পেওনিয়ার কি? পেওনিয়ারে একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৪

 আমরা যারা অনলাইনে কাজ করি কিংবা অনলাইন ব্যবসার সাথে সম্পর্কিত তাদের কাছে পেওনিয়ার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পেমেন্ট সিস্টেম। বিশেষ করে পেওনিয়ার  এর ব্যবহার বাংলাদেশে ব্যাপক আকারে করা হয়।

যেহেতু বাংলাদেশে পেপাল ব্যবহার করা যায় না সেজন্য পেওনিয়ার আমাদের কাছে সব থেকে ব্যবহারযোগ্য ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট সিস্টেম। Yahoo Finance এর প্রতিবেদন অনুসারে অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেমগুলোর মধ্যে পেপালের পরেই জনপ্রিয়তার দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পেওনিয়ার। পেওনিয়ার কি? পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম ও পেওনিয়ার থেকে বিকাশ

পেওনিয়ার অনেক ধরনের সুবিধা প্রদান করে থাকে যা আমাদের দেশের অনলাইন মার্কেটার এবং ফ্রিল্যান্সারদের বিশেষ করে প্রয়োজন হয়। এছাড়াও এর কিছু অসুবিধাও রয়েছে। তবে বাংলাদেশে পেপাল এবং অন্যান্য কয়েকটি পেমেন্ট গেটওয়ে অপশন না থাকার কারণে আর একটি অপরিহার্য পেমেন্টের মতোই।

এজন্য আজকের এই আর্টিকেলে আমরা পেওনিয়ার কি, পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম, পেওনিয়ার থেকে বিকাশ, পেওনিয়ার এর বিকল্প এবং পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। 

তাহলে চলুন অতিরিক্ত কথা বাদ দিয়ে আজকের আর্টিকেল শুরু করি।

পেওনিয়ার কি? (Payoneer ki)

Payoneer হল একটি International payment platform যার মাধ্যমে আপনারা খুব সহজেই ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট গ্রহণ কিংবা পেমেন্ট সেন্ড করতে পারবেন। 

ফ্রিল্যান্সার, ছোট ব্যবসা সহজে কোন বিজনেসের পেমেন্ট এর জন্য মূলত এই পেমেন্ট সিস্টেমটি ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে এটি বিশ্বের দ্বিতীয় তম গ্লোবাল পেমেন্ট সিস্টেম যা প্রায় ২০০টির অধিক দেশে খুব সহজে ব্যবহার করা যায়। 

বর্তমানে পিওনিয়ার এর ৪ মিলিয়ন অর্থাৎ ৪০ লক্ষের অধিক একটিভ ব্যবহারকারী রয়েছে। ২০২২ সালের প্রথম দিকে তথ্য অনুসারে তারা ১০ বিলিয়ন ডলারের ওপর পেমেন্ট লেনদেন করেছে। 

আর এই পেমেন্ট সিস্টেম টা সবথেকে বেশি ব্যবহার করা হয় যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ভারত, বাংলাদেশ, ফিলিপিনস, ইন্দোনেশিয়া এবং পাকিস্তানের মতো দেশগুলো। 

Payoneer মূলত ২০০৫ সালে এই Yuval Tal এবং Michael Shpigler দ্বারা তৈরি হয়েছিল। বর্তমানে এর হেডকোয়াটার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটিতে অবস্থিত তাছাড়া এরা বর্তমানে বিশ্ব এর ৮টির অধিক বেশি তাদের অফিস রয়েছে । 

এই কোম্পানিতে অনেক বড় বড় বিলিয়নিয়ার এবং ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ রয়েছে যার কারণে এটা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সবার কাছে পরিচিতি এবং বিশ্বাসযোগ্যতা লাভ করেছে। 

এছাড়াও পেওনিয়ার অন্যান্য পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম গুলো থেকে কম ট্রানজেকশন ফি। যার ফলে ইউজার রা খুব সহজেই অল্প ট্রানজেকশন ফি দিয়ে টাকা লেনদেন করতে পারে।

 এই কারণেও বর্তমানে পেওনিয়ার এর ব্যবহারকারী সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম  

বাংলাদেশে অবস্থান করে পেওনিয়ার একাউন্ট খোলা তুলনামূলক সহজ। মূলত একটি পেওনিয়ার একাউন্ট দুই হবে তৈরি করা সম্ভব। 

প্রথমত ইন্ডিভিজুয়াল অর্থাৎ ব্যক্তিগত অপরটি হল বিজনেস একাউন্ট অর্থাৎ ব্যবসা সংক্রান্ত। 

একটি ব্যক্তিগত পেওনিয়ার একাউন্ট তৈরি করার পূর্বেই আমাদেরকে কয়েকটি প্রাথমিক ডকুমেন্ট জোগাড় করে নিতে হবে। যেগুলো হল NID Card অর্থাৎ আইডেন্টিফিকেশন কার্ড এবং এর সাথে একটি বাংলাদেশ স্বীকৃত যেকোনো ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ইনফরমেশন। 

আর আপনি যদি অন্য কোন দেশের নাগরিক হয়ে থাকেন তাহলে সেই দেশের আইডেন্টি কার্ড এবং ব্যাংক একাউন্টে ডিটেলস রাখতে হবে। 

আপনি যদি বিজনেস অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে আপনার কোম্পানির জন্য ট্রেড লাইসেন্স কিংবা ট্যাক্স ইনফর্মেশন প্রয়োজন হবে, একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং এর পাশাপাশি আপনার ব্যবসা সংক্রান্ত কিছু ইনফরমেশন প্রয়োজন হবে। 

আপনি  উপরের দুই ভাবেই একাউন্ট তৈরি করতে পারেন আপনার প্রয়োজন অনুসারে। মূল কথা হচ্ছে আপনার যদি ইনফরমেশন এবং ব্যাংক একাউন্ট থাকলে তাহলে আপনি খুব সহজেই পেওনিয়ার একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।

আপনি চাইলে আপনার মোবাইল ফোন ব্যবহার করেও খুব সহজে পেওনিয়ার একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন। নিচের সমস্ত গাইডলাইন মেনে। আপনারা চাইলে ল্যাপটপ কিংবা পিসি দিয়েও খুব সহজেই একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন। 

১. প্রথমে আপনাকে NID ইনফরমেশন এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জোগাড় করে নিতে হবে এবং বিজনেস একাউন্ট করতে হলে আপনার ট্রেড লাইসেন্স কালেক্ট করতে হবে।

  আপনার সমস্ত ডকুমেন্ট রেডি হয়ে গেলে পরবর্তীতে আপনাকে প্রথমে চলে আসতে হবে পেওনিয়ার এর ওয়েবসাইটে। এর জন্য আপনি চাইলে এই google এ সরাসরি তাদের ওয়েব সাইটে মেইন পেজে চলে আসতে পারেন কিংবা নিচের লিংক থেকেও আপনি তাদের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারেন। 

পেওনিয়ার কি? পেওনিয়ারে একাউন্ট খোলার নিয়ম

২. একবার তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট সম্পূর্ণ লোড নিলে। আপনি হেডারের মধ্যে রেজিস্টার নামে একটি বাটনযুক্ত অপশন পাবেন। যা দ্বারা মূলত পেওনিয়ার একাউন্ট তৈরি করা হয়ে থাকে। আপনি চাইলে এই লিংকে প্রেস করেও সরাসরি তাদের রেজিস্ট্রার অপশনে নিয়ে চলে যেতে পারবেন। 

৩. পরবর্তীতে রেজিস্টার পেজ সম্পূর্ণ লোড নেওয়ার পর সেখানে আপনার বেসিক ইনফরমেশন গুলো পূরণ করে দিবেন। বেসিক ইনফরমেশন গুলো খুবই সহজ হয়। যেমন- আপনি কেন পেওনিয়ার ব্যবহার করবেন, আপনার টাকাগুলো মূলত কোথা থেকে আসবে, এক মাসে কত টাকা আসতে পারে । 

পেওনিয়ার কি? পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম ও পেওনিয়ার থেকে বিকাশ
পেওনিয়ার কি? পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম ও পেওনিয়ার থেকে বিকাশ
পেওনিয়ার কি? পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম ও পেওনিয়ার থেকে বিকাশ

উক্ত ইনফরমেশন গুলো পূরণ করে দেয়ার পর আপনি Next বাটনে ক্লিক করে দিবেন।

৪. এরপরে আপনাকে একটি নতুন পেজে নিয়ে আসবে এবং সেখানে রেজিস্টার নামে একটি অপশন থাকবে আপনি জাস্ট সেখানে ক্লিক করে দিবেন। 

পেওনিয়ার কি? পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম ও পেওনিয়ার থেকে বিকাশ

৫. পরবর্তীতে আপনি একটি নতুন পেজে চলে আসবেন এই পেজটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমে আপনাকে নির্বাচন করতে হবে আপনি ইন্ডিভিজুয়াল একাউন্ট চাচ্ছেন না বিজনেস একাউন্ট করতে চাচ্ছেন। আপনি যে ধরনের অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান সেই অপশন ক্লিক করবেন। তারপরে নিচে  নাম, ইমেল অ্যাড্রেস এবং জন্মতারিখ সঠিকভাবে দিবেন।

পেওনিয়ার কি? পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম ও পেওনিয়ার থেকে বিকাশ

এখানে আপনার আইডেন্টি কার্ড অনুযায়ী সমস্ত ইনফরমেশন দেয়ার চেষ্টা করবেন। এতে করে পরবর্তীতে আপনার একাউন্টে ভেরিফিকেশনের সময় এবং কোন প্রকার সমস্যা হলে তাড়াতাড়ি সহযোগিতা পাবেন। এই সমস্ত ইনফরমেশন দেয়ার পর পরবর্তী অর্থাৎ নেক্সট বাটনে ক্লিক করুন।

৬. এরপর আপনাকে আপনার কন্টাক্ট ইনফরমেশন সঠিকভাবে প্রদান করতে হবে। মনে রাখবেন এখানে কোন প্রকার ভুল করা যাবে না। সঠিকভাবে আপনার কন্টাক্ট ইনফরমেশন গুলো ফিলাপ পড়তে হবে। প্রথমত আপনাকে আপনার দেশ সিলেক্ট করতে হবে। এর পরবর্তীতে আপনার গ্রাম, শহর, জিপ কোড এবং অন্যান্য অ্যাড্রেস ইনফরমেশন গুলো যুক্ত করতে হবে।

পেওনিয়ার কি? পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম ও পেওনিয়ার থেকে বিকাশ
একবার ইনফরমেশন গুলো দেয়া হলে পরবর্তীতে আপনার মোবাইল নাম্বার সঠিকভাবে দিতে হবে। আপনি যে মোবাইল নাম্বার প্রদান করবেন সেই মোবাইল নাম্বারে একটি ভেরিফিকেশন কোড যাবে। সেই কোড ব্যবহার করে আপনি নেক্সট বাটনে ক্লিক করে দিবেন।

৭. নেক্সট বাটনে ক্লিক করার পর আপনাকে সিকিউরিটি সম্পর্কিত details গুলো পূরণ করতে হবে। যেমন আপনার পাসওয়ার্ড সিকিউরিটি কোশ্চেন এবং আইডেন্টিফিকেশন কার্ডের নাম্বার।

পেওনিয়ার কি? পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম ও পেওনিয়ার থেকে বিকাশ

  অবশ্যই মনে রাখবেন যে আপনার ইউজার নেম যেন আপনার ইমেল থাকে সেখানে কোন প্রকার চেঞ্জ করতে যাবেন না। ইনফরমেশন গুলো দেওয়ার পর আপনি নিচে একটি ক্যাপচা দেখতে পারবেন সেই ক্যাপচা টাকে সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।  সঠিকভাবে সবকিছু পূরণ করার পর নেক্সট বাটনে প্রেস করতে হবে।

৮. দেয়ার পর আপনি পরবর্তী পেজে চলে আসবেন যেখানে আপনাকে আপনার ব্যাংকের ডিটেলস এবং কারেন্সি প্রদান করতে হবে। আপনি প্রথমেই যে ধরনের অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চেয়েছিলেন অর্থাৎ পার্সোনাল কিংবা বিজনেস সেটা আবার লক্ষ্য করে নিবেন এবং সেখান থেকে আপনার প্রধান কারেন্সি সিলেক্ট করতে হবে। এর পরবর্তীতে আপনাকে আপনার ব্যাংকের ডিটেইলস যেমন ব্যাংকের নাম, একাউন্টধারির নাম এবং একাউন্টের নাম্বার প্রদান করতে হবে। এই সমস্ত ইনফরমেশন দেয়ার পর নিচে তাদের এগ্রিমেন্টের টিক মার্ক দিয়ে সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে।

পেওনিয়ার কি? পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম ও পেওনিয়ার থেকে বিকাশ

জাস্ট আপনার অ্যাকাউন্ট সাথে সাথেই ক্রিয়েট হয়ে যাবে। 
পেওনিয়ার কি? পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম ও পেওনিয়ার থেকে বিকাশ

এরপরে আপনার ইমেইলে তাদের পক্ষ থেকে অ্যাপ্রুভ হয়েছে কিনা তার একটি ইমেইল চলে যাবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের একাউন্ট করে থাকে কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে এ প্রবলেম ও দিয়ে থাকে। একবার অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে গেলে পরবর্তীতে আপনি আপনার ইনফরমেশন গুলো দিয়ে অবশ্যই আপনার একাউন্ট ভেরিফাই করে নিবেন। 

পেওনিয়ার থেকে বিকাশে টাকা আনার নিয়ম

আপনি যদি চান তাহলে আপনি, আপনার  মোবাইলের বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে  পেওনিয়ার থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।  এটা খুবই স্বল্প সময়ে এবং  খুব সহজেই পেওনিয়ার থেকে বিকাশে উইথড্র করা সম্ভব । পেওনিয়ার থেকে  টাকা উত্তোলন করার জন্য আপনাকে কিছু স্টেপ ফলো করতে হবে। 

পেওনিয়ার থেকে বিকাশে উত্তোলন করার জন্য, আপনাকে নিম্নলিখিত  ধাপ গুলো অনুসরণ করতে হবে:

১. বিকাশ অ্যাপটি খুলুন এবং আপনার বিকাশ একাউন্টে লগ ইন করুন।

২. হোম স্ক্রিনের থাকা মেনু থেকে "রেমিটেন্স" আইকনে ট্যাপ করুন।

৩. "রেমিটেন্স" থেকে "পেওনিয়ার"-অপশন এ ট্যাপ করুন।

৪. আপনার পেওনিয়ার একাউন্টের ইমেল এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে লগ ইন করুন।

৫. যদি আপনার পেওনিয়ার একাউন্টে 2-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করা থাকে, তাহলে এটি মোবাইলে আসা ভেরিফিকেশন কোড দিয়ে ভেরিফাই করুন ।

৬. ভেরিফাই হয়ে গেলে পরবর্তী পেতে আপনাকে অবশ্যই  Agree বাটনে ক্লিক করতে হবে। 

৬. তারপর আপনার পেওনিয়ার একাউন্টটি আপনার বিকাশ একাউন্টে সাকসেসফুল ভাবে লিংক হয়ে যাবে।

৭. এখন আপনারা পেওনিয়ার অ্যাকাউন্ট আপনার বিকাশের সাথে সংযুক্ত হয়ে গিয়েছে।  

৮. এখন আপনি যে বৈদেশিক মুদ্রা উইথড্র করতে চান তা সিলেক্ট করুন এবং কত পরিমান ডলার কিংবা অন্য মুদ্রা উইথড্র করতে চান সেটা লিখুন। 

৯. "Withdraw" বোতামে ট্যাপ করুন।

১০. আবার আপনার নাম্বারে পেওনিয়ার থেকে একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে সেটা লিখুন। 

ভেরিফিকেশন কোড দেয়ার সাথে সাথে আপনার পেওনিয়ার একাউন্ট থেকে আপনার বিকাশে টাকাগুলো রেমিটেন্স আকারে চলে আসবে। আর এই কাজটি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হয় এজন্য আপনাকে অতিরিক্ত সময় অপেক্ষা করতে হবে না। 

পেওনিয়ার থেকে বিকাশে উইড্র করার জন্য, আপনাকে অবশ্যই নিম্নলিখিত শর্তগুলি মাথা রেখে কাজ  করতে হবে:

  • আপনার পেওনিয়ার একাউন্টটি আপনার মোবাইল কানেক্ট রাখতে হবে থাকতে হবে।
  • একই এনআইডি কার্ড দিয়ে বিকাশ এবং পেওনিয়ার উভয়ের স্থানে ভেরিফিকেশন করা সেটা চেক করে নিতে হবে। নাহলে আপনার একাউন্টে টাকা আসবে না। 
  • আপনার পেওনিয়ার একাউন্টটি আপনার নামের সাথে থাকা একটি বৈধ ইমেল ঠিকানায় রেজিস্ট্রার থাকতে হবে।
  • আপনার পেওনিয়ার একাউন্টে পর্যাপ্ত ব্যালেন্স থাকতে হবে।

পেওনিয়ার থেকে বিকাশে উত্তোলনের জন্য, আপনাকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি প্রদান করতে হবে। আপনি যে পরিমাণে টাকা লেনদেন করবেন সেই টাকার ২ পারসেন্ট পেওনিয়ার কে চার্জ হিসাবে দিতে হবে। 

পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড কি 

পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড হল একটি ডিজিটাল পেমেন্ট কার্ড যা আপনাকে অনলাইনে এবং অফলাইন কিংবা উভয় স্থানেই পেমেন্ট করতে অনুমতি দেয়। 

মূলত এটি এখনো কার ডেবিট কার্ড। এদের দুই ধরনের কাজ রয়েছে প্রথমত ফিজিক্যাল কার্ড অপরটি ভার্চুয়াল কার্ড। 

আপনি পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড দিয়ে অনলাইনে কেনাকাটা করতে পারবেন, দোকানে কেনাকাটা করতে পারবেন এবং এমনকি ATM থেকে টাকা তুলতে পারেন। 

পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড পেতে, আপনাকে অবশ্যই একটি পেওনিয়ার অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। পেওনিয়ার অ্যাকাউন্ট তৈরি করা সম্পূর্ণ ফ্রি এবং খুব সহজ প্রক্রিয়া। 

পেওনিয়ার অ্যাকাউন্ট খুলে, যখন ১০০ ডলার লেনদেন করবেন তখন, আপনি আপনার পেওনিয়ার মাস্টার কার্ডটি অনলাইনে অর্ডার করতে পারেন। পেওনিয়ার মাস্টার কার্ডটি আপনার কাছে পৌঁছাতে ২০ থেকে ৩০ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড ব্যবহার করা খুব সহজ। 

আপনি চাইলে পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড দিয়ে ইন্টারন্যাশনাল যেকোনো পেমেন্ট করতে পারবেন। আপনি আপনার পেওনিয়ার মাস্টার কার্ডটি অনলাইনে এবং অফলাইন অথবা উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহার করতে পারবেন। 

পেওনিয়ার মাস্টার কার্ডটি সম্পূর্ণ নিরাপদ পেমেন্ট কার্ড। এছাড়াও এই মাস্টার কার্ডের সিকিউরিটি অন্যান্য কার্ডগুলো তুলে নেয় অধিক।

 কিন্তু সব থেকে বড় সমস্যা হল মাস্টার কার্ডের তারা বাৎসরিক মেইনটেনেন্স  চার্জ হিসেবে প্রায় ৩০ ডলারের মত আপনার কাছ থেকে কেটে নিবে। যেটা অনেকজনের কাছে খুবই বড় একটা অ্যামাউন্ট হতে পারে। 

পেওনিয়ার মাস্টার কার্ডের সুবিধা 

পেওনিয়ার মাস্টার কার্ডের অনেকগুলো সুবিধা রয়েছে যার মধ্যে কয়েকটি অন্যতম হলো। 

১. পেওনিয়ার প্রদত্ত কার্ডগুলো ইন্টারন্যাশনাল পর্যায়ে ব্যবহার করা যায়। যার ফলে বিশ্বের যে কোন প্রান্তের পেমেন্ট করতে পারবেন।

২. পেওনিয়ার এর মাস্টার কার্ডগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ। 

৩. পেওনিয়ারে কার্ডগুলো ব্যবহার করা খুবই সহজ । 

৪. অনলাইন থেকে যেকোনো কিনতে পারবেন পেওনিয়ার কার্ড ব্যবহার করে। 

 ৫. মাস্টার কার্ড দিয়ে বিশ্বের যেকোনো দেশে  মাস্টার কার্ড সাপোর্ট করে এমন এটিএম বুথ থেকে খুব সহজেই টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। 

পেওনিয়ার এর সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ 

 পেওনিয়ার একটি ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট সিস্টেম হওয়ায় এর অনেকগুলো সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে। যদিও সার্বিক দিক বিবেচনা করে এর অসুবিধার তুলনায় সুবিধা অনেক বেশি। 

যেহেতু বাংলাদেশে পেপাল ব্যবহার করা সম্ভব নয় এর ফলে পেওনিয়ার আমাদের অন্যতম  বিশ্বাসযোগ্য পেমেন্ট সিস্টেম। কিন্তু পেওনিয়ার পেমেন্ট সিস্টেমের সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে। চলুন তাহলে আমরা সেগুলো জেনে নেই।

পেওনিয়ারের সুবিধা

১. বিশ্বব্যাপী ব্যবহারের সুযোগ: যেহেতু পেওনিয়ার একটি ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট সিস্টেম এর জন্য আপনি তাদের স্বীকৃত কারেন্সি এবং দেশগুলো থেকে খুব সহজেই পেমেন্ট গ্রহণ এবং পেমেন্ট প্রদান করতে পারবেন।

 এই মুহূর্তে ২০০ টির অধিক দেশ এবং ১৫০ টি কারেন্সির মাধ্যমে লেনদেন করা যায় পেওনিয়ার ব্যবহার করে। বিশেষ করে আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কাজ করেন তাহলে আপনি খুব সহজেই পেওনিয়ার ব্যবহার করে আপনার পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারবেন। 

২. তুলনামূলক কম ট্রানজেকশন ফি: বর্তমানে যে ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট সিস্টেমগুলো রয়েছে সবগুলোর থেকে তুলনামূলক কম ট্রানজেকশন ফ্রি পেওনিয়ারের মধ্যে। এদের ট্রানজেকশন শুধুমাত্র ২% অর্থাৎ আপনি যদি ১০০ ডলার লেনদেন করেন তাহলে আপনার কাছ থেকে মাত্র ২ ডলার ট্রানজেকশন ফ্রি হিসেবে নিবে। 

যেখানে পেপাল তাদের বিজনেস একাউন্টে ১৫ থেকে ২৫ পার্সেন্ট পর্যন্ত নিয়ে থাকে। আপনি যদি অনলাইনে ব্যবসা কিনা ফ্রিল্যান্সিং করেন তাহলে পেওনিয়ার আপনার জন্য সেরা হতে পারে।

 ৩. মাল্টিপল কারেন্সি: আপনি চাইলে এক সময়ে একাধিক কারেন্সির মাধ্যমে আপনার লেনদেন সম্পূর্ণ করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি চাইলে আপনার ভিন্ন ভিন্ন ক্লাইন্ট কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ভিন্ন ভিন্ন কারেন্সিতে একই সময়ে লেনদেন করতে পারবেন। এর জন্য অতিরিক্ত কোন ফি প্রদান করতে হবে না।

৪. শক্তিশালী কাস্টমার সার্ভিস: আপনার যদি অনলাইনে পেওনিয়ার ব্যবহারের সময় কোন প্রকার সমস্যা কিংবা কোন বিষয় সম্পর্কে জানার থাকে তাহলে আপনি তাদের কাস্টমার সার্ভিসের সাথে কথা বলতে পারেন। তাদের কাস্টমার সার্ভিস খুব সহজেই প্রফেশনাল ভাবে সাহায্য করবে। 

৫. সহজেই একাউন্ট সেটআপ: পেওনিয়ারের অ্যাকাউন্ট সেটাপ করা খুবই সহজ। পেওনিয়ার তাদের ওয়েবসাইটকে এমন ভাবে সাজিয়েছে যেন নতুন ইউজাররাও খুব সহজেই তাদের একাউন্টগুলোকে ভালোভাবে সেট আপ করতে পারে। 

একাউন্টে যাবতীয় ইনফর্মেশন খুব সহজেই পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন এবং ব্যালেন্স ট্রান্সফার কিংবা রিসিভ এবং অন্যান্য কার্যক্রম গুলো খুব সহজেই করা যেতে পারে। 

৬. ফ্রিতে USA এর ব্যাংক একাউন্ট : পেওনিয়ার এর একাউন্ট খোলার সাথে সাথে আপনাকে একটি ইউএসএ এর ব্যাংক একাউন্টের ডিটেলস প্রদান করবে। যা ব্যবহার করে আপনি যে কোন স্থান থেকে টাকা আপনার একাউন্টে নিয়ে আসতে পারবেন। এইটি ডিটেইলস গুলো আপনি সম্পূর্ণ ফ্রিতে পাবেন। 

৬. ফ্রি মাস্টার কার্ড: আপনার যখন ১০০ ডলার আপনার একাউন্ট দিয়ে লেনদেন করবেন তখন আপনাকে তারা একটি ফ্রি মাস্টার কার্ড প্রদান করবে। যা দিয়ে আপনি অনলাইন কিংবা অফলাইন সব স্থানে পেমেন্ট করতে পারবেন। এই বিষয়ের উপরে ভালোভাবে উল্লেখ করেছি।

৭. সুরক্ষিত ট্রানজেকশন: পেওনিয়ার ব্যবহার করে আপনি খুবই সুরক্ষিতভাবে আপনার ট্রানজেকশনগুলো করতে পারবেন। আপনার একাউন্টের যাবতীয় সিকিউরিটির জন্য তারা সর্বদাই কাজ করে। 

এছাড়াও টু স্টেপ অথেন্টিকেশন বা ভেরিফিকেশন এর মতো সুবিধা রয়েছে। যার ফলে আপনার একাউন্টের কোন লেনদেন হতে গেলে আপনাকে তারা মোবাইলের এসএমএসের মাধ্যমে যাচাই করে নিতে পারবে।

এগুলো ছাড়াও আরো অনেক এদের সুবিধা রয়েছে। 

পেওনিয়ারের সমস্যা বা অসুবিধা

প্রত্যেকটি জিনিসেরই সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও থাকে যার ব্যতিক্রম নয় পেওনিয়ারও। পেওনিয়ারের কিছু অসুবিধা রয়েছে। যেগুলো নিচে দেয়া হল:

১. দীর্ঘ ভেরিফিকেশন পিরিয়ড: পেওনিয়ার ভেরিফিকেশন এবং অন্যান্য কার্যকলাপগুলো করতে অনেক দীর্ঘ সময় ক্ষেপন করে। যেটা পেওনিয়ার পেমেন্ট সিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অসুবিধা । এছাড়াও মাস্টার কার্ড রিসিভ করতে কমপক্ষে ২২ থেকে ৩০ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। যেটা অধিক সময় নষ্ট করে বলে আমি মনে করি।

২. একাউন্ট ডিলিট প্রবলেম: যদি আপনি কোন কারনে এক বছর তাদের পেওনিয়ার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার না করেন তাহলে আপনার অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দিবে তারা। ধরে নেন, আপনার একাউন্টে ১০০ ডলার ছিল কিন্তু আপনি এক বছর যাবত কোন লেনদেন করেননি।

 পেওনিয়ার ব্যবহার না করে থাকেন তাহলে আপনার এই ১০০ ডলার সহ আপনার একাউন্ট ডিলিট করে দেয়া হবে। যেটা পেওনিয়ার এর একটি অনেক বড় অসুবিধা বলে আমি মনে করি।

৩. সব স্থানে ব্যবহারযোগ্য নয়: পেওনিয়ার অনেক পপুলার হলেও বর্তমানে এর চাহিদা এবং ব্যবহার খুবই কম। আপনি যদি অনলাইনে লেনদেন করতে চান তাহলে সেখানে খুব কম স্থানে পেওনিয়ার এর অপশন পাবেন । পেপাল কে যেমন সমস্ত স্থানে ব্যবহার করা যায় কিন্তু পেওনিয়ারকে এইভাবে সমস্ত স্থান ব্যবহার করা যায় না। যেটা তাদের অন্যতম একটি বড় অসুবিধা বলে আমি মনে করি।

৪. মাস্টার কার্ড রিনিউ: প্রথম বছর মাস্টার কার্ড ফ্রিতে দিলেও পরবর্তী বছর হতে বাৎসরিক মেইনটেন্স ফি বাবদ ৩০ ডলার করে দিতে হবে।

পেওনিয়ার এর বিকল্প 

বর্তমানে অনলাইনে পেওনিয়ারের অনেকগুলো বিকল্প পাওয়া যায়।  আপনি যদি কারণে পেওনিয়ার এ সন্তুষ্ট না হতে পারেন তাহলে এর বিকল্পগুলো আপনি অবশ্যই ইউটিলাইজ করতে পারবেন।  তাহলে চলুন জেনে নেই সেরা পাঁচটি ইউনিয়নের বিকল্প সম্পর্কে ;

১. স্ক্রিল: বর্তমানে এই পেমেন্ট সিস্টেমটা অনেক দ্রুত গতিতে সবার সামনে পৌঁছে যাচ্ছে। অন্যান্য পেমেন্ট সিস্টেম গুলোর মত এখানেও অনেক ধরনের সুবিধা রয়েছে। এটি সম্পূর্ণ ফ্রিতে ব্যবহার করতে পারবেন। 

কিন্তু এখানে কোন মাস্টার কার্ড পাবেন না। আর এখানে তুলনামূলক ট্রানজেকশন ফি একটু বেশি। কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই আপনি সমস্ত সুবিধা এখানে পেয়ে যাবেন। 

২. Xoom: আমরা জানি যে পেপাল বাংলাদেশে ব্যবহার করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ কিন্তু আপনি চাইলে তাদের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান xoom ব্যবহার করে আপনার টাকা লেনদেন করতে পারবেন। 

এখানে আপনি বিজনেস রিলেটেড লেনদেন করতে পারবেন এবং ফ্রিল্যান্সিং এর টাকা গুলো সরাসরি আপনার ব্যাংক একাউন্টে নিয়ে আসতে পারবেন । 

৩. মানিগ্রাম: মানিগ্রাম ও একটি তুলনামূলক জনপ্রিয় পেমেন্ট গ্রহন এবং প্রদান করার জন্য। মানিগ্রাম ব্যবহার করে আপনি আপনার অনলাইনে ইনকাম করা টাকাগুলো খুব সহজেই আপনার ব্যাংক একাউন্টে নিয়ে আসতে পারবেন।

 এখানে অনেকগুলো সুবিধা পাবেন কিন্তু ট্রানজেকশন ফি একটু বেশি। পুরো বিশ্বব্যাপী এই পেমেন্ট   সিস্টেমটা আপনি ব্যবহার করতে পারবেন। 

৪. wise:  হয়তোবা আপনাদের মধ্যে অনেক জনের ব্যবহার করতে পারেন। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সার সহ অন্যান্য লোকাল মার্কেটার রা এই পেমেন্ট সিস্টেমটা ব্যবহার করতেছে।  এখানেও তুলনামূলক সকল প্রকার সুবিধা পেয়ে যাবেন পেওনিয়ার এবং পেপালের মতো। পুরো বেশির ব্যাপী এটা ব্যবহার করতে পারবেন। তুলনামূলক ট্রানজেকশন ফি একটু বেশি।  

৫. Stripe: স্ট্রাইপ একটি খুবই জনপ্রিয় পেমেন্ট গেটওয়ে সিস্টেম যার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই আপনার ক্লাইন্ট কিংবা বিজনেসের সরাসরি আপনার ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করতে পারবেন। এটি পশ্চিমা বিশ্বে খুবই জনপ্রিয় একটি পেমেন্ট সিস্টেম। 

আপনি যদি ইউরোপের দেশগুলোকে কেন্দ্র করে কাজ করতে চান তাহলে এই পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার উচিত। এখান থেকে আপনার আপনার ব্যাংক একাউন্টে Stripe এ উপার্জিত অর্থ নিয়ে আসতে পারবেন। 

পেওনিয়ারের ফি এবং চার্জ

নিচের দেয়া ফ্রি এবং চার্জ সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবর্তিত হতে পারে। তবে বর্তমান সময়ে অর্থাৎ ২০২৪ সাল অনুযায়ী পেওনিয়ারের ফি এবং চার্জ টেবিল আকারে উপস্থাপন করা হলো
লেনদেনের ধরন ফি
অর্থ স্থানান্তর 2% থেকে 4%
অনলাইনে কেনাকাটা 2% থেকে 4%
আন্তর্জাতিক লেনদেন 2% থেকে 4%
মাস্টার কার্ড ইস্যু ফি ২৯ ডলার
বিকাশে টাকা উত্তোলন ২%
অপ্রত্যাশিত লেনদেন ফি ৭৫ ডলার
অ্যাকাউন্ট ভেরিফিকেশন ফি ৫০ ডলার

Payoneer কত শতাংশ ট্রানজেকশন ফি নেয়? 

পেওনিয়ার তাদের প্রত্যেকটি ট্রানজেকশনের ২-৩% পর্যন্ত ট্রানজেকশন ফি নেয়। আপনি যদি বেশি পরিমাণে ট্রানজেকশন করেন তবুও ২% ট্রানজেকশন ফি হিসেবে  তারা নিবে। ধরে নেন আপনি যদি ১০০ ডলার লেনদেন করেন তাহলে তার ২% অর্থাৎ ২ ডলার পেওনিয়ার কেটে নিবে ট্রানজেকশন ফ্রি হিসেবে। 

কোথায় কোথায় পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড ব্যবহার করা যায় 

আপনি অনলাইনে সমস্ত জায়গায় পেওনিয়ারের মাস্টার কার্ড ব্যবহার করতে পারেন। যেমন;

  1. অনলাইন প্রডাক্ট ক্রয় করতে পারবেন। 
  2. অনলাইন বিল প্রদান করতে পারবেন। 
  3. ফেসবুকে এড, গুগল এড, মাইক্রোসফট এড কিংবা অন্যান্য সকল এড  প্রচারের ব্যবহার করতে পারবেন। 
  4. ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস থেকে উত্তোলন করতে পারবেন। 
  5. যেকোনো প্রকার টপআপ করতে পারবেন। 
  6. ডোমেইন এবং হোস্টিং ক্রয় করতে পারবেন। 

এছাড়া অনলাইনে সকল যাবতীয় কাজে ব্যবহার করতে পারবেন এদের মাস্টার কার্ড। 

কিছু প্রশ্নের উত্তর

পেওনিয়ার কি?

Payoneer হল একটি International payment platform যার মাধ্যমে আপনারা খুব সহজেই ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট গ্রহণ কিংবা পেমেন্ট সেন্ড করতে পারবেন।

পেওনিয়ার ব্যবহারকারীর সংখ্যা কত?

বর্তমানে পিওনিয়ার এর ৪ মিলিয়ন অর্থাৎ ৪০ লক্ষের অধিক একটিভ ব্যবহারকারী রয়েছে।

পেওনিয়ার কে তৈরি করেছিল ও কত সালে?

Payoneer মূলত ২০০৫ সালে এই Yuval Tal এবং Michael Shpigler দ্বারা তৈরি হয়েছিল।

বাংলাদেশ থেকে কি পেওনিয়ার একাউন্ট তৈরি করা যাবে?

জি অবশ্যই , বাংলাদেশ থেকে পেওনিয়ার একাউন্ট তৈরি করা সম্ভব।

উপসংহার 

যেহেতু পেপাল পেমেন্ট সিস্টেম বাংলাদেশে উপলব্ধ নয়। এজন্য আমাদের অনলাইন থেকে টাকা ইনকামের পর নিজের হাতে নিয়ে আসাটা কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট সিস্টেমগুলোর পেপালের পর এই অবস্থান পেওনিয়ারের। 

পেপালের অনেক ধরনের সুবিধা রয়েছে এর পাশাপাশি কিছু সমস্যা রয়েছে। বর্তমানে প্রায় 200 টির অধিক দেশে এবং ১৫০ টি বেশি কারেন্সিতে পেওনিয়ার ব্যবহার করে লেনদেন করা সম্ভব।  

এছাড়াও সার্বিক দিক বিবেচনা করলে দেখা যায় পেওনিয়ার অনেক ভালো একটি পেমেন্ট সিস্টেম এবং তাদের ট্রানজেকশন ফি কম এবং সিকিউরিটি অনেক হাই।

 আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদেরকে পেওনিয়ার সম্পর্কে বেসিক ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি। যদি এখনও আপনাদের কোন বিষয় জানা থাকে কিংবা কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই পাবেন সেকশনে জানাতে পারেন।  

Next Post
No Comment
Add Comment
comment url