব্যাপক বিস্তারের ফলে বিশ্বের প্রায় সকল মানুষের কাছেই এখন ইউটিউব অ্যাক্সেস রয়েছে। মানুষ তাদের যেকোনো প্রয়োজনে ইউটিউব এর ব্যবহার করতেছে। যেকোনো জিনিস জানার জন্য, শিখার জন্য কিংবা তৈরি করার জন্য ইউটিউবের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। 

এছাড়াও, কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের মধ্যেও কাজ করার জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম গুলো তুলনায় ইউটিউব যথেষ্ট পরিমাণে প্রাইভেসি এবং প্রাসঙ্গিকতা কে প্রাধান্য দেয়। যার কারণে youtube এর অডিয়েন্স পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও ইনকামের উপায় থাকার কারণে অনেকজন এখানে তাদের কাজ করার ইন্সপারেশন পায়। উপরের এই সমস্ত কারণে ইউটিউবের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ভবিষ্যতে আরও বাড়তে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ইউটিউবারদের ভবিষ্যৎ কেমন হতে পারে?

ইউটিউব বর্তমানে ব্যাপক একটি ভূমিকা পালন করতেছে জ্ঞান অর্জন এবং জ্ঞান শেয়ারের মাধ্যম হিসেবে। ইউটিউব এর মাধ্যমে এখন যে কেউ তার প্রতিভা ও জ্ঞান কে কাজে লাগিয়ে সবার সামনে পরিচিত হতে পারছে। এছাড়াও ইউটিউব থেকে ইনকাম করার সুবিধাতে অনেকজন ইউটিউবের দিকে পূর্বের তুলনায় বেশি ঝুঁকছে। মূলত এইসব কারণেই আশা করা হচ্ছে যে ইউটিউবারদের ভবিষ্যৎ হয়তো পূর্বের তুলনায় আরো উন্নত হতে পারে।  

ইউটিউবে নতুন প্রযুক্তির প্রভাব কেমন হবে?

বর্তমান বিশ্বে নতুন নতুন প্রযুক্তি নিয়মিতই উদ্ভাবন হচ্ছে। অন্যান্য সেক্টর গুলোতে এই প্রযুক্তি গুলো অনেক প্রভাব রাখলে ও ইউটিউবে এর প্রভাব তুলনামূলক খুবই কম। নতুন প্রযুক্তির ইফেক্ট কে ইউটিউবের ভবিষ্যৎকে আরও ভালো করবে বলে মনে হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অর্থাৎ (AI) ব্যবহার করে কনটেন্ট creator রা ইউটিউব ভিডিও গুলোকে আরও ইফেক্টিভ এবং ইনফরমেটিভ বানাচ্ছে। পূর্বে হয়তো কন্টেন্ট ক্রিকেটাররা একটি সাধারণ তথ্য এবং কিছু স্বাভাবিক রিসোর্স নিয়ে কাজ করতো, কিন্তু এখন যখন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিভিন্ন ধরনের তথ্য এবং রিসোর্স প্রদান করতেছে। তখন আরো নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে ইউটিউবাররা আমাদেরকে জানাতে পারতেছে। 

এছাড়াও, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (VR) এবং আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স (AI) ব্যবহার করে নতুন ধরনের ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করা সম্ভব হবে, যা আমাদেরকে আরো নতুন জিনিস শেখাতে এবং নতুন ভাবে উপস্থাপন করাতে ভালো একটি ভূমিকা রাখবে।

ভবিষ্যতে ইউটিউবের বিকল্প আসতে পারে কি?

উত্তরটা অনেক কমপ্লিকেটিভ তবে উত্তর হল হ্যাঁ, ভবিষ্যতে ইউটিউবের বিকল্প আসতে পারে। বর্তমান সময়ে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্মের মধ্যে youtube সবার উপরে এবং এককভাবে আধিপত্য বজায় রেখেছে। আরো সহজ বলতে গেলে তারা ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম জগতে এককভাবে একচেটিয়া অবস্থান দখল করে রেখেছে। 

তবে বর্তমানে যেহেতু নতুন নতুন প্রযুক্তি ইনোভেট হচ্ছে এবং নতুন নতুন কম্পিটিশন তৈরি হচ্ছে সেক্ষেত্রে ইউটিউবের বিকল্প আসতেও পারে। বিশেষ করে টেকনোলজিক্যাল ডেভেলপমেন্ট, মার্কেট কভারেজ এবং ইউজার এক্সপেরিয়েন্স এর মতো বিভিন্ন কারণ রয়েছে। যার কারণে ইউটিউবের বিকল্প হয়তো ভবিষ্যতে আসতে পারে।

তবে এই প্রশ্ন যদি দুই বছর আগে করা হতো তাহলে সেক্ষেত্রে আলাদা উত্তর আসার সম্ভাবনা থাকতো। কিন্তু আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিপ্লবের পর এখন বোঝা যাচ্ছে যে ইউটিউব এর বিকল্প যে কোন সময় আসতেও পারে। কেননা বিভিন্ন ধরনের চ্যাটবট যেমন চ্যাট জিপিটি, ক্লাউডে সহ বিভিন্ন ধরনের চ্যাট বটের কারণে গুগলকে পর্যন্ত হিমশিম খেতে হচ্ছে এবং তাদেরকে বিভিন্নভাবে তাদের বিকল্প নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। সেহেতু ইউটিউবের বিকল্প আসতে পারে সেটা অসম্ভব কোন বিষয় নয়।

ইউটিউবের বিকল্প কে নিয়ে আসতে পারে?

বিভিন্ন দিক থেকে ইউটিউবের বিকল্প আসতে পারে সেটি নির্দিষ্ট একটি দিক উল্লেখ করা খুব একটা গ্রহণযোগ্য হবে না। বিভিন্ন দিক থেকে ইউটিউব এর বিকল্প আসতে পারে সেটা সবারই জানা আছে। এর মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক হতে পারে যে একটি প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান ইউটিউবের বিকল্প তৈরীর প্রতিযোগিতায় নামতে পারে। উদাহরণস্বরূপ; ফেসবুক, মাইক্রোসফট, অ্যামাজন বা অ্যাপল ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান ইউটিউবের বিকল্প নিয়ে আসতে পারে। তবে এই মুহূর্তে ফেসবুকে প্রতিযোগিতায় সামান্য হলেও এগিয়ে রয়েছে। 

কেননা তারা ফেসবুক ওয়াচ নামে তাদের একটি প্ল্যাটফর্ম ডেভেলপমেন্টের কাজে লেগে আছে। আবার এমনও হতে পারে নতুন কোন একটি প্রতিষ্ঠান ইউটিউব কে টিক্কা দেয়ার জন্য তাদের নতুন একটি ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম তৈরি করতে পারে। তবে এই সমস্ত বিষয়ে এতটাও সহজ না। কেননা ইউটিউব একটি বড় অবস্থান দখল করে রেখেছে যা থেকে তাকে বের করা খুবই মুশকিল তবে অসম্ভব নয়।

বর্তমানে ইউটিউবের বিকল্প

আপনি হয়তো জানেন না কিন্তু বর্তমান সময়েও ইউটিউবের অনেকগুলো বিকল্প রয়েছে তবে আমাদের মাঝে সেগুলো হোক একটা জনপ্রিয় নয়। তবে বর্তমান বিশ্বে অনেকগুলো এরকম ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। তবে এইসব বিকল্প এর নাম হয়তো অনেক জন শুনে থাকবেন আবার অনেক জন আজ প্রথম শুনবেন।  

বর্তমানে ইউটিউবের কিছু বিকল্প:

  • ভিমিও
  • ডেইলিমোশন
  • প্লেইয়ার
  • দ্য ইন্টারনেট আর্কাইভ
  • টুইচ

এই প্ল্যাটফর্মগুলো ইউটিউবের মতোই ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে পরিচিত। এছাড়াও প্রত্যেকটি ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মের নির্দিষ্ট কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন, ভিমিও হাই কোয়ালিটি সম্পূর্ণ ভিডিও শেয়ারিংয়ের জন্য সবার কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত। ডেইলিমোশন বড় সাইজের ভিডিও অর্থাৎ মুভি রিলেটেড কনটেন্টের জন্য সবথেকে বেশি পরিচিত। তবে এখানে কপিরাইট বিষয়টাকে অনেক অগ্রাহ্য করা হয়। 

প্লেইয়ার আমার জানামতে সবথেকে ইউজার ফ্রেন্ডলি এক্সপেরিয়েন্স প্রদান করে এবং তাদের ভিডিও কোয়ালিটি তুলনামূলক ভালো। দ্য ইন্টারনেট আর্কাইভ নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে যে ঐতিহাসিক ভিডিও গুলোর জন্য এই ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম সব থেকে জনপ্রিয়। এখানে যত ঐতিহাসিক ভিডিও রয়েছে সবগুলোই প্রায় পেয়ে যাবেন। আর সব শেষে, টুইচ লাইভ স্ট্রিমিংয়ের পুরো বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। বিশেষ করে গেমারদের জন্য সবথেকে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম হিসেবে এটাকে ধরা হয়।

কিভাবে youtube চ্যানেল তাড়াতাড়ি বড় করবো?

 কিভাবে আপনার youtube চ্যানেল কে তাড়াতাড়ি বড় করবেন সেটা জানা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বর্তমানে সব ব্যক্তি চায় তাদের একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে এবং সেখানে তাদের নিত্যনতুন তথ্য এবং ভিডিও প্রচার করতে। কিন্তু সবাই ইউটিউব চ্যানেল খুব তাড়াতাড়ি বড় করতে পারে না এবং খুব একটা ভাইরাল হতে পারে না। 

একটি ইউটিউব চ্যানেলকে অনেক বড় করার জন্য অনেক ধৈর্য ধরে কাজ করতে হয়। এর পাশাপাশি সঠিক প্লানিং ও কাজের এফিশিয়েন্সি সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা রাখতে হবে। নতুন নতুন মার্কেটিং কৌশল অবলম্বন করতে হবে নিজের ভিডিওকে প্রচার করার জন্য। ইউটিউবের দ্রুত সময়ের মধ্যেই সাবস্ক্রাইবার এর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। 

সাবস্ক্রাইবার বৃদ্ধির পাশাপাশি যেন ইউটিউব চ্যানেলের ইম্প্রেশন এবং ভিউ বেশি হয় সেদিকেও সব সময় লক্ষ্য রাখতে হবে। আমি ইতিমধ্যে কিভাবে দ্রুত সময়ের মধ্যে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার সম্পূর্ণ করা যায় সেই বিষয়ে একটি আর্টিকেল লিখে রেখেছি। আপনি অবশ্যই সেই আর্টিকেলটা পড়ে নিবেন। কারণ আপনি যখন এই আর্টিকেলটা পড়বেন তখন আপনি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে কিভাবে আপনার youtube চ্যানেলের জন্য সাবস্ক্রাইবার বৃদ্ধি করতে হয় সেটা ক্লিয়ার করে নিতে পারবেন। 

এর পাশাপাশি আমি আরেকটি আর্টিকেল লিখেছিলাম যে কিভাবে অল্প সময়ের মধ্যে youtube ভিডিওকে ভাইরাল করা যায়। আপনি অবশ্যই এই আর্টিকেল কেও পড়ে নিবেন। তাহলে আপনার সমস্ত বিষয়ে ক্লিয়ার করে নিতে পারবেন। এর পাশাপাশি নানা ধরনের মার্কেটিং কৌশল অবলম্বন করা শিখতে হবে। এতে করে আপনি নতুন নতুন সাবস্ক্রাইবার এবং ভিউ পাবেন। যা আপনার ক্যারিয়ারকে আরো উন্নত এবং সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করবে। 

ইউটিউবারদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস

আপনি যেহেতু বর্তমান সময়ের ইউটিউবিং শুরু করতে চাচ্ছেন সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে সব বিষয়ে দূরদর্শিতার প্রমাণ দিতে হবে। Youtube এবং youtuber এর ভবিষ্যৎ কেমন সেই বিষয়ে সার্বিক ধারণা রাখতে হবে। আমি এই পর্যায়ে কিছু নতুন ইউটিউবারদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিব যেগুলো হল:

১. নিয়মিত কাজ চালিয়ে যান। 

২. নির্দিষ্ট একটি সিডিউল অনুযায়ী ভিডিও পাবলিশ করুন।

৩. ভিডিওগুলোকে হাই কোয়ালিটি সম্পূর্ণ করুন।

৪. ভিডিওর মাঝে নতুন নতুন ইনফরমেশন এবং তক্তবহুল আলোচনা করা উচিত।

৫. Youtube চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বৃদ্ধির দিকে নজর দেয়া বিশেষভাবে প্রয়োজন।

৬. ভিডিওকে সবার সামনে পৌঁছে দেয়ার জন্য নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করা।

৭. ইউটিউবের নতুন নতুন আপডেট গুলো সম্পর্কে সবসময় তথ্য রাখা। 

৮. ইউটিউব এর অ্যালগরিদম অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করা।

৯. নিত্য নতুন মার্কেটিং কৌশল সম্পর্কে জ্ঞান রাখা এবং যেই কৌশলটা কাজ করতেছে সেই কৌশল নিয়ে নিয়মিত কাজ করা।।

১০. ভিডিও পাবলিশ করার সময় সম্পূর্ণভাবে অপটিমাইজ করার চেষ্টা করবেন।

১১. আকর্ষণীয় টাইটেল থামবে এবং ডিসক্রিপশন লেখা যেন অডিয়েন্স কে আপনার ভিডিওর দিকে আকৃষ্ট হয়।

১২. নিয়মিত নতুন নতুন তথ্য কালেক্ট করা এবং সেগুলোকে নিজের ভিডিওর মধ্যে ইউটিলাইজ করা। 

১৩. কম্পিটিটারদের দিকে সবসময় লক্ষ্য রাখা ও তাদের থেকে ভালো কন্টেন্ট প্রদান করা।

১৪. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ইউটিউব ভিডিও শেয়ার করা।

১৫. রিলেটেড ইউটিউব চ্যানেলের ক্রিয়েটর এর সাথে ভালো সম্পর্ক রাখা।

১৬. অতিরিক্ত সময় ব্যয় করবেন না।

১৭. Youtube SEO এবং কীওয়ার্ড রিসার্চ সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা রাখা।

উপসংহার

বর্তমান সময়ে একটি কমন প্রশ্ন হয়ে গিয়েছে যে ইউটিউব ও ইউটিউবারদের ভবিষ্যৎ কেমন? অনেক জনের মতে অনেক ধরনের চিন্তাভাবনা আসতে পারে। কিন্তু সার্বিক দিক বিবেচনা করলে দেখা যায় যে ইউটিউবার এবং youtube এর ভবিষ্যৎ বরাবরের মতই উজ্জ্বল। 

কিন্তু সঠিক নিয়ম অনুসারে কাজ করতে না পারলে এবং আপডেটের সাথে তাল মিলিয়ে না চলতে পারলে সে ক্ষেত্রে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। যেহেতু youtube তাদের অ্যালগরিদম প্রতিনিয়ত চেঞ্জ করতেছে সে ক্ষেত্রে সব সময় অ্যালগরিদম অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করতে হবে। নতুন নতুন বিষয়ের উপর জ্ঞান অর্জন করতে হবে এবং সেগুলোকে বাস্তব জীবনে প্রতিফলিত করতে হবে। 

বর্তমান সময়ে ইউটিউব কে একটি ফুলটাইম ক্যারিয়ার হিসেবে নেয়া সম্ভব যদি সঠিকভাবে কাজ করা যায় ও সব বিষয়ে ভালোভাবে জ্ঞান থাকে। অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে যেন ভবিষ্যতে যে জিনিস গুলো চেঞ্জ হচ্ছে সে জিনিসগুলোকে আরো বেশি করে শেখা। যেহেতু এখন আরো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ফলে এই সেক্টর অনেকটাই আগের তুলনায় ধ্বস নেমেছে সে ক্ষেত্রে এখানেও একটু সতর্ক থাকা উচিত। 

তো মনে হয় আজকের এই আর্টিকেল অর্থাৎ ইউটিউব ও ইউটিউবারদের ভবিষ্যৎ কেমন এ বিষয়ে আপনি একটি সার্বিক ধারণা পেয়ে গিয়েছেন। এর পাশাপাশি আপনার যদি কোন প্রকার প্রশ্ন কিংবা মতামত থেকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট সেকশনে জানাতে পারেন। আমরা যথাযথ উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব দ্রুত সময়ের মধ্যেই। তো আজকে এই পর্যন্তই এই আর্টিকেল সবাইকে আসসালামু আলাইকুম।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url